২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কারচুপি রোধে নিশ্চয়তা নেই!

কারচুপি রোধে নিশ্চয়তা নেই! - ছবি : নয়া দিগন্ত

‘বড় ধরনের পাবলিক ইলেকশনে অনিয়ম হবে না- এ রকম নিশ্চয়তা দেয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোথাও কোথাও অনিয়ম হয়েছে।’ গত ৮ আগস্ট দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে সিইসির এ মন্তব্যের উদ্ধৃতি দেয়া হলো। সিইসি তার এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল, তার অনুমোদন দিলেন। তা ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনেও তারা অনিয়ম ও কারচুপি ঠেকাতে সক্ষম হবেন না, তা-ও আগাম বলে দিলেন। সিইসি কেন এই ভবিষ্যদ্বাণী করলেন তা তিনিই জানেন। তবে সংবিধান অনুসারে তিনি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এ জন্য আমাদের সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট ক্ষমতাশালী করেছে। তাই তার অপারগতা প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ।

সে দেশে প্রায় প্রতি বছরই কোনো-না-কোনো প্রদেশের নির্বাচন হয়ে থাকে এবং পাঁচ বছর পর হয়ে থাকে সাধারণ নির্বাচন। সেই বিশাল জনসংখ্যার দেশের নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত কখনো এমন অপারগতা প্রকাশ করে না এবং নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বা কারচুপির কথা শোনা যায় না। আমাদের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার কোনো কমতি নেই। তার পরও কেন অনিয়মের ব্যাপারে সিইসির ‘আগাম আত্মসমর্থন?’ কী কারণে তিনি এই অপারগতা প্রকাশ করলেন, তা জাতিকে জানিয়ে দেয়া প্রয়োজন। এটা ঠিক যে, বাংলাদেশে নির্বাচনের ইতিহাস পরিষ্কার নয়; বরং কালিমাযুক্ত। এমন উদাহরণও রয়েছে, প্রহসনের ‘নির্বাচনে বিজয়ীরা ক্ষমতাসীন হয়েছেন। এমন ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনকে অনেকেই নির্বাচন ব্যতিরেকে বেসামরিক প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণ বলে অভিহিত করেছে। যারা নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপিতে জড়িত থাকেন, তারা সিইসির এই বক্তব্যকে তাদের অপকর্মের পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম করার এক ধরনের অনুমোদন হিসেবে মনে করতে পারেন।

যারা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ, সিইসির এ বক্তব্য তাদের হতাশ করেছে। সম্প্রতি তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম হতাশার সৃষ্টি করেছে। জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা ছিল, আগামী দিনের জন্য সবার মধ্যে একটি ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টির যারপরনাই চেষ্টা করা হবে। কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে এই সঙ্কট যদি অব্যাহত থাকে, তবে জাতি এর ধকল সইতে পারবে না। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ক্ষমতাসীন দলের গণতন্ত্র নিয়ে ভাবনা তত বেশি ‘রক্ষণশীল’ হয়ে উঠছে।

এটা জাতির জন্য ভাবনার বিষয়। আগামী নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক নবীন ভোটার অংশ নেবে। তারা ক্ষমতাসীনদের এ ধরনের আচরণে ক্ষুব্ধ। সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং ‘নিরাপদ সড়ক’ আন্দোলনকে সরকার যে কায়দায় মোকাবেলা করেছে, তা নবীন ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। এসব আন্দোলন থেকে আগামী দিনে ভোট দেয়ার বিষয়েও সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যাপারটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের মানুষ সর্বোতভাবে ছাত্রদের পাশে ছিল এসব আন্দোলনে। আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অভিভাবক শ্রেণীর ছিল পূর্ণসমর্থন। তাদের অনেককে রাজপথে সন্তানদের পাশে নেমে আসতে দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক সমাজও আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের প্রতি শক্তি প্রয়োগ করাকে ভালো দৃষ্টিতে দেখেনি। সাম্প্রতিক কালে সরকারের অনেক সিদ্ধান্ত ও আচরণ অপরিপক্ব মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটা তাদের প্রতি জনসমর্থনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
নির্বাচনে অনিয়ম হবে- সিইসির এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে খোদ তার ঘরে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের অপর চারজন কমিশনার সিইসির এহেন বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ ব্যক্তির এমন আত্মঘাতী কথা নির্বাচন কমিশনের ভাবমর্যাদাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ করেছে। নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্ব সংবিধান নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেটা হলো, প্রতিষ্ঠানটিকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। সিইসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বের যে মূল চেতনা, তার বিপরীত কথা বলেছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য কমিশনার বক্তব্য দিয়ে এ ক্ষেত্রে তাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করেছেন। যারা জনগণের ভোটের হেফাজত করার প্রত্যয় নিয়ে কমিশনে বসেছেন, তাদের এমন কথা তো গোটা জাতিকে হতাশ করার কথা। জনগণ আশা করে, তাদের মূল্যবান ভোট নির্বাচন কমিশন যথাস্থানে পৌঁছে দেবে। মতামতের ভিত্তিতে গঠিত সরকারই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। সিইসি হয়তো মনে করেছিলেন, কোনো কোনো মহল তার ওই বক্তব্যে খুশি হতে পারে।

কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, সরকারও এ বক্তব্যে বিব্রত বোধ করেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, দেশ-বিদেশের মানুষ আশা করে- বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের শুভযাত্রা শুরু হবে। সেই আশাবাদের মাথায় সিইসির উল্লিখিত বক্তব্য কুঠারাঘাত করার শামিল। সিইসি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় এই নীতির দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেন। বর্তমান সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিরোধী দলগুলো আগে থেকেই আস্থাহীনতায় ভুগছে। এখন এমন বক্তব্য তাদের আস্থাহীনতার মাত্রাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দেবে। এখন কমিশনের ওপর আস্থা হারানোর কারণে প্রায় সব বিরোধী দল নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। যদি নির্বাচন কমিশনের শীর্ষপর্যায় থেকে এমন বক্তব্য দেয়া অব্যাহত থাকে, আশঙ্কা দেখা দেবে, ২০১৪ সালের মতো একদলীয় নির্বাচন না আবার অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনকে কেউই গ্রহণযোগ্য মনে করেন না। সেই প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা সরকারের প্রতিও দেশ-বিদেশের মানুষের অনুমোদন থাকবে না।

দেশে নির্বাচন নিয়ে যে সঙ্কট তার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আইনানুগভাবে চলতে না পারা, তাদের কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে দৃঢ়তা প্রদর্শনে ব্যর্থতা, রাজনীতিকদের যেকোনো উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা কব্জা করা, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুব কঠিন। আমরা সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা করছি না বলেই যত সঙ্কট। দেশ এবং এর কল্যাণ চিন্তাকে প্রাধান্য দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় নেতৃত্ব সফল নন।

সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই এক দশক নির্বিঘেœ কাটিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে এই সরকারের মধ্যে এমন ধারণা হয়তো জন্মাতে পারে যে, আসন্ন নির্বাচনেও তারা ক্ষমতায় ফিরে আসবেন। আগামী দিনে কী হবে তা কেবল ভবিষ্যৎই বলতে পারে। কিন্তু দেশের এখন যে হালদশা তাতে অনুমান করা যায়, গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা কম। তাই দেশের মানুষের আস্থার স্থানটি নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। হতাশা ও ক্ষোভের মিশ্রণে যে প্রতিক্রিয়া তাতে আশঙ্কা হয়, না আমরা নৈরাজ্যের মধ্যে গিয়ে পড়ি, আর গণতন্ত্র না অকার্যকর হয়ে যায়। অতীতে দেশে গণতন্ত্র অকার্যকর হওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করা হয়েছে। আর সে খারাপ সময় এসেছিল রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতার কারণে। এমনকি এখনো তার জের টেনে চলতে হচ্ছে।

গণতন্ত্রকে যে মুখথুবড়ে ফেলা হয়েছিল, তা থেকে আজো গণতন্ত্র উঠে দাঁড়াতে পারেনি। সুযোগ নিয়ে দেশে অসাংবিধানিক শাসনের সূচনা হয়েছিল। তখন গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার বিপর্যয় শুরু হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংগঠিত হতে পারেনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের নতুন সরকার তাদের শাসনকাল অত্যন্ত চমৎকারভাবে শুরু করেছিল। স্বল্পসময়ের মধ্যে একটি সংবিধান রচনা করা হয়েছিল। নবীন রাষ্ট্রের সেই সংবিধান দেশে-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তখন সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করা হয়েছিল, মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা হয় এবং নিবর্তনমূলক কোনো বিধিবিধান সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়নি। একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে এ জনপদের মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এমন শুভযাত্রা স্থায়ী হয়নি। কয়েক বছরের মাথায়, ১৯৭৫ সালে এ যাত্রা থেমে যায়। এরপর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক অধ্যায়ের সূচনা হলো। সেই যে পা পিছলে দেশ গণতন্ত্রের পথ থেকে সটকে পড়ে, তারপর আর সেই ধারায় ফিরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। প্রধানত রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণে গণতন্ত্র অগ্রসর হতে পারেনি। সামগ্রিক অর্থে, গণতন্ত্র যে একটি ব্যাপক বোধের বিষয়, সে উপলব্ধি আমাদের মাঝে জাগ্রত হয়নি। সে কারণে বিগত প্রায় অর্ধশত বছরেও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে ওঠেনি এ দেশে। আর নির্বাচন নিয়ে রয়ে গেছে শত অভিযোগ।

ঢাকার শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী ‘মিম ও রাজীবকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাসচাপা দিয়েছি’ বলে জাবালে নূর পরিবহনের গ্রেফতারকৃত চালক মাসুম বিল্লাহ আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। এ ঘটনা এর ন্যায়বিচার চাইতে রাজপথে নেমেছিল শিক্ষার্থীরা। যেন তাদের এই ন্যায়বিচার চাওয়াটা ‘অন্যায়’ হয়ে গেছে। আর সে কারণে শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলরদের সাথে বৈঠককালে বলেন, পুলিশের হাতে আটক ছাত্রদের ক্ষমা করা হবে না।’ ভাইস চ্যান্সেলররা পুলিশের হেফাজতে থাকা ছাত্রদের মাফ করে দিয়ে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন। ন্যায়বিচার প্রার্থীদের স্থান যদি কারাগার হয়, তবে বিচারের বাণী নিশ্চয়ই আঁখি জল ফেলবে। যে সমাজে বিচারপ্রার্থীদের আবেদন অগ্রাহ্য হয়, সে সমাজ ভেঙে পড়ে। এসব কারণে বাংলাদেশ অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ভরে উঠেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের যে তালিকা তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা, এতে বাংলাদেশের নাম একেবারে ওপরের দিকে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত হওয়ার পরও এ নিয়ে সরকারি মহলে উদ্বেগ ও প্রতিকার নেই। বলা নি®প্রয়োজন এসব দুর্নীতির পেছনে অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। এ কারণে দুর্নীতি প্রতিরোধে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর কাজে হস্তক্ষেপের কথা শোনা যায়।

সড়কে নিরাপত্তা চাওয়ায় ছাত্রদের ওপর সরকার নাখোশ। তাদের শাস্তির বিধান দেয়ায় দোষীরা আশকারা পেয়েছে। তারা এখন এত বেপরোয়া যে, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়িকে আঘাত করেছে। তা ছাড়া সড়কপথে নিরাপত্তা সামান্যও বাড়েনি। এখনো প্রতিদিন দুর্ঘটনায় রাজপথে প্রাণ ঝরছে। এমন খবর হররোজ মিডিয়ায় প্রকাশ পাচ্ছে। রাজপথে শৃঙ্খলা বিধানের জন্য সম্প্রতি যে বিধি তৈরি করা হয়েছে, সেটা পূর্ণাঙ্গ নয় বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। রাজধানীতে এখন যে মারাত্মক যানজট, তারও শৃঙ্খলা বিধানে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে আগামী দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ভয়াবহপর্যায়ে পৌঁছবে। সড়কের নিরাপত্তা বিধান করার যে বিধিবিধান তা যদি শক্তিশালী না হয়, তবে এমন বিধান দিয়ে সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।

মোদ্দাকথা হলো, দেশে এখন অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা চলছে। এর একমাত্র কারণ, সুশাসনের অভাব। আমরা কেউই আইন মানছি না। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও অনুশীলন সম্ভব হবে। আর তাতে দেশের বহু সঙ্কট কেটে যাবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়া মানেই সর্বত্র শৃঙ্খলা কায়েম হওয়া। আর তাদের পক্ষেই সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব যারা নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান এবং যাদের ক্ষমতার উৎস জনভিত্তি। সে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার ম্যান্ডেট পেয়ে থাকে। কিন্তু এই আদর্শ অবস্থানে আমরা নেই। এই মারাত্মক গলদ দূর করতে পারলেই জাতির মুক্তি আসবে। এটা দূর করার জন্য সমাজের সব স্তর থেকেই অবদান রাখতে হবে। এমন শুদ্ধাচারের নীতিকে আমাদের জাতীয় নেতাদের ‘ফেরি’ করতে হবে। এটা সাধারণ নীতি যা সবার উপলব্ধিতে নিয়ে আসতে হবে।
ndigantababor@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement

সকল