২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নির্বাচন সবার জন্য সহজ হওয়া উচিত

নির্বাচন সবার জন্য সহজ হওয়া উচিত - ছবি : নয়া দিগন্ত

নির্বাচনে আর বিলম্ব নেই, মাত্র কয়েক মাস পর দেশে বহু কাঙ্ক্ষিত সাধারণ নির্বাচন। সে নির্বাচনের তফসিল অক্টোবর মাসে ঘোষণা করা হবে বলে জানান দেয়া হয়েছে। অবাধ নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এর সব পাত্র-মিত্রকে এই ইস্যুতে এখন এর অনুকূলে অবস্থান ঠিক করে নিতে হবে। আগামী নির্বাচন কেমন হবে এ নিয়ে এখনো গোটা দেশের মানুষ একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। মাত্র কিছু দিন আগে দু’টি সিটি করপোরেশনের ভোট হয়েছে। কিন্তু হতাশ হওয়ার বিষয় হচ্ছে, অনুষ্ঠিত দু’টি নির্বাচনের একটিও প্রশ্নমুক্ত হয়নি। আর তাই বাংলাদেশে ভোটব্যবস্থা নিয়ে দেশে এবং বিদেশে অতীতের মতোই হতাশা ও উৎকণ্ঠা আরো বেড়েছে। এখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণকারী ভোটকে অর্থবহ করার জন্য সবার প্রয়োজনীয় অবস্থান ঠিক করে নেয়া উচিত। একটি স্বচ্ছ অংশগ্রহণমূলক এবং নির্বাচনে জনগণের অবাধ অংশগ্রহণের মাধ্যমে যারাই ক্ষমতায় যাওয়ার রায় পাবেন, তারা ক্ষমতায় আসবেন। এ প্রশ্নে কারো দ্বিমত নেই। নির্বাচনে গণতন্ত্র বিজয়ী হোক, রায় যারাই পান।

তখন তাদের পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা সহজ হবে আর গণতন্ত্রের হাত ধরে উন্নয়নও আসবে। এখন উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে বটে; কিন্তু গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন হতে পারে না। গণতন্ত্র মানেই জবাবদিহিতা, সমাজে যদি জবাবদিহিতা না থাকে তবে সমাজে অনিয়ম দুর্নীতি থাকবেই। আর অনিয়ম দুর্নীতি উন্নয়নের পথে বড় অন্তরায়। ১৬ কোটির ওপর মানুষের বসবাস এই বাংলাদেশে, তাই এখানে উন্নয়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গণতন্ত্রের অনুপস্থিতিতে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা আরো কঠিন। আর উন্নয়ন থমকে থাকলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের যে বাস্তব পরিস্থিতি তাতে উন্নয়নের প্রতিকূলে পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশের এখন জনসংখ্যা যেমন অপ্রতিহত গতিতে বাড়ছে এর সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে বেকার জনশক্তি। এই বিপুলসংখ্যক বেকার মানুষের হাতে যদি কাজ তুলে দেয়া না যায়, তবে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। আর যদি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় না থাকে তবে অক্টোপাসের মতো বহু হাতে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে চেপে ধরবে।

এ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সবসময় থেকেছে বিতর্কিত। তাদের এমন ভূমিকার তথা সুষ্ঠুভাবে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দিয়েছে অবাধ নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন করানোর ক্ষেত্রে, তারা সে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে না পারায় এর বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিধান সন্নিবেশিত করা হয়েছিল। আর সে সময়গুলোতে দেশে প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশ্য এখন সে ব্যবস্থা আর নেই বলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাটা নির্বাচনের প্রশ্নে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে এখন নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া ত্রুটি থাকার কারণেই শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এখন যে প্রক্রিয়ায় কমিশন গঠিত হয় যে পদ্ধতিতে ক্ষমতাসীন সরকারই কমিশনের সব সদস্যকে বাছাই করে থাকে। এর ফলে কমিশনের ওপর সরকারের হাত থাকে ভিন্নভাবেও। এখন নির্বাচন কমিশনের যারা সচিব তারা সরকারের আমলা এবং সরকারই তাদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। ফলে তাদের আনুগত্য সরকারের প্রতি থেকেই যায়।

নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নে কমিশনারদের বহু ক্ষেত্রে অনেক বক্তব্যের সাথে কমিশন সচিবের কথার সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায় না। যেমন ইভিএম প্রশ্নে কমিশনারদের কথার সাথে মিল নেই। সচিব বলেছেন, আগামী নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হতে পারে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। নির্বাচনসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এখন নির্বাচনের যে সময়টুকু বাকি রয়েছে তার মধ্যে কয়েক লাখ ইভিএম মেশিন সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হবে। প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রে একাধিক ইভিএম মেশিন বসবে। কিন্তু এ সময় কোনো কেন্দ্রে মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সারাবে কে? আগামী নির্বাচনের আগে নির্বাচনসংক্রান্ত যত সমস্যার কথা বলা হলো, সে প্রশ্নগুলোর নিষ্পত্তি হবে তা বলা আসলেই মুশকিল। আসলে একটি প্রশ্নে সবাইকে একমত হতে হবে যে, নির্বাচন প্রশ্নমুক্ত করা হবে তাহলেই কোনো সমস্যা আর থাকে না।

এর আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হয় না। এটা নিছক কোনো অভিযোগ নয়, বাংলাদেশে নির্বাচনের ইতিহাসের দিকে তাকালে এটা স্পষ্ট হয়। এবারো বিএনপিসহ অন্যান্য দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। পক্ষান্তরে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। কিন্তু কথা হচ্ছে, সংসদে তো বিরোধী দলের কোনো সদস্যই নেই সবাই সরকারের মিত্র। ফলে বিরোধী দলের নির্বাচনকালীন সরকারের যে ধারণা পোষণ করে, তার সাথে সরকারের নির্বাচনকালীন সরকারের চরিত্রের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। সরকার ও বিরোধী দল তাদের ধারণা নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অটল রয়েছে। এই অবস্থার পরিবর্তন না ঘটলে, আগামী নির্বাচন স্বরূপ কি হবে তা নিয়ে ভাবলে হতাশ হতে হয়। এদিকে দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন মহল আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হয় সেই আশা করছে। এই আশা ও হতাশার সমন্বয়টা কিভাবে হবে তা কারো জানা নেই।

সম্প্রতি সরকারি দলের হাইকমান্ড থেকে বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে। শুধু এই নির্বাচনই নয়, সব নির্বাচনই কঠিন হয়ে থাকে। তবে ক্ষমতাসীনদের জন্য তখনই নির্বাচন বেশি কঠিন হয় যখন তাদের শেষ হওয়া মেয়াদে তারা জনগণের তুষ্ট হওয়ার মতো কিছু না করতে পারলে মানুষ অবশ্যই মুখ ফিরিয়ে নিয়ে থাকে। প্রায় দশ বছর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এ সময়ে তাদের অনেক অসফলতা বিষয় রয়েছে, যা নিয়ে দেশে মানুষ ত্যক্ত বিরক্ত। গত দশ বছরে সরকারের হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ হয়নি। তারা দশ বছর আগে যে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, তাতে জনগণের পক্ষে ভোট দেয়া সম্ভব হয়নি। এতে মানুষ হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। শুধু সেই নির্বাচনই নয়, অন্যান্য স্থানীয় সরকার পর্যায়ে যে নির্বাচন বিভিন্ন সময় হয়েছে সেগুলো নিয়ে মানুষের মনে বহু প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের সময় যখন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে বহাল ছিল। যা কিনা অনেক আন্দোলনের ফলে সংবিধানে সংযুক্ত হয়েছিল। তা বর্তমান সরকারের আমলেই বিলুপ্ত হয়েছে। যা জনগণকে হতাশ করেছে। প্রতিটি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যা খর্ব হয়েছে তা নিয়ে জনগণ ক্ষুব্ধ। মানবাধিকার নানাভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। বর্তমান সময়ে মানুষ জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে এখন সবাই উদ্বিগ্ন। দেশে সম্প্রতি নারী সমাজের ওপর নির্যাতন বেড়েছে। যুব সমাজের প্রতি সরকারের দায়হীনতা তাদের হতাশ করেছে। দেশকে একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের জনপদে গড়ে তুলতে ক্ষমতাসীনদের ব্যর্থতায় এখানে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষের আয় রোজগার বাড়েনি কিন্তু জীবন ধারণের যেসব পণ্যসামগ্রীর প্রয়োজন তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় ক্ষমতায় আসার জন্য মানুষের কাছে ভোট চাওয়া আসলেই সরকারের জন্য খুব কঠিন। আগামী নির্বাচনে এসব কারণে জনগণ তাদের আস্থা কাদের ওপর অর্পণ করে তা বলা কঠিন।

আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যাগুলোর খানিকটা বলা হয়েছে। নির্বাচনে বিএনপি একটি অন্যতম দল কিন্তু নির্বাচনে যাওয়া তাদের জন্যও সহজ নয়। নির্বাচনের যে সুষ্ঠু পরিবেশের কথা বিএনপি বলছে, সরকার কিন্তু তা করার ক্ষেত্রে উৎসাহী নয়। এটা বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা। আর সম্ভবত বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য সরকারও তেমন উৎসাহী নয় বলে পরিস্থিতি দৃষ্টিতে মনে হয়। ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পথে যে অন্তরায়গুলো রয়েছে সে সম্পর্কে তারা পূর্ণ ওয়াকিবহাল। তাই নির্বাচনে বিএনপির মতো একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী থাকুক তা তারা কামনা করে না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। গত প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে অন্যান্য দলের অংশ নেয়া ব্যতিরেকে এবং জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া ভোট করে তারা দিব্যি ক্ষমতা চর্চা করছে। তাদের এই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীনেরা তাই খানিকটা বেপরোয়া এবং আস্থাশীল। বর্তমানে যে পরিস্থিতি দেশে বিরাজ করছে তাতে সর্বত্র এ কথা চাউর করা হচ্ছে যে, এ বছরের শেষে জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে। কিন্তু সেটা অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে হবে কি না। যা সব শ্রেণীর মানুষ কামনা করে, সেটা নিয়ে ক্ষমতাসীনদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া বর্তমান মুহূর্তে খুবই জরুরি।

বস্তুত নির্বাচন সবার জন্যই সহজ হওয়া উচিত। তা না হলে এর পরিণাম ভালো হয় না। নির্বাচন যদি সবার জন্য সত্যিই কঠিন হয়ে পড়ে, তাকে গণতন্ত্রের মারাত্মক সঙ্কট বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। গত দু’টি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আসলে সহজ ছিল না। অন্ততপক্ষে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দল এবং সাধারণ ভোটারদের জন্য নির্বাচনে ভোট পাওয়া এবং ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে বাস্তব চিত্রে যা দেখা গেছে তা তো সহজ ছিল না। এই পরিপ্রেক্ষিতে যদি আগামী জাতীয় নির্বাচন কঠিন হয় তবে এর পরিণাম ভালো হওয়ার কথা নয়। এখন যারা আগামী নির্বাচনের ‘ফ্যাক্টর’ তাদের বিষয়টা উপলব্ধি করতে হবে। নির্বাচন সহজ করার ব্যাপারে সম্মিলিতভাবে অবদান রাখতে হবে। নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী নির্বাচনগুলোতে ক্ষমতাসীনেরা বিজয়ী হতে চায়। রাজনীতির লক্ষ্যই মূলত ক্ষমতা। এই লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করা। কোনো দলের বিজয়ী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করা কোনো অন্যায় নয়। কিন্তু বিজয়ী হওয়া প্রক্রিয়া হতে হবে একান্তই গণতান্ত্রিক তথা জনগণের সমর্থন নিয়ে আসতে হবে ক্ষমতায়। এজন্য তাদের অতীত কার্যক্রমের ভালো রেকর্ড থাকতে হবে। জনগণ বিচার করবে ক্ষমতাসীনেরা দেশের অগ্রগতি কতটা করতে পেরেছে, জনগণকে কতটা শান্তি স্বস্তি ও নিরাপত্তা দিতে পেরেছে। এই বিষয়গুলো সামনে রেখেই জনগণ কাকে ক্ষমতায় পাঠাবে তা নির্ধারণ হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই বিশ্লেষণে জনগণের মত দেয়ার পদ্ধতি এখন নেই। আমরা জানি না, ক্ষমতাসীনেরা কোন প্রক্রিয়ায় তাদের বিজয় চান।

আগামী নির্বাচন অর্থহীন হলে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে। আর তাতে বেশি লাভ হবে অন্ধকারে বসবাসকারী সমাজবিরোধী শক্তিগুলোর। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে যে অরাজকতা দেশে সৃষ্টি হবে, জনগণ তাতে হতাশ হয়ে পড়বে। আর সে সুযোগে অন্ধকারে লুক্কায়িত অপশক্তি তাদের ধ্বংসাত্মক ভূমিকা নিয়ে আবির্ভূত হতে পারে। এটাই বিভিন্ন দেশে ঘটেছে আর তাতে হাজার হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে। এটা শুধু আশঙ্কার ব্যাপার নয় এটা দেশের অভিজ্ঞতা। কিছুকাল আগে উগ্রপন্থীদের আবির্ভাব ঘটেছিল। জাতি এদের বিরুদ্ধে অটুট ঐক্য গড়েছিল এবং আমাদের বিভিন্ন বাহিনী অসীম সাহসিকতায় এই অপশক্তির বিষদাঁত ভেঙে দিয়েছে। দেশের মানুষ এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে এখনো ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু জাতীয় রাজনীতিকেরা যদি প্রজ্ঞা প্রদর্শন না করে এই ঐক্য ভেঙে দেন, তবে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। আগামীতে নির্বাচনজনিত কারণে যদি দেশের পরিস্থিতি গোলমেলে হয়ে পড়ে তবে শুধু উগ্রবাদ নয়, সমাজে আরো অনেক অপশক্তি রয়েছে যারা অরাজক পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করে। এরা দেশে মজুদদারি করে পণ্যসামগ্রীকে দুষ্প্রাপ্য করে ফেলবে। তাতে সব শ্রেণীর মানুষ হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। দেশের মানুষ এখনো এই আশা করে যে, আমাদের জাতীয় নেতৃত্ব এসব বিষয় নিয়ে ভেবে থাকেন। তারা এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি করবেন না যা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।
ndigantababor@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement