জীবনের চারটি প্রধান প্রয়োজন
- আলমগীর মহিউদ্দিন
- ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:০৯
জীবনধারণের জন্য যা প্রয়োজন তা বহুমাত্রিক। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে এর মধ্যে চারটি প্রধান। তা হলো স্বাধীনতা, সত্য, সুবিচার ও সুখ। এদের মধ্যে শেষেরটি অর্থাৎ সুখ হলো লক্ষ্য। আবার এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে যে দু’টি প্রয়োজন, তা হলো সত্য ও সুবিচার। সর্বশেষে এ তিনটির কোনোটিই অর্জন হবে না, যদি না থাকে স্বাধীনতা।
তাই স্বাধীনতা এত মূল্যবান। সাধারণ মানুষ নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচতে পারবে না বা জীবনধারণ অসম্ভব হবে, যদি এ স্বাধীনতা না থাকে। কারণ, স্বাধীনতাই কেবল কোনো মানুষকে সত্যের কাছে নিতে পারে। সত্য নিতে পারে সঠিক সমাজের কাছে। যেখানে সুবিচার জীবনের প্রধান অঙ্গ।
এখন সত্য কী, তা নিয়ে আছে নানা বিতর্ক। এর মূলে কাজ করে দু’টি সত্তা। ক্ষমতা ও স্বাধীনতা। তবে সবার ওপরে স্বাধীনতা। সত্যের আভিধানিক অর্থ হলো ‘কোনো জিনিস বা বিষয়ের প্রকৃত অবস্থা। কোনো জিনিস সম্পর্কে বিশ্বাস নয়।’ এটা স্বশাসন। স্বাধীনতা না থাকলে কোনো অবস্থার প্রকৃত অবস্থা সঠিকভাবে জানা প্রায় অসম্ভব। তখন মানুষ সুবিচার এবং সুবিচার থেকে বঞ্চিত থাকে। এমনকি জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য সুখ সম্পর্কেও ভুল ধারণায় নীত হয়। কোনটি সুখ বা কোনটি জীবনের যন্ত্রণা তখন তাদের কাছে কোনো পার্থক্য লক্ষিত হয় না। এ জন্যই জীবনের এ চারটি প্রয়োজনের একটিও অনুপস্থিত থাকলে পূর্ণাঙ্গ জীবন বলা যাবে না। দেখা গেছে, সুবিচার অর্জনে বহুমাত্রিকতা থাকায় সারা বিশ্বে বহু দূর অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত সংগ্রাম এবং সঙ্ঘাতের শেষ নেই। অত্যাচারিতেরাও তাদের জীবনের কিছু মুহূর্তের সাময়িক বিরতিতেও একটুখানি সুখ অনুভব করে।
তবে স্বাধীনতার প্রধান অঙ্গ হলো বক্তব্যের স্বাধীনতা। যদি বলার অধিকারের ওপর কোনো বাধা না থাকে, তবে যেকোনো ব্যক্তি তার সুখের কথা বলতে পারে এবং অনুভব করতে পারে।
সক্রেটিসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, জীবনের জন্য কোনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জবাব দিয়েছিলেন, ‘সুবিচার’। তিনি কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘সমস্ত ভালো শুধু সুবিচার থেকেই উৎসারিত।’ তিনি তার ‘দি রিপাবলিকে’ উল্লেখ করেন, ‘যখন মানুষ সুবিচার নিশ্চিত করে, তখন মানুষের মানসিকতার তিনটি অংশও একত্র হয়। এই তিনটি অংশ হলো- কারণ বা যুক্তি, ক্ষুধা ও আবেগ। ‘তিনটি অংশ একত্র হয়ে রথচালকের রথকে নিয়ন্ত্রণের মতো যুক্তি ও ক্ষুধা এবং মানসিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
এ জন্যই সমাজ ও জীবন নিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় স্বাধীনতার এত মূল্য দেয়া হয়েছে। সুবিচারের ওপর নির্ভরশীলতা থাকলে স্বাধীনতাকে খর্ব করা সম্ভব হয় না। সত্যিকারের সুবিচারপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা সর্বপ্রকার বলার অধিকার নিশ্চিত করে। ফলে অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে বক্তব্য আসে এবং সাধারণ মানুষ জানতে পারে সত্য। তার সুখ অর্জনের পথ। শেকসপিয়ার তার হ্যামলেট নাটকে পলোনিয়াসের মুখ দিয়ে উচ্চারণ করিয়েছেন- ‘তুমি তোমার নিজের কাছে সত্যবাদী হও, তাহলে অন্যদের কাছে তুমি মিথ্যাবাদী হবে না’- এ কথাটি বলা হয়েছিল ডেনমার্কের তৎকালীন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। তখন সেখানে সত্য ছিল বিকৃত, বিচার নিয়ন্ত্রিত এবং সুখ অবাঞ্ছিত। সব সময়ই চরমপন্থী ও স্বৈরশাসকেরা বক্তব্যের স্বাধীনতার বিরোধী। তবে জন স্টুয়ার্ট মিল আরেকটি বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কখনো কখনো রাজনৈতিক নিয়মানুগত্য সত্যকে কৌশলে মিথ্যার পর্যায়ে ফেলে এবং বলার স্বাধীনতাকে হরণ করে নেয়।’
অন্য কথায়, রাজনীতি এবং জনমানুষ সংশ্লিষ্ট সব ব্যবস্থা সত্য সম্পর্কে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। অথচ এরা সবাই সত্যের ধ্বজাধারী বলে দাবি করে থাকে। স্টুয়ার্ট মিলের অপর ব্যাখ্যাও প্রণিধানযোগ্য। ‘কিছু বক্তব্য ও ধারণার নিষ্পেষণ থেকে জনগণকে রক্ষা করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।’ কারণ, কোনো বক্তব্য বা আলোচনা কখনোই সামগ্রিক বা পুরো সত্যকে ধারণ করে না। সেখানে অবশ্যম্ভাবীভাবে বক্তব্যের স্বাধীনতা থাকে না। এ ব্যবস্থার অধীনে বিশ্বের সব দেশের সরকার এবং ক্ষমতাবানেরা তাদের প্রথম এবং প্রধান উদ্দেশ্য হয়- কেমন করে শক্তি প্রয়োগে অথবা কৌশলে বক্তব্যের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তারা আধুনিক সমালোচনার মুখে সব সময় কৌশলের আশ্রয় নেয়। তারা মানতে রাজি নয় যে, তারা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু রেখেছে। যেমন- যে কেউ ইচ্ছা করলে কোনো সমাবেশ আহ্বান করতে পারবে না এবং সমাবেশ সাধারণত পরিপূর্ণভাবে কড়া নজরদারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে হয়।
অনেকেই সত্য প্রতিষ্ঠার আগে বক্তব্যের স্বাধীনতাকে স্থান দেন। তাদের যুক্তি, যদি বলার স্বাধীনতা না থাকে; তবে প্রকৃত অবস্থা কখনোই জানা যায় না। ক্ষমতাবানদের কাছে প্রকৃত অবস্থা বেশির ভাগ সময় গ্রহণীয় নয়। নজরদারিকে তাই তারা প্রধান অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে। ফলে শক্তির প্রয়োগ ঘটে অবিরত এবং এর ফলে সমাজ নিরবচ্ছিন্নভাবে অশান্তির মধ্যে বিরাজ করে।
একজন বলেছেন, স্বাধীনতা থাকলে সুবিচারও নিশ্চিত করা সহজ। আর সুবিচার নিশ্চিত করতে পারে স্বাধীনতা, সুখ এমনকি ভালোবাসাও। কেউ যদি ন্যায়পরায়ণ না হয়, তখন সে তার ক্ষুধা ও আবেগকে প্রাধান্য দেয়। এর পরিপূর্তিতে কোনো বাধা মানতে রাজি হয় না। তখন এর বাধাকে তার প্রতিপক্ষ বা শত্রু মনে করে। সমস্যা হয় যখন ক্ষমতাবানেরা স্বাধীনতাকে কুক্ষিগত করে এবং ভাবে এটা কেবল তাদের প্রাপ্য। অন্য কেউ স্বাধীনতাকে ভোগ করতে চাইলে তা তাদের অধিকার তথা রাষ্ট্রের অধিকারকে ক্ষুণœ করা হচ্ছে বলে দাবি করে। তারা এটাও মনে করে, আইনে সবার অধিকার নিশ্চিত করার কথা থাকে; সেগুলো অগ্রহণযোগ্য। এ জন্য যখন এসব মানুষ ক্ষমতারোহণ করে, তখন তারা নানা আইন তৈরি করে শুধু নিজেদের গোষ্ঠীর জন্য। এখানে একটি ঘটনার উল্লেখ করা যায়। স্বাধীনতার পরপরই তৎকালীন আইনমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য এক সাংবাদিক যান। তিনি দেখতে পান, মন্ত্রী অনেক কাগজপত্র নিয়ে ব্যস্ত। তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী করছেন?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘পাকিস্তান কেটে বাংলাদেশ লিখছি।’
অর্থাৎ আইনগুলো পরীক্ষা করে দেখছেন কোথায় পাকিস্তান লেখা আছে। তিনি আরো বললেন, ‘দেখুন এ দেশের মূল আইনগুলো ব্রিটিশ আমলের। তারা অল্পসংখ্যক আইন দিয়ে এ বিশাল ভারত শাসন করত। আর প্রচলিত মুঘল আইনসহ অন্য সব আইন প্রয়োজনমতো সংশোধন করে এ দেশ শাসন করত। আসলে নতুন আইনের প্রয়োজন নেই।’ তখন সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন, ‘তাহলে আপনারা সংসদ সদস্যরা কী আইন নির্মাণ করবেন।’ মন্ত্রী হেসে বললেন, ‘কেন প্রতিপক্ষ ঠেকানোর জন্য ছোট ছোট আইন এবং জনগণকে বলব, দেখো আমরা কেমন করে সন্ত্রাসী ঠেকাচ্ছি আর সমাজে শান্তি রক্ষা করছি।’
পেছনের এবং বর্তমান সময়ের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয় সেই মন্ত্রী যেন জানতেন, এ ব্যবস্থা একটি চিরন্তন অবস্থা।
সম্প্রতি প্যারিসে দু’টি বিষয়ের উদযাপন হলো- একটি শতবর্ষের এবং অপরটি ৭০ বছরের। এখানে শতবর্ষের কথা নিয়েই আলোচনা করা যায়।
শতবর্ষের উদযাপন ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি দিন ধরে। প্যারিসের আর্ক দ্য ত্রিয়ম্ফ বিশাল স্কয়ারে বিশ্বের প্রায় ৪০ দেশের প্রধানেরা স্মরণ করলেন দিনটি। ১৯১৪ সালের একটি হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ইউরোপের দেশগুলো একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং নিহত হয় কয়েক কোটি সাধারণ মানুষসহ সৈন্যরা। ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সালে বেলা ১১টায় এই যুদ্ধরত ক্ষমতাবান এক চুক্তির মাধ্যমে এই চার বছরের হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটায়। ত্রিয়ম্ফে আরো কয়েকটি স্মরণ উদযাপিত হয়। একমাত্র অস্ট্রেলিয়ার ৬০ হাজার সৈন্য ওই যুদ্ধে নিহত হয়। ওই সঙ্ঘাতসহ সব যুদ্ধ এবং সংঘর্ষের মূল উদ্দেশ্য ক্ষমতা দখল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পত্তনও এই রক্তসমুদ্রের মধ্য দিয়ে। তাই সবাই তখন চেষ্টা করল যুদ্ধ না করে জনগণকে সাথে নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া। গ্রিসে নির্বাচনের প্রথম সফল পরীক্ষা হয় এবং ক্রমেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
সমস্যা হলো, এই নির্বাচন ক্ষমতা দখলের শান্তিপূর্ণ পথ বলে বিবেচিত হওয়ায় সারা বিশ্বে এর গ্রহণযোগ্যতা আসে। তখন ক্ষমতাবানেরা এই গ্রহণযোগ্যতাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠন করে দল এবং অন্যান্য সংস্থা। আর শুরু হয় নির্বাচন নিয়ে চলমান সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ।
একবার এক রাজনীতিবিদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘নির্বাচনকালে তোমরা কেন শক্তির আশ্রয় নাও। জনগণকে বোঝাও এবং তোমাদের নিজেদের পরিচয় দাও। তখন জনগণ ভাবনাচিন্তা করে তোমাদের নির্বাচিত করবে।’ তিনি জবাব দিয়েছিলেন, ‘যদি জনগণকে আমাদের নিয়ে চিন্তার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে তারা নির্বাচন করতেই আসবে না। তাই সেই সুযোগ আমরাই নিই।’
যেহেতু সুখ মানুষের প্রধান লক্ষ্য, তাই সব শ্রেণীর ক্ষমতাবানেরা তাদের কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তিতে এর উপস্থিতি থাকবেই। জনগণ ধরেই নেয় প্রার্থীদের কেউ না কেউ ভালো এবং তাদের নির্বাচনের জন্য এগিয়ে আসে। যে প্রার্থী জনগণের সুখের আকাক্সক্ষাকে যতখানি সুড়সুড়ি দিতে পারে, তার নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
মিথ্যার ওপর ভর করে যে সুখ আসে, তা পরিণতিতে টিকতে পারে না। অথচ তার প্রবক্তারা সুখের সায়রে থাকতে চায়। তখনই ব্যবহৃত হয় অনাকাক্সিক্ষত পন্থা।
একজন প্রশ্ন করেছিলেন, এ চারটি ব্যবস্থার কোনটি প্রধান। এর জবাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে আগেই। তবে এটা সত্য, এগুলো একে অন্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন সাধারণ নাগরিক বা সমাজ বা রাষ্ট্র এ বিষয়গুলো অবশ্য একইভাবে দেখবে না। যেমন কবি কিটস সত্যের মধ্যে সৌন্দর্য খুঁজে পেয়েছিলেন, তেমনটি একজন সাধারণ না-ও পেতে পারেন। একজন সাধারণ বলবে নাÑ ‘সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য’।
একজন সাধারণের কাছে এমনটি হবে সামনের দৃশ্যমান বস্তুটি ঘিরে। এখন যে প্রশ্নটি সবাইকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তা ৭৩ বছরের পুরনো। ৬ আগস্ট ১৯৪৫ সালে যখন প্রথম আণবিক বোমা বর্ষিত হলো এবং দু’টি শহর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল, তখনই প্রশ্নটি উঠেছিল। প্রশ্নটি হলো, ‘সংগঠিত জীবনব্যবস্থা কি বাঁচবে বা চালু থাকবে?’ এখন নোয়াম চমস্কির ভাষায় এটা অত্যন্ত তীব্রভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। কেননা মানবজীবন নিশ্চিহ্ন করার সব সহজ পদ্ধতি এখন সচল। এর সামান্য অপব্যবহারও মানবজীবন ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।
জিওলজিক্যাল সোসাইটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, ১৯৪৫ সালের পর থেকে বিশ্ব অলৌকিকভাবে বারবার মহাধ্বংস থেকে বেঁচে যাচ্ছে। কারণ, একটি বোতাম টেপার সাথে এই মহাধ্বংস জড়িত। কোনো উন্মাদ ক্ষমতাবান যদি এই বোতাম টেপার অধিকার পায়, তাহলে এমনটি ঘটবে। এর মধ্যে একজন সে স্থানে এসেছে বলে তারা দাবি করেছেন। এক দিকে যেমন এই মারণাস্ত্র বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে, তেমনি মানুষের কর্মকাণ্ডেও ধীরে ধীরে সেই প্রান্তিক অবস্থার দিকে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে।
উপগ্রহ থেকে আহরিত তথ্যে জানা যায়, যে হারে বিশ্বের আবহাওয়া উত্তপ্ত হচ্ছে, তা যদি সচল থাকে তাহলে উত্তাপ ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট এ শতাব্দীর শেষেই বেড়ে যাবে। তখন মানুষের জীবনধারণই কঠিন হয়ে পড়বে। এ দিকে ডব্লিউএমও (ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন) বলেছে, বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমা পড়েছে ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল আমল শুরু হওয়ার সময়ের চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি। এর ফলে বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ দ্রুত বাড়ছে। এতে করে উত্তর মেরুর বরফ গলে গিয়ে সূর্যের আলোর প্রতিবিম্বিত হওয়ার এলাকা কমে যাচ্ছে। ফলে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হচ্ছে। বিজ্ঞানী এবং ওয়াকিবহাল মহলের সতর্কতা সত্ত্বেও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দেশগুলো তাদের বায়ুমণ্ডল দূষণ ও উত্তপ্তকরণসহ সব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
যার ফলে মানব জীবনের চারটি চাওয়া এবং প্রয়োজন পূরণ ক্রমান্বয়ে কঠিন হয়ে পড়ছে এবং তার সাথে ধীরে ধীরে মানব জীবনের স্থিতিও। এখন পশ্চিমা জ্ঞানীরা বলছেন, ‘গতকালের এবং আগামীকালের ভাবনা পরে, এখন বর্তমানের ভাবনা আগে ভাবো।’ বক্তব্যটি একাংশে ঠিক। বর্তমানটা সর্বস্তরে অনাকাক্সিক্ষত হয়ে পড়ছে। ব্যক্তিগত জীবন থেকে সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ক্ষমতা ও লোভের নাটক চলছে, তার শেষ অঙ্ক যে হবে করুণ তার জন্য বিজ্ঞ অনুসন্ধান এবং আলোচনার প্রয়োজন নগণ্য। ভোগবাদিতাই জীবনের প্রধান অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা অনুভব করার জন্য এ যুগের তথ্যের প্রধান বাহন খবরের কাগজ অনুসরণই যথেষ্ট।
কেউ সত্য কথা বললে, নৈতিকতার প্রশ্ন ওঠালে তীব্রভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দৈহিকভাবেও। অথচ নৈতিকতা সব বিষয়ের ভিত্তি। এমনকি বিজ্ঞানের। সেই ভিত্তিকে অস্বীকার করে, কখনো নিশ্চিত জীবন আকাক্সক্ষা করা বাতুলতা। তাই সত্য যেমন সুন্দর, তাকে ধারণ করতে হবে। শুধু বর্তমান সুখের জন্য নয়, অনাগত কালকে শান্তিপূর্ণ রাখতে। সতর্ক হতে হবে সবাইকে এর ব্যত্যয়কারীরা যেন অপব্যবহারে মত্ত না থাকতে পারে। তাহলে জীবনের চার প্রয়োজন সহজেই আয়ত্তে থাকবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা