দেশের সংসদীয় ব্যবস্থার হাল
- সালাহউদ্দিন বাবর
- ২৭ মে ২০১৮, ১৮:৩৪
একটি প্রতিনিধিত্বমূলক কার্যকর সংসদ গঠিত হওয়ার পূর্বশর্ত, সে সংসদকে অবশ্যই গঠিত হতে হবে অবাধ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে। প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন ছাড়া গঠিত, সংসদ কখনোই কার্যকর বা ফলপ্রসূ হতে পারে না। অতীত এ কথাই বলে। আর সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এক প্রকার রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থা, যাতে সর্বময় ক্ষমতা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদের ওপর ন্যস্ত থাকে। এই ব্যবস্থায় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির অবস্থান একান্তই আলঙ্কারিক। যুক্তরাজ্য, ভারত, বাংলাদেশসহ বহু দেশেই সংসদীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। এই ব্যবস্থায় সংসদের কার্যক্রম, দলীয়ব্যবস্থার প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য, কার্যকারিতা, শাসনপ্রক্রিয়া, আমলাতন্ত্র, সিভিল সমাজ ও সংশ্লিষ্ট কাঠামোর ভূমিকা, মানব নিরাপত্তা, স্থানীয় শাসন, উন্নয়নকার্যক্রমের প্রকৃতি প্রভৃতি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এটা অবশ্য তাত্ত্বিক অবস্থান। কিন্তু বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত এ অবস্থানে নেই। ১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশ সংসদীয় ব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত হলেও এই শাসনব্যবস্থায় প্রকৃত ধারায় দেশ পরিচালিত হচ্ছে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় ৫০ বছর হতে চলল। কোনো জাতির জন্য অর্ধশতাব্দী খুব কম সময় নয়। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গঠন এবং সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা নির্ধারিত হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কিছুই হয়নি। বিশেষ করে দেশের শাসনপদ্ধতি যে সুষ্ঠু রূপ নেয়ার কথা ছিল; তা আজো হয়নি। স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানে শাসনব্যবস্থা হিসেবে সংসদীয় ব্যবস্থাকে সন্নিবেশিত করা হয়।
বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা হিসেবে সংসদীয় ব্যবস্থা অন্যান্য ব্যবস্থা থেকে উত্তম এবং অধিকতর গণতান্ত্রিক। ১৯৭৩ সালে নতুন সংবিধানের অধীনে প্রথম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সে নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রশ্নমুক্ত ছিল না। অবশ্য সে শাসনব্যবস্থা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। প্রথম সংসদ বলতে গেলে একদলীয় সংসদ ছিল। তার পরও সে সংসদ টেকেনি। ১৯৭৫ সালের প্রথমেই বহুদলীয় ও সংসদীয় ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়। প্রতিষ্ঠা করা হলো রাষ্ট্রপতির একদলীয় শাসনব্যবস্থা। সে সময় এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের মুখে ছিপি আটকে দেয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে দেশে দুঃখজনক ও রক্তক্ষয়ী পটপরিবর্তন ঘটে এবং তৎকালীন সরকারের পতন হয়। নতুন সরকারের অভিযাত্রা শুরু হলেও সংসদীয় ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হয়নি। চলতে থাকে রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসনব্যবস্থা। এর ১৬ বছর পর ১৯৯১ সালে দেশে নতুন করে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা কায়েম হয়। সেই থেকে আজো সংসদীয় ব্যবস্থা চলতে থাকলেও সত্যিকার অর্থে সে শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি।
এখন দশম জাতীয় সংসদ বহাল রয়েছে। সংসদীয় ব্যবস্থার মূল চেতনা হচ্ছে বহুদলীয় ব্যবস্থা, তার সাথে এই সংসদ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই দশম সংসদ একদলীয়। তদুপরি, এই সংসদ সুষ্ঠুভাবে চলছে না। এ নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদন পার্লামেন্ট ওয়াচে তুলে ধরা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে উপস্থিত না হওয়ায় কোরাম সঙ্কটে অতীতের চেয়ে হেরফের হচ্ছে না। গত বছর বর্তমান সংসদে গড়ে প্রতিদিন কোরাম সঙ্কটে অপচয় হয়েছে ৩০ মিনিট, যা নবম সংসদে ছিল ৩২ মিনিট। এই গরহাজিরার কারণে গত চার বছরে অপচয় হয়েছে ১২৫ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৫ টাকা।
গরহাজির থাকার যে হিসাব পাওয়া গেছে তাতে বিপুল আর্থিক ক্ষতির একটি হিসাব পাওয়ার পাশাপাশি এটা স্পষ্ট যে, সংসদের সদস্যরা সংসদের গুরুত্ব উপলব্ধি করা এবং তাতে যথাসময়ে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ বোধ করেন না। যে দায়িত্ব নিয়ে তারা সংসদে বসেছেন তা উপলব্ধি করেন না। আসলে এই সংসদের সদস্যদের বেশির ভাগই নির্বাচিত গণপ্রতিনিধি নন, তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘নির্বাচিত’ হয়ে সংসদে এসে বসেছেন। তাই জনগণের কষ্টের টাকায় পরিচালিত এই সংসদে তাদের মমতা ও দায় তারা বোধ করেন না। আর যেহেতু এই সংসদ একদলীয় এবং কার্যত বিরোধী দলবিহীন তাই তাদের দেরিতে সংসদ অধিবেশনে আসার বিষয়টি নিয়ে আর তেমন আলোচনা হচ্ছে না। সংসদ হচ্ছে আইন রচয়িতাদের সভা। এই সভার মুখ্য দায়িত্ব দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য প্রয়োজনীয় বিধানাবলি প্রণয়ন ও পাস করা। কিন্তু টিআইবির গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান সংসদ বা আইনসভা আইন প্রণয়নের কাজে অত্যন্ত স্বল্প সময় ব্যয় করেছে। অথচ অনির্ধারিত আলোচনায় ব্যয় করেছে অনেক বেশি সময়। সরকারের প্রশংসাসূচক আলোচনা হয়েছে মোট সময়ের দশমাংশ। দেশের বর্তমান সমস্যাগুলোর মধ্যে দুর্নীতি ও অনিয়ম সর্বাধিক প্রকট। কিন্তু সংসদে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সবচেয়ে কম সময়, যা মোট সময়ের মাত্র চার শতাংশ। সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু থাকা দেশে আইন সভার এহেন চিত্র দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ তার মূল দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কতটা পিছিয়ে রয়েছে তা প্রমাণিত হয় এর থেকে। বিরোধী দলহীন সংসদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে সদস্যরা সংসদে অনুপস্থিত, তথা রাজপথের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের অর্থহীন সমালোচনা করে ব্যয় করেছেন মোট সময়ের ২৬ শতাংশ। সংসদের কার্যপ্রণালী বিধিতে সরকারের জবাবদিহি করার বহু পথ রয়েছে। বিধিতে মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তরসহ বিভিন্ন আলোচনা ও জিজ্ঞাসাবাদের পদ্ধতি বিধৃত রয়েছে। সে অনুসারে যদি সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন তবে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় অনেক বিষয় জানা যাবে এবং সরকার কিভাবে দেশ চালাচ্ছে, কোথায় তাদের দুর্বলতা রয়েছে, সেটা অবহিত হওয়ার সুযোগ হবে। কিন্তু এখন সংসদে প্রকৃত বিরোধী দলের কোনো সদস্য নেই বলে এই বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হচ্ছে না। সংসদীয় ব্যবস্থায় বিরোধী দলহীন সংসদ কল্পনাও করা যায় না। সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে সংসদের বিরোধী দলের বিশেষ মর্যাদা এবং ভূমিকার গুরুত্ব রয়েছে। কোনো কোনো দেশে বিরোধী দলের ছায়া মন্ত্রিসভা রয়েছে। ছায়ামন্ত্রী সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন এবং তাদের কাজের জবাবদিহি করেন। সংসদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে যেমন নির্বাচিত সদস্যদের গুরুত্ব সর্বাধিক, তেমনি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সর্বাধিক। আর জাতীয় সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে সেজন্য সর্বোচ্চ মাত্রায় কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা দিয়েছে। অথচ এই দায়িত্ব ও ক্ষমতা পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জাতির প্রত্যাশা অনুসারে ভূমিকা রাখতে সমর্থ হননি। সম্প্রতি, খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে কমিশন যে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছে, তা দেশের মানুষকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে এবং আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ ও অন্যান্য নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা মোটেও জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে না।
সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সরকারের ভূমিকা ও সদিচ্ছা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট ক্ষমতা দিয়েছে বটে; কিন্তু নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিশনকে সরকারি জনবলের ওপর নির্ভর করতে হয়। যেহেতু নির্বাচনের সময় আগে থেকেই ক্ষমতাসীন দল সরকারে থাকে, তাই তারা নির্বাচন পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। এতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পান না। সরকারি প্রভাবের কাছে তাদের নতি স্বীকার করতে হয়। আর সে কারণেই সরকারের প্রতিপক্ষ অনেক দল, নির্বাচনের সময় দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে। অতীত বলে, এমন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যতবার নির্বাচন হয়েছে, সে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। এই উদাহরণের পরিপ্রেক্ষিতে তারা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল এ ব্যাপারে না-সূচক অভিমত দিয়ে আসছে।
সব দেশেই শাসনব্যবস্থা হিসেবে সে ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয় যার উদ্দেশ্য হলো জনগণের অধিকতর কল্যাণ সাধন। একটি জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের লক্ষ্য হবে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা আর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এর ফলে অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর হয়। সব শ্রেণীর মানুষ তাতে সুফল পায়। আধুনিক সব শাসনব্যবস্থার উদ্দেশ্য এটাই। সংসদীয় ব্যবস্থায় এই নীতিগুলো সন্নিবেশিত থাকলেও তা এখন কার্যকর নেই। সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বহুদলীয় ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে শাসন পদ্ধতিতে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থায় ত্রুটি থাকায় সরকারের প্রকৃত প্রতিপক্ষ দলটি গত সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ফলে একদলীয় সংসদ এখন বহাল রয়েছে। আর একদলীয় সংসদ থাকায় প্রশাসনে কোনো জবাবদিহিতা নেই। অথচ জবাবদিহিবিহীন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না। আইনের শাসন না থাকায় সমাজে অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অহরহ চলছে অর্থ লোপাট। সুশাসনের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন ও নিরাপত্তা। এখন এসব বিষয়েই রয়েছে মারাত্মক ঘাটতি। সরকার বলছে, দেশের মানুষের আর্থিক উন্নতি হয়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কথাটা অর্ধসত্য। আয় হয়তো কিছু বেড়েছে; কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে, দ্রব্যমূল্য সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আয় যতটুকু বেড়েছে ব্যয় তার চেয়ে বেড়েছে অনেক বেশি। ফলে নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আসেনি। তবে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের ঘিরেই অর্থবিত্ত চক্রাকারে ঘুরছে। স্বাচ্ছন্দ্য শুধু নয়, বিলাসিতা সেখানেই বিরাজ করছে। দেশে প্রভাবশালী ও শক্তির অধিকারী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের হাতেই দেশের আইনকানুন ও অর্থবিত্ত।
বাংলাদেশের সংবিধানে ২৩টি মৌলিক অধিকার সংরক্ষণমূলক অনুচ্ছেদ রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে সংবিধান মানবাধিকারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু এখন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, কারা নির্যাতন এবং নারীর ওপর যৌন নির্যাতনের মাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার নেই। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ এবং জাতিসঙ্ঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানবাধিকারের অংশ। দেশে দৃশ্যত মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো অন্তরায় লক্ষ করা যায় না বটে; কিন্তু নীরব বাধা রয়েছে। সংবাদপত্রের ওপর রয়েছে ভিন্ন মাত্রার চাপ। সংবাদকর্মীদের ভীতির মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী স্বাধীনতার কথা অত্যন্ত সোচ্চারভাবে বলা হয়ে থাকে। একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে সম্প্রতি প্রকাশ করা হলো, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নারীরা পারিবারিক সহিংসতার দিক থেকে (শারীরিক বা যৌন নির্যাতন) শিকার হচ্ছেন বেশি। পত্রিকাটি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের আলোকে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার ১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নারীরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়, ক্ষমতাশালী ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সদস্যদের এর সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে।
যে সমস্যাগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা দূর করতে হলে একটি সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। যেহেতু দেশে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম রয়েছে, এটাকে তার আদর্শিক অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে। আর তা হতে পারে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী সংসদ গঠনের মধ্য দিয়ে। যে সুষ্ঠু নির্বাচনের এত প্রয়োজন, বাংলাদেশে বর্তমান বাস্তবতায় তা সহজ নয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো অবশ্যই গণতান্ত্রিক চেতনা ও শিষ্টাচার অনুসারে চলতে হবে। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের আচরণে এটা পরিষ্কার হতে হবে যে, তারা বিজয়ী হতে চান জনগণের সমর্থনে। জনগণ যাতে কোনো চাপ কিংবা পেশিশক্তির কারণে ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত না হয়। আর নির্বাচন যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবে তাদের অবশ্যই সাংবিধানিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশন যদি আগামী নির্বাচনে আদর্শিক অবস্থানে গিয়ে ভূমিকা পালন করতে না পারে, তবে দেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। জাতি সেজন্য তাদের ক্ষমা করবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা