২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লেলিহান শিখাও কি ব্যর্থ হবে

-

সূর্যের কেন্দ্রভাগের উত্তাপ এক কোটি ৫০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কেন্দ্র থেকে উৎসারিত শক্তি, তাপ ও আলোর বিচ্ছুরণ পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকা প্রতিনিয়ত সম্ভব করে রেখেছে। কোনো দিন সূর্য থেকে এমন তাপ উৎপন্ন না হলে কিংবা আলো আসা বন্ধ হয়ে গেলে, পৃথিবীতে আর প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে না। এমন বিশাল একটি কর্মকাণ্ড অনেকের মতে, এমনিতেই সম্ভব হচ্ছে। তাদের ধারণা মতে, হঠাৎ করে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা হয়তো কিছু কার্যকারণ সম্পর্কের ব্যাখ্যাও তুলে ধরেন। তবে বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন, মহান স্রষ্টাই জীবনের জন্য এই অপরিহার্য ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তিনিই প্রতিনিয়ত এর দেখাশোনা করছেন। আবার এই আগুন কিংবা আগুনের ফলে সৃষ্ট উত্তাপ পৃথিবীর বহু মানুষের জীবনহানির কারণ হচ্ছে। ঢাকার নিমতলী, চুড়িহাট্টা কিংবা বাংলাদেশে নিয়মিত বিরতিতে আগুনে পুড়ে মর্মান্তিক প্রাণহানি এর উদাহরণ।

মানুষকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট কিভাবে দেয়া যায়, তার একটি উত্তর হবে ‘আগুন দিয়ে’। এর দহন সরাসরি মানুষের হৃৎপিণ্ডে আঘাত হানে। এর ফলে সৃষ্ট অবর্ণনীয় কষ্ট মানুষ সহ্য করতে পারে না। মানুষকে পোড়ানো হবে বলে জগতের স্রষ্টা আল্লাহ এ জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন। সেটা চূড়ান্ত বিচার দিবস বা তার পরে। পৃথিবীতে মানব জাতির সূচনালগ্ন থেকে বার্তাবাহক প্রেরণের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করে গেছেন। নবী মুহাম্মদ সা: মানবজাতির প্রতি এ ধরনের সতর্কবাণী দিয়ে গেছেন। সর্বশেষ আসমানি কিতাব আল কুরআন অবিকৃত থেকে এই সাক্ষী বহন করছে। পৃথিবীতে সর্বনি¤œ ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানি ফোটে। এই তাপেই আমাদের ভাতের চাল সিদ্ধ করা সম্ভব। সামান্য ভাত সিদ্ধ করা পানি মানুষ সহ্য করতে পারে না। উথলে গায়ে পড়লে ফোসকা পড়ে যায়। আর আমরা জানতে পারছি যে, সূর্যের কেন্দ্রে পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটছে প্রতিনিয়ত। সেখানে তাপ উৎপন্ন হচ্ছে দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরাধ, সীমালঙ্ঘন ও অস্বীকার করার জন্য মানুষকে কত মাত্রার তাপে পোড়ানো হবে; সেটি আল্লাহ উল্লেখ না করলেও ভয়াবহ সব ইঙ্গিত দেয়া আছে কুরআনে। এগুলো জানা থাকলে মানুষের মধ্যে গাফিলতিসহ অপরাধপ্রবণতা হ্রাস পাওয়ার কথা।

এই আগুন নিয়ে মানুষ এখন খেলছে। দায়িত্ব পালন না করে মারাত্মক হেলাফেলা করা হচ্ছে। আবার কেউ অর্থের লোভে আগুনের ভয়াবহতার কথা ভুলে গেছে। পুরান ঢাকার অধিবাসীরা গণমাধ্যমকে জানান, মুদি দোকান ভাড়া দিলে পাঁচ হাজার টাকা পাওয়া যায়। রাসায়নিকের গুদাম ভাড়া দিলে তার চার গুণ, ২০ হাজার টাকা আসে। বাড়তি টাকার লোভ সামাল দিতে পুরান ঢাকার বাড়ির মালিকেরা ব্যর্থ। ফলে বংশাল থেকে চকবাজার, আরমানিটোলা থেকে সিদ্দিকবাজার, মালিটোলা থেকে আগামসিহ লেন- এমনকি মিটফোর্ড এলাকাসহ পুরান ঢাকার সব জায়গার একই চিত্র। বাড়ির নিচতলা রাসায়নিকের গুদাম, স্যান্ডেল কিংবা প্লাস্টিকের কারখানা। কোথাও প্লাস্টিক দানা, ফোম, নকল প্রসাধন ও পারফিউম তৈরির সরঞ্জামের ডিপো।

এসব শিল্পপণ্য কিংবা এগুলো তৈরির মূল উপাদান নিজেই উচ্চপর্যায়ের দাহ্য পদার্থ। এসব রাসায়নিক পণ্য সব সময় মুখিয়ে থাকে আগুনের সংস্পর্শ পেতে। সংস্পর্শ পেলে সাথে সাথেই দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ফলে পুরান ঢাকার বিশাল এলাকার মানুষ বাস করছে আগুনের গোলার ওপর। এ জন্য একটি ইংরেজি পত্রিকা পুরো পুরান ঢাকাকে তুলনা করছে টাইমবোমার সাথে। টিক টিক করে এই বিশাল বোমা বিস্ফোরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নিমতলী, চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি সৃষ্টি হয়েছে, তারপর কোথায় হবে কেউ জানে না। তবে টাইমবোমার ঘড়ি টিক টিক করে এগিয়ে চলছে। অন্য দিকে, পুরান ঢাকার এসব বাড়ির মালিকের বেশির ভাগ এলাকায় থাকেন না। ‘টাইমবোমা’ ফিট করে দিয়ে তারা নিশ্চিন্তে গুলশান-বনানীতে কিংবা অন্য কোনো নিরাপদ এলাকায় থাকেন।

দুর্ঘটনার জন্য এখানে তিনটি পক্ষ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার, ব্যবসায়ীচক্র এবং বাড়ির মালিক। ব্যবসায়ী ও বাড়ির মালিক না হয় লোভে কাতর, কিন্তু সরকার কী কারণে এমন ভয়াবহ আগুনের গোলার ব্যবসা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিচালিত হতে দিচ্ছে? সরকার বলতে কোনো একজন ব্যক্তি বোঝায় না। অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমন্বয়ে সরকার গঠিত। সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং কয়েকটি মন্ত্রণালয় এর সাথে জড়িত।

২০১০ সালে রাজধানীর নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা বিস্তারিত তদন্ত শেষে ১৭ দফা সুপারিশ পেশ করেছিলেন। এটি বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল শিল্প মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ঘটনার পর ৯ বছরে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো কিছু সাধারণ কর্মসূচি পালন করেছে। গণমাধ্যমও নিমতলীর স্মরণ জাগিয়ে রেখেছিল সাধ্যমতো। তবে মূল কাজ, রাসায়নিক পণ্যের গুদাম ও শিল্পকারখানা এখান থেকে সরাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সুপারিশগুলো কারা বাস্তবায়ন করবে, সেটি সুনির্দিষ্ট ছিল। দায়িত্বপালনে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাউকে জবাবদিহি করতে হয়নি। যে রিকশাওয়ালা কিংবা ভ্যানচালক চুড়িহাট্টা দিয়ে ওই সময় পার হতে গিয়ে পুড়ে অঙ্গার হলেন, তার কী দোষ? আগুনের দহন যন্ত্রণা যদি তাকে অহেতুক ভোগ করতে হয়, তাহলে যারা এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী, তাদের ভাগ্যে কী ঘটা উচিত?

৯ বছর পর এবার যখন চুড়িহাট্টায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো, সবাই একসাথে ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তি- এমনকি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কর্তারাও জোরালো বক্তব্য রাখছেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তারা আহতদের চিকিৎসা দিতে এবং নিহত পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করার আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সাথে যোগ করে বলেছেন, ‘আহত ব্যক্তিদের সবার খরচ সরকার বহন করবে। এ ছাড়া, আশপাশের সব হাসপাতালকে সুচিকিৎসা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ এমন সচেতনতা ও কর্মতৎপরতা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে রোগী বেঁচে থাকতে এ ধরনের সচেতনতা থাকলে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হতো।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র বলেছেন, ‘পুরান ঢাকায় কোনোভাবেই আর কেমিক্যাল গোডাউন রাখতে দেয়া হবে না। দাহ্য পদার্থের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ অবশ্য তিনি নিমতলী ঘটনার পর একই কাজ শুরু করেছিলেন। সে ব্যাপারে তিনি একটি পত্রিকাকে বলেন, ‘মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম; কিন্তু ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও রাসায়নিক পদার্থের ব্যবসায়ীরা আমাদের অনুরোধ করেন তা বন্ধ রাখতে। সেই সময় তারা বলেন, কেরানীগঞ্জে বিসিক শিল্পনগরী করে সেখানে তাদের সরিয়ে নেবে। কিন্তু এই কাজ শেষ হয়নি।’ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন সরানো দরকার। এখনই সময়।’ অগ্নিকাণ্ডের পর শিল্প স্থানান্তরের সাথে জড়িত সবাই জোরালো মন্তব্য করেছেন।

সবশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাসায়নিকের গুদাম সরাতে আর আপত্তি থাকবে না আশা করি।’ ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে রাসায়নিকের গুদাম সরানো যায়নি। এখন আরো একটি এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ব্যবসায়ী সমাজ বা অন্য কেউ রাসায়নিকের গুদাম আবাসিক এলাকা থেকে সরাতে বাধা দিতে পারবেন না। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী কথাটি বলেছেন। মূলত আরেকটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডই কেবল একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকে অনিবার্য করে তুলল। এরপরও ‘কিন্তু’ থেকে যাচ্ছে। কেবল কাজটি সম্পন্ন হলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে, তার আগে নয়।

চুড়িহাট্টার ঘটনার পর ‘কামান দাগানো’ হচ্ছে। একসাথে যেন অনেকগুলো কামান গর্জে উঠল। নিমতলীকে যদি সতর্কবার্তা হিসেবে নেয়া হতো, তাহলে পরিস্থিতি নিশ্চয়ই ভিন্ন হতো। এখন এত কামান না গর্জে শুধু কাজের কামানটি সময়মতো দাগানো যথেষ্ট। এত কথা না বলে কাজটি করলেই ভালো হয়। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র কার্যকারিতা হারিয়েছে বাংলাদেশে। জবাবদিহির সিস্টেম এ দেশে বলবৎ নেই। নিমতলী ট্র্যাজেডির পর ১৭টি সুপারিশ বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশন ও রাজউক কী দায়িত্ব পালন করেছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা কী করেছেন, এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রীরা কী করেছেন? সাবেক দুই শিল্পমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে উত্তপ্ত বিতর্কে জড়িয়ে যেতে দেখা গেল। ‘কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে’ বলে উচ্চ আদালত মন্তব্য করেছেন। অগ্নিকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পাঁচটি রিট হয়েছে উচ্চ আদালতে। কোথাও প্রতিকার না পেয়ে মানুষ উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। প্রয়োজনীয় মামলা নিষ্পত্তি বাদ দিয়ে অনেক সময় বিচারকদের এগুলোতে মনোযোগ দিতে হচ্ছে।

বাংলাদেশে এখন কার্যকর কোনো বিরোধী দল নেই। সরকার যা-ই করুক, সে ব্যাপারে কেউ জোরালো প্রতিবাদ করার সামর্থ্য রাখে না। সব পক্ষের দায়িত্ব যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সম্ভবত মিডিয়াকে এক নম্বরে রাখা যাবে। চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ড ঘটার সাথে সাথে তারা নিমতলীর ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছে। এতে এটা স্পষ্ট হয়, কারা কারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে। জোরালো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাংলাদেশে এখন দেখা যায় না। নিমতলীর পর সে ধরনের সাংবাদিকতা হলে চুড়িহাট্টার ট্র্যাজেডি ঘটার আগেই দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্টরা চিহ্নিত হতো। যা হোক, এবার চুড়িহাট্টায় ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকেরা দায়িত্ব পালন করেছেন। আগুন থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকার পরও তারা অকুস্থল থেকে সংবাদ কাভার করেছেন ঝুঁকি নিয়ে। সরকারের জবরদস্তি নীতির কাছে মিডিয়াও অনেকটা কোণঠাসা হয়ে আছে। নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে তারা দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

পুরান ঢাকা দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানকার একেকটি প্লট আধা কাঠা, এক কাঠা জমির ওপরও রয়েছে। আর চলাফেরার জন্য প্রয়োজনীয় ফাঁকা জায়গা নেই। রাস্তাঘাট একেবারে সরু; যে কারণে ফায়ার ব্রিগেড দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে না। এই এলাকায় ভূমিকম্প কিংবা অন্য কোনো বিপর্যয় হলে উদ্ধারকাজ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ ধরনের ঘিঞ্জি এলাকা ঢাকা শহরে আরো অনেক রয়েছে। মূলত পুরো রাজধানী একটি ঘিঞ্জি শহর। হাতেগোনা কয়েকটি এলাকা বাদ দিলে পুরো ঢাকা ইটপাথরের জঞ্জাল হয়ে পড়েছে। অগ্নিকাণ্ড কিংবা ভূমিকম্পের মতো বড় দুর্যোগ সৃষ্টি হলে বেশির ভাগ মানুষ আটকা পড়বে।

স্রষ্টা আগুন জ্বালিয়ে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। এর সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী মানবজাতি। মানুষ দৃশ্যত পৃথিবীর সব কিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইচ্ছেমতো পৃথিবীর সব সম্পদ ব্যবহার করছে। মাটির অভ্যন্তরে খনিজ পদার্থ, সমুদ্র ও বনভূমিতে থাকা সব সম্পদের ওপর একক কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে তারা। অন্য কোনো প্রাণী এ ব্যাপারে মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেনি বা কেউ দাবি করেনি যে, ‘বনভূমি আমাদের। হে মানুষ, তোমরা এখানে আসতে পারবে না’ কিংবা সমুদ্রের ব্যাপারেও এমন দাবি কেউ করেনি। ব্যাপারটি আল্লাহ এভাবে বলেছেন, ‘তিনি সেই মহান সত্তা, যিনি এ পৃথিবীর সব কিছু তোমাদের জন্য তৈরি করেছেন, অতঃপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন এবং সেগুলোকে সাত আসমানে বিন্যস্ত করলেন। তিনি সব কিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন’ (সূরা বাকারা, আয়াত ২৯)। সুবিধাভোগকারী মানুষ কি তার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছে? চুড়িহাট্টার মতো ঘটনাগুলো প্রমাণ করছে, মানুষ তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে না। তাহলে কি মানুষ ধরে নিয়েছে, ‘তাকে তার কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে না।’
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement