২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
স্বাস্থ্য ভাবনা

উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য খাতই উপেক্ষিত

- সংগৃহীত

চলতি বছর বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৩০ জনের বেশি মারা গেছে (প্রথম আলো অনলাইন, ১৪ আগস্ট)। প্রতি বছর এই সময়টিতে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তবে এবার পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী, এতে আক্রান্ত সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চিকিৎসায় অবহেলা ও হয়রানি নিয়ে বিস্তর আলোচনা ও সমালোচনাও হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অন্যান্য খাতের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবুও আমরা প্রায়ই তা ভুলে যাই।

সুস্থ ও সবল স্বাস্থ্যের সাথে কর্মঠ জনশক্তি সরবরাহের বিষয়টি জড়িত। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে উৎপাদন যে ব্যাহত হবে, তা ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হয় না। স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে দক্ষ ও মানসম্মত শ্রমশক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা যখন স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের কথা ভাবি, তখন এর বিশাল অর্থনৈতিক দিকটি খতিয়ে দেখি না। অথচ স্বাস্থ্য খাতে যথাযথ বিনিয়োগ ও দূরদর্শী নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে এটি আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের যে উদ্বৃত্ত শ্রম রয়েছে, তা বিভিন্ন দেশে উন্নয়নের সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে।

অসুস্থ ব্যক্তিকে ঘরের বাইরে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার উদ্যোগ অটোম্যান সাম্রাজ্য তথা তুরস্কে প্রথম সূচনা হয়েছিল। তখন হাসপাতালে চিকিৎসা করাকে সেবার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হতো, পণ্য হিসেবে নয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যসেবা একটি অস্বাস্থ্যকর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে, যা পরিণত হয়েছে সেবা না হয়ে শোষণের পণ্যে। অহেতুক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে দিয়ে রোগীদের হয়রানি করার অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। চিকিৎসা চালানো প্রায়ই ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিষেধক অপেক্ষা প্রতিরোধ উত্তম- কথাটি আমাদের হাসপাতালগুলো যেন প্রায় ভুলেই গেছে।

আমাদের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের দিকে তাকালে দেখা যায়, এটা কোনো সুস্থ বিনিয়োগ নয়। আর্ত মানবতার সেবায় জীবন উৎসর্গ করেছেন- এমন চিকিৎসকের উদাহরণ আমাদের দেশে কম নেই। পাশাপাশি, আরেক দল চিকিৎসকের প্রসঙ্গ উঠলে তাদের নামের পাশে নানা নেতিবাচক বিশেষণ যোগ করা হয়। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে যে সুষ্ঠু বিনিয়োগ হয় না, সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। দেশে হাসপাতাল নির্মাণের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। অথচ সেই হাসপাতালে না আছে পর্যাপ্ত ডাক্তার, না আছে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসামগ্রী। হাসপাতালে ড্রাইভারবিহীন অ্যাম্বুলেন্স ও অ্যাম্বুলেন্সবিহীন ড্রাইভার খুবই সাধারণ ঘটনা। মোট কথা, আমাদের জাতীয় দিকনির্দেশনায় যুগোপযোগী স্বাস্থ্য পরিকল্পনার অভাব প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ প্রায়ই রূপ নেয় অপচয়ে।

আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে অ্যালোপ্যাথিক পদ্ধতির চিকিৎসার ওপর, যা অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায়, সবচেয়ে ব্যয়বহুল। এই সুযোগে এক শ্রেণীর চিকিৎসক সঙ্ঘবদ্ধ অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। এতে শুধু সম্পদের অপচয় নয়, স্বাস্থ্যসেবা থেকেও মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে বেসরকারি সংস্থা ‘বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ’-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭৫ শতাংশ মানুষই স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা ছাড়া, বাজেট ব্যয়ে দুর্নীতি, অবস্থাপনা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব স্বাস্থ্যসেবাকে দিন দিন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে।

চিকিৎসা প্রসঙ্গ এলে আমরা সবসময় নিরাময়যোগ্য (কিউরেটিভ) প্রতিষেধক নিয়ে আলোচনা করি; প্রতিরোধমূলক (প্রিভেনটিভ) ব্যবস্থা নিয়ে তেমন আলোচনা করা হয় না। শুধু উপদেশ বা কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা দিয়ে আমরা যে অনেককে বহু জটিল ও কঠিন রোগ থেকে বাঁচাতে পারি, সে কথা খুব কমই ভেবে থাকি। কিউবা সরকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্বাস্থ্যসেবায় অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে। এর মাধ্যমে সেখানে স্বাস্থ্যসেবার যে উন্নতি হয়েছে, তাতে ৪০০ ডলারে যে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায়, তা পেতে শক্তিধর ও উন্নত প্রতিবেশী দেশ আমেরিকায় ২২ গুণ বেশি অর্থ, অর্থাৎ ৯ হাজার ডলার খরচ করতে হয়।

হিসাব করে দেখা গেছে, রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগের প্রতিরোধ শতকরা ২০০ ভাগ বেশি সাশ্রয়ী। কারো যক্ষ্মা হলে তার চিকিৎসা করা হয়; কিন্তু তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের যাতে এই রোগ না হয়, সে ব্যবস্থা নেয়া হয় না। আমরা সহজেই এমন হাসপাতালের কথা ভাবতে পারি যেখানে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার ওপর জোর দেয়া হবে। যে এলাকায় যে রোগের প্রকোপ বেশি, সে এলাকায় সে ধরনের প্রতিরোধমূলক হাসপাতাল স্থাপন করা গেলে সংশ্লিষ্ট রোগের প্রকোপ কমে আসবে। আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় বিষয়টি থাকলেও তা এত বেশি অবহেলিত ও অনুল্লেখযোগ্য অবস্থায় রয়েছে, যা না থাকারই নামান্তর। আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় আরো যে বিষয়টির অভাব তা হলো হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ বা সার্বিক চিকিৎসাব্যবস্থা। যেমন- কেউ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলে তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা যেন এই রোগে আক্রান্ত না হয়, সে ধরনের ‘ফলোআপ চিকিৎসা’র ব্যবস্থা হলো হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ।

স্বাস্থ্যসেবা অধিকসংখ্যক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আরেকটি বিষয় বিবেচনা করা যায়। আমাদের দেশের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে প্রায় বিনাখরচে শিক্ষা নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। পশ্চিমা দেশগুলোতে এটা অকল্পনীয়। আমাদের এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দেশ ও সমাজ কী পাচ্ছে, তা ভেবে দেখা দরকার। গরিব মানুষের করের পয়সায় ডাক্তার হয়ে তাদের খুব কমজনই সেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। আমরা কি এমন হাসপাতালের কথা চিন্তা করতে পারি যেখানে কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসক থাকবেন না? আমাদের মেডিক্যাল কলেজগুলো থেকে পড়াশোনা শেষ করে সনদ নিয়ে যারা বের হন, তারা এখানে বিনামূল্যে বা নামেমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেবেন।

বিষয়টি এমন হবে যে, কেউ চিকিৎসক হয়ে বের হওয়ার পর কিছু দিন তাকে সমাজসেবা করতে হবে এবং এটা হবে বাধ্যতামূলক। সরকারি ভর্তুকি দিয়ে শিক্ষা গ্রহণের ফলে তাদের যে সামাজিক দায়ভার তৈরি হয়েছে, তার কিছুটা কমানোর প্রক্রিয়া হিসেবেও একে দেখা যেতে পারে। ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক নবীন ও প্রবীণ চিকিৎসক এখানে সেবা দিয়ে যাবেন। পাশ্চাত্যের অনেক দেশে কেউ মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হতে চাইলে তাকে কোনো হাসপাতালে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা রোগী সেবার পেছনে ব্যয় করতে হয়। এটা তার বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে যোগ হয়ে থাকে। আবার শিক্ষাগ্রহণ শেষে ইন্টার্নশিপ বা এ ধরনের সোস্যাল সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে।

তবে এর জন্য মটিভেশনের প্রয়োজন। মটিভেট বা উদ্বুদ্ধ করা গেলে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনকল্যাণে সময় ব্যয় করতে রাজি হবেন না। এর জন্য অবশ্য ব্যাকআপ সুবিধাও থাকতে হবে। প্রত্যেক জেলা সদরে যদি এ ধরনের একটি নির্দিষ্ট ডাক্তারবিহীন হাসপাতাল করা যায় এবং সেখানে জনসেবায় উদ্বুদ্ধ স্বাস্থ্যকর্মীদের শ্রমদানের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে এ দেশের স্বাস্থ্য খাতে অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হতে পারে। দুঃখজনক হলো, আমরা বিনিয়োগ করছি নিছক বস্তুগত সুবিধা হাসিলের জন্য, রোগীর মানসিকতার দিকটি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

আমাদের দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় আরেকটি বিষয় চরম উপেক্ষিত বলা চলে। তা হলো প্রচলিত বা দেশীয় চিকিৎসাপদ্ধতি যাকে বলে ‘কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিন’। প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ায় এবং অনিশ্চয়তার কারণে প্রাচ্য-প্রতীচ্যের অসংখ্য মানুষ এখন বিকল্প এই চিকিৎসাপদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে। এই পদ্ধতি অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াবিহীন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে রোগী পুরোপুরি ওষুধ ও চিকিৎসকের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের মধ্যে লুক্কায়িত প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে রোগ নিরাময়ে নিজেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

‘কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিন’ দুনিয়াজুড়ে একটি বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে গবেষক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এবং এটি বেশ বিস্তৃতি লাভ করেছে। নানা রকম ভেষজ ওষুধ, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, আকুপাংচার, ফিজিওথেরাপি, মিউজিক থেরাপিসহ বিভিন্ন কমপ্লিমেন্টারি পদ্ধতিই এখন রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহের বিষয় ও শেষ ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের নিজস্ব জীবন ও জগৎ সম্পর্কে বিস্তৃত জ্ঞান, খাদ্যাভ্যাস, শরীর ও মনের স্বাভাবিক বিন্যাস এবং সেই সাথে প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসাপদ্ধতির সমন্বয় সাধন এই চিকিৎসার বৈশিষ্ট্য। নিউ ইয়র্কে এ ধরনের একটি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার মিচেল গেইনার এই পদ্ধতিকে বলেছেন ‘সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে এক বিস্ময়কর উপহার’। জীবনের অনেক নিগূঢ় রহস্য রয়েছে, যা মেডিক্যাল ল্যাবরেটরির চৌহদ্দিতে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মেডিক্যাল কলেজে এই ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিনের কোর্স চালু করেছে।

অল্টারনেটিভ মেডিসিনের বহু পদ্ধতি হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের সমাজে চালু রয়েছে। ভেষজ, ইউনানী বা হেকিমি, কবিরাজি বা আয়ুর্বেদিক ইত্যাদি চিকিৎসা পদ্ধতির প্রতি আমরা তেমন দৃষ্টি দিতে পারিনি।

স্বল্পব্যয়ের আরেকটি কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি হচ্ছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাপদ্ধতি। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না এটি পাশ্চাত্যজগতের একটি চিকিৎসাপদ্ধতি। জার্মানির মতো সূক্ষ্ম প্রযুক্তির জন্য খ্যাতিমান দেশও চিকিৎসার জন্য এই পদ্ধতির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করছে। অথচ আমাদের বাংলাদেশের স্বাস্থ্যনীতিতে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না আজো। এসব চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধগুলো আধুনিক করার কোনো উদ্যোগ আমাদের নেই। অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার ওপর জোর দিতে গিয়ে আমাদের দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতির মতো অমূল্য সম্পদ ও জ্ঞান বিলুপ্ত হতে চলেছে। আমরা ভেষজ চিকিৎসার উন্নয়ন ও গবেষণায় বিনিয়োগ করছি না বললেই চলে। এই চিকিৎসা ক্ষেত্রে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আগমনকে উৎসাহিত করার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা আমাদের নেই।

সরকার এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে কিছু অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন তেমন দেখা যায় না। জাতীয় বাজেটে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয় তার ভগ্নাংশও দেশীয় বা হোমিও চিকিৎসার জন্য দেয়া হয় না। এমন অনেক রোগ আছে যার চিকিৎসায় অ্যালোপ্যাথির তুলনায় হোমিও বা ভেষজ পদ্ধতিতে অনেক বেশি সুফল পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না, অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের ৪০ শতাংশই ভেষজনির্ভর। পশ্চিমা চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে সমন্বিতভাবে ভেষজ ও অন্যান্য দেশীয় চিকিৎসাপদ্ধতি প্রয়োগ করা গেলে জনগণকে অনেক সস্তায় চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব।

কিন্তু আমরা সস্তায় চিকিৎসাসেবা দেয়ার কথা ভাবি না। আমরা হাসপাতাল তৈরি করছি, রোগী আসবে এই আশায়। হাসপাতাল স্থাপনের আগে আমরা ভাবি, যত বেশি রোগী তত বেশি লাভ বা ব্যবসার প্রসার। আমরা কখনো এমন হাসপাতাল তৈরি করার কথা ভাবি না যেখানে এমন চিকিৎসা দেয়া হবে যেন রোগীর আসা ক্রমেই বন্ধ হয়ে যায়। আমরা কি কখনো এমন হাসপাতাল তৈরির কথা ভেবেছি যেখানে রোগীর ভিড় বৃদ্ধি না পেয়ে কেবল কমতে থাকবে? সম্ভবত কেউ ভাবিনি। অথচ এই ভাবনাই একটি সুস্থ জাতি গঠনের দিকনির্দেশ দিতে পারত। এই ভাবনা সমাজের সার্বিক উন্নয়নের আলোকবর্তিকা হতে পারে।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ,
ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement