বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূর করার হাতিয়ার
- প্রফেসর এম এ মান্নান
- ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৩২
ইসলামী অর্থনীতির ওপর যৎ সামান্য পড়াশোনার পর যতটুকু বুঝতে পেরেছি, সে জ্ঞানের বাস্তবায়ন দেখে যাওয়াই এই বয়সে আমার জীবনের স্বপ্ন। বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূর করার হাতিয়ার হিসেবে প্রায় ২০ বছর ধরে ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের এই আইডিয়া লালন করছি এবং বিভিন্ন ফোরামে এ বিষয়ে কথা বলেছি। যখন সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন ২০১২ সালের দিকে ইন্দোনেশিয়ার একদল ব্যাংকার বাংলাদেশ সফরে এসে ছিলেন। তারা দারিদ্র্য বিমোচনের একটি বিকল্প চিন্তাধারার অনুসন্ধান করছিলেন। বিশ্বে আমরা যত ধরনের দারিদ্র্য বিমোচনের মডেল দেখছি, আসলে সেগুলো ব্যবসায় ছাড়া আর কিছু নয়। অনেকে দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বললেও কৌশলে তারা সেটাকে ব্যবসায়িক লাভ হাসিলের পথ হিসেবে গ্রহণ করেন। ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা এই একই অবস্থা দেখতে পাই। তাই বিকল্প হিসেবে ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের কথা চিন্তা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণে সবসময়ই কিছু করার স্বপ্ন দেখে এসেছি। ১৯৮০-১৯৯০ দশকে বাংলাদেশে কিছু কাজ হয় এ ক্ষেত্রে। ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স পাস হলো। কিন্তু সেটা ছিল নারীর ক্ষমতায়নের নামে সুদভিত্তিক অর্থনীতিকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার একটি উদ্যোগ। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের লালিত ইসলামী মূল্যবোধ, এমনকি আমাদের বহুদিনের লালিত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে উপেক্ষা করে কিছু এনজিওর আগ্রাসী পরিকল্পনায় দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই সমিতি ও সুদের ব্যবসা চালু হয়েছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ২৪ হাজারের মতো এনজিও কাজ করছে। তারা দ্বিতীয় অদৃশ্য সরকারের মতো এবং ২৫-২৬ শতাংশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশের ভিত্তিতে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর সুদ নিয়ে থাকে। গ্রামীণ, আশা, ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠান আমাদের সমাজে সুদকে এমনভাবে অনুপ্রবেশ করিয়েছে, যা দাদন ব্যবসায়ীদের চেয়েও ক্ষেত্রবিশেষে খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি বাড়িতে সুদ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিস্তির নামে সুদি ব্যবসা চালু করা হয়েছে। এতে সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেতর থেকে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা এমনভাবে সুদে জর্জরিত, যেখান থেকে বের হওয়া বেশ কঠিন। নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশে সুদ এভাবে শেকড় গেড়ে বসেছে। অথচ পবিত্র কুরআনে সুদকে স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। হাদিস, ইসলামী সাহিত্য, প্রতিটি ইসলামী দর্শন ও মতবাদে ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম বলা হয়েছে। এই সুদ যেকোনো কৌশলেই নেয়া হোক না কেন, তা হারাম। সুদ থেকে দরিদ্র মানুষকে মুক্ত করে দারিদ্র্য দূর করতেই মূলত ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ধারণা প্রণীত হয়েছে।
সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সেমিনারেও বিষয়টি তুলে ধরেছি। ২০১৫ সালে মালয়েশিয়াতেও এ কথা বলেছিলাম। পরের বছর মক্কাতে এক সেমিনারে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য এমন একটি প্রতিষ্ঠানের কথা চিন্তা করছি, যেখানে ‘বিনা সুদে’ ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হবে। অনেকেই অবাক হবেন এটা ভেবে যে, বিনা সুদে কি ঋণদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব? এর আয়ের উৎস তাহলে কী? এর আয়ের উৎস হবে ‘ক্যাশ ওয়াক্ফ’। এই যুগান্তকারী ধারণাটি বাস্তবায়ন করতেই আমরা বলছি।
ইসলামের ইতিহাসে অটোম্যানরা প্রথম পঞ্চদশ শতকে ‘ক্যাশ ওয়াক্ফ’ ধারণার প্রবর্তন করে ছিলেন। কিন্তু তাদের কিছু সমস্যা ছিল। ইতিহাসে তুর্কি সাম্রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি ওয়াক্ফ সম্পত্তি ছিল। সেখানে ওয়াক্ফের এমন বিস্তার ঘটে যে, অষ্টাদশ শতকে দেখা গেল সাম্রাজ্যের কৃষি সম্পত্তির তিন-চতুর্থাংশই ওয়াক্ফ সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। ফলে মানুষ যখন ওয়াক্ফ করার জন্য আর জমি পাচ্ছিল না তারা বলল, আমরা ক্যাশ (নগদ অর্থ) দেবো। তখন আলেমরা বললেন হ্যাঁ, ক্যাশ ওয়াক্ফ হতে পারে। কিন্তু অটোম্যান সুলতান যারা ছিলেন তারা ওই অর্থ রাস্তাঘাট নির্মাণের মতো কাজে ব্যবহার করা শুরু করেন। তখন শরিয়াহ বিশারদরা বললেন, এটা ওয়াক্ফ নয়। কারণ ওয়াক্ফর প্রধান শর্ত হলোÑ এই সম্পদ স্থায়ী হতে হবে, তা ধ্বংস করা যাবে না। এর মুনাফা ব্যবহার করা যাবে; কিন্তু ‘আসল’ অক্ষত থাকতে হবে। কেউ কিছু পরিমাণ অর্থ ওয়াক্ফ করার পর সেখান থেকে মাত্র এক টাকা খরচ করলেও সেটা আর ওয়াক্ফ থাকবে না। তখন অটোম্যান শাসকেরা ‘যুক্তি’ দিলেন, এই অর্থ ভালো কাজে খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু শরিয়াহবিদরা বলেন, না তাহলেও ঠিক হবে না। তখন শাসকরা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা রাখতে শুরু করেন। এর বিনিময়ে তারা সুদ দিতে শুরু করেন। এতে তৈরি হলো নতুন বিতর্ক। শরিয়াহ পণ্ডিতরা এই সুদ গ্রহণের বিরোধিতা করেন। তখন অটোম্যান কোর্ট ‘ডকট্রিন অব দ্য রুলার’ বা প্রয়োজনের তাগিদে কিছু করার শর্তে এটা মেনে নেন। এর মানে হলো, দুটি বিষয় যদি শরিয়াহর বিরুদ্ধে যায় তাহলে কম ক্ষতিকর বিষয়টিকে গ্রহণ করা। ইসলামী আইনের চেতনাও তাই। অটোম্যান আদালত রায় দেন, এই সুদ কেউ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছে না, সড়ক ও হাসপাতাল নির্মাণে খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু শরিয়াহ বিশেষজ্ঞরা এতেও আপত্তি করলেন। তারা রাষ্ট্রীয় আদালতের আদেশের বিরোধিতা করেন। ফলে তখন ক্যাশ ওয়াক্ফ আর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি এবং বিষয়টি বিতর্কের মধ্যে আটকে যায়।
তখন শরিয়াহবিশেষজ্ঞরা ছিলেন খুবই স্বাধীনচেতা। এটা ছিল ইসলামের এক ধরনের সৌন্দর্য। ইসলামের ইতিহাস থেকে দেখা যাবে, যারা বড় বড় শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ ছিলেন তারা কখনোই শাসকদের কাছে মাথা নত করেননি। এমন কি অনেক ইমামকে জেলে যেতে হয়েছে। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল- এদের দিকে তাকান। জেলখানায় অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। অনেককে নির্যাতন করা হয়েছে, দেশ থেকে করা হয়েছে বিতাড়িত। কিন্তু তারা অন্যায়ের সাথে কোনো আপস করেননি। তারা এরকম সাহসী ছিলেন যার কারণ একটা, তাদের আর্থিক ব্যয় নির্বাহ হতো ওয়াক্ফ সম্পত্তি থেকে। জীবন ধারণের জন্য তাদের সুলতান-বাদশাহর কাছে ধরনা দিতে হতো না। এখান থেকে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, গবেষণা করার জন্য কোনো স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া প্রয়োজন। কোনো সরকার, এনজিও বা বিদেশী প্রতিষ্ঠান যখন ঋণ দেয়, সেটা থাকে কঠোর শর্তে আবদ্ধ। তখন যারা সেই টাকা নিয়ে কোনো কাজ করবেন, পছন্দ হোক বা না হোক, বাধ্য হয়েই তাদের গুণগান গাইতে হয় ঋণদাতার। তা না করলে টাকা পাওয়া যাবে না। আমাদের দেশসহ তৃতীয় বিশ্বে এখন এটাই হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু দেখা গেল, দারিদ্র্যকে ব্যবসা হিসেবে সবাই গ্রহণ করেছেন। আন্তর্জাতিক, জাতীয়, স্থানীয় এমনকি এনজিও পর্যায় পর্যন্ত এই প্রবণতা তৈরি হয়েছে।
তবে যুগে যুগে অনেক ধারণা এসেছে। আবার সময়ের পরিক্রমায় তা বাতিলও হয়ে গেছে। অনেক ধারণা পৃথিবীকে আমূল বদলে দিয়েছে। আবার অনেক ধারণা কিছু দিন কাজ করার পর তা আর কাজ করেনি, অনেকটা অ্যান্টিবডির মতো। যেমন : অনেক ওষুধ একসময় কাজ করত। এখন তা আর কাজ করে না। ঠিক একইভাবে, আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোও যেন এখন অ্যান্টিবডি হয়ে গেছে। এগুলো এমনকি ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। সেগুলো আর দারিদ্র্য বিমোচনের মতো খাতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। বরং ভালো করার চেয়ে খারাপ করছে। তাই বিকল্প হিসেবে ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের কথা বলা হয়েছে।
এখানে প্রথমেই বিনা সুদে ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আর সেজন্য ‘ক্যাশ ওয়াক্ফ’ প্রবর্তন করা হয়েছে। ক্যাশ ওয়াক্ফ হলো, নগদ অর্থ মূলধন বা ‘সিড মানি’ হিসেবে দান করা। এই অর্থ কখনো ফেরত নেয়া হবে না। এর মূল খরচ করা যাবে না। এখান থেকে আয় করা অর্থ ধর্মীয় বা জনকল্যাণের কাজে ব্যয় করা হবে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সব মুসলমানের কাছ থেকে এক ডলার করে সংগ্রহ করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ১.৬ থেকে ১.৭ বিলিয়ন ডলার উঠে আসবে। আমাদের দেশে বছরের দুই ঈদে প্রধানমন্ত্রী যদি দাঁড়িয়ে ঘোষণা দেন, সক্ষম সবাইকে ১০০ টাকা করে ক্যাশ ওয়াক্ফ করতে হবে, তাহলে ৩২-৩৩ হাজার কোটি টাকা উঠতে পারে। এই টাকায় পদ্মা সেতুর মতো কয়টি সেতু তৈরি হতে পারে, কয়টি হাসপাতাল চলতে পারে, তা কি কল্পনা করা যায়?
২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আমার সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়েছিল। তার কাছে ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের ধারণা ব্যক্ত করেছিলাম। তিনি বলেন, অর্থ আসবে কোথা থেকে? বললাম, টাকা কোনো সমস্যা হবে না। আপনি শুধু বলেন, ১০০ টাকা করে ‘সদকায়ে জারিয়া’ হিসেবে ক্যাশ ওয়াক্ফ করতে। তিনি ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দিতেও রাজি হয়েছিলেন। ওআইসি’র সাবেক মহাসচিব হামিদ আল গাবিদ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠি তার অফিসে রয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোনো জবাব দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমি আবারো প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় চেয়েছি। এটা কোনো কল্পনা বা অবাস্তব কিছু নয়, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য খুবই বাস্তব একটি পদক্ষেপ।
ব্যক্তি উদ্যোগে ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য ইতোমধ্যে ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। আমেরিকায় থাকেন- এমন ১২ জন ডাক্তারও এই ট্রাস্টের সদস্য হয়েছেন। এরই মধ্যে ট্রাস্টের একটি তহবিলও গঠন করা হয়েছে ওয়াক্ফ হিসেবে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে। আসলে বর্তমান সব সমস্যার মূলে আছে নেশন স্টেটের ধারণা। এই ধারণা থেকেই দু’টি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। এই ধারণা ইউরোপীয়। অথচ ইউরোপীয়দের ধারণা নিয়ে আমরা লিপ্ত হচ্ছি সঙ্ঘাতে। আজ পাক-ভারত-বাংলাদেশ উপমহাদেশে যে সঙ্ঘাত চলছে তা নেশন স্টেট কনসেপ্টের কারণে। আমি নিজে ‘কমনওয়েলথ অব হিউম্যান কমিউনিটিজ’ গঠনের স্বপ্ন দেখি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- ওয়াক্ফ’র সুফল যেকোনো ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষই ভোগ করতে পারেন। এর মাধ্যমে এক সম্প্রদায়ের মানুষকে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত করা যায়। কারণ এটা নন ভায়োলেন্ট বা অহিংস। এর মাধ্যমে সামজিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এটা প্রো-হিউম্যানিটি, অর্থাৎ মানবতাবান্ধব। তা ছাড়া ব্যাংকে ক্যাশ ওয়াক্ফ করা হলে ব্যাংকও একটি স্থায়ী আমানত পাচ্ছে। এতে ব্যাংক উপকৃত হচ্ছে। আবার এর মুনাফা খরচ করা হচ্ছে মানবতার কল্যাণে। এটাই ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের লক্ষ্য। এতে ব্যক্তির বদলে প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করলে অধিক সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করা যায়। এটা যেমন কোনো ব্যাংক হতে পারে, তেমনি কোনো ট্রাস্টও হতে পারে। এর সুফল যাবে যারা অর্থনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত তাদের কাছে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমরা যে ঋণ দিচ্ছি, এমনকি জাকাতও দেয়া হচ্ছে- সেই টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে তার কোনো তদারকি নেই। একজন ধনী জাকাত দিচ্ছেন কোনো ব্যক্তিকে। কিন্তু ওই ব্যক্তি জাকাতের টাকাটা কোথায় কিভাবে খরচ করছেন, তা কেউ দেখছে না, কিংবা এটা দেখার উপায়ও নেই। অর্থাৎ আমরা কাউকে ঋণ বা সহায়তা দিলেও তার কনসিকোয়েন্স ম্যানেজ করি না। এটা বর্তমান ঋণদান প্রক্রিয়ার বড় ধরনের একটি ব্যর্থতা। তাই ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের একটি বড় কাজই হবে এর কনসিকোয়েন্স ম্যানেজ করা। এখন যেভাবে ঋণ দেয়া হচ্ছে তা গরিবকে আরো গরিব করছে। ধনী আরো ধনী হচ্ছে। তারা ধনী হতে হতে এক অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। শুধু স্থানীয় পর্যায়েই নয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এটা ঘটছে। বিশ্বের বেশির ভাগ সম্পদ এক-শতাংশেরও কম মানুষের হাতে চলে গেছে। এসব বৈষম্য দূর করার জন্য ব্যাপকভাবে চিন্তাভাবনা দরকার। এ জন্য সাহস দরকার, উদ্যম দরকার। এ ক্ষেত্রে ক্যাশ ওয়াক্ফ কার্যকর বিকল্প হতে পারে। আর এই ধারণাকে এগিয়ে নেয়ার জন্যই ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংক প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠান সহজে হারিয়ে যাবে না। কিন্তু তাদের দিন গণনা শুরু হয়ে গেছে পদ্ধতিগত দুর্বলতা বা ব্যর্থতার দরুন। এসব শোষণমূলক ব্যবস্থাসম্বলিত প্রতিষ্ঠানকে বিদায় করার জন্য বিকল্প কিছু ভাবতে হবে।
লেখক : ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক অর্থনৈতিক পরামর্শক, অর্থনীতির অধ্যাপক, কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়, জেদ্দা, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা