০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬
`

৫ আগস্টে মোদিও কি পরাজিত?

-

বাংলাদেশে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সাথে সাথে ভারতের মোদি সরকার ভীষণভাবে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে পড়েছে! তাদের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি রাগে, দুঃখে, অভিমানে মুষড়ে পড়েছেন। তার এই ক্ষোভের কারণে ভারত সরকারকে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সত্যিকারার্থে ভারতের আচার-আচরণে মনে হচ্ছে- বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতনের সাথে সাথে এদেশে ভারতেরও পরাজয় ঘটেছে!

বাংলাদেশের পতিত সরকারের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থানের পটভূমিতে জীবন রক্ষার জন্য পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ভারত তাকে সাদরে গ্রহণ করে অঘোষিতভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। অভ্যুত্থানের পরপরই ব্যাপক বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার চালাতে থাকে। ভারত তাদের ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, গণমাধ্যম এমনকি রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে বিস্তর মিথ্যাচার চালাতে থাকে। অতীতের ফুটেজ, বানানো কাল্পনিক ছবি ইত্যাদি ব্যবহার করে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ন্যারেটিভ প্রচার করতে থাকে। গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ কয়েক দিন সরকারবিহীন থাকায় কিছু অরাজকতা হয়েছে; জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আওয়ামী নেতাকর্মী ও সুবিধাভোগীদের ওপর হামলা হয়েছে। তখন আওয়ামী ঘরানার কিছু হিন্দু সদস্যরাও আক্রান্ত হয়েছিল। এটিকে ভারত মূলধন করার চেষ্টা করেছে। যদিও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং সংস্থা ভারতীয় অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণিত করেছে। অথচ সারা দেশে মুসলমানরা হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘর পাহারা দেয়াকে ভারত দেখতে পায়নি।

অভ্যুত্থানটি সংঘটিত হয়েছিল ‘লেইট মুনসুন’ বা বর্ষার শেষ দিকে। সেই সময়টায় এই অঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যায় আশঙ্কা দেখা দেয়। তখন ভরত বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা না দিয়েই তাদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে দেয়। ফলে আমাদের ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় এক রাতের মধ্যে বন্যার পানিতে সব ভেসে যায়। আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগ হয়। ভারত আন্তর্জাতিক শিষ্টাচার এবং প্রতিবেশীসুলভ সহমর্মিতা পায়ে দলে আমাদের অজ্ঞাতে বাঁধ কেটে দিয়েছিল।

এরপর দেশের হিন্দুদের রাজপথে নামানো হয়। পর্যবেক্ষকদের মতে ভারতের ক্রীড়নক হিসেবে হিন্দুদের ব্যানারে পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্যাতনের প্রতিবাদে মাঠে নামে। অভ্যুত্থানের পর হিন্দু-মুসলমান সব ধর্মের মানুষ আওয়ামী লীগ হিসেবে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের শিকার হলেও শুধু হিন্দুদের নির্যাতনের বিচার চাওয়া হয়। তবে আশ্চার্যের বিষয় হলো- গত ১৬ বছরে সংখ্যালঘুরা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা অপরিসীম নির্যাতনের শিকার হলেও বর্তমানের মুখচেনা হিন্দু নেতাদের এসব দাবি নিয়ে মাঠে নামাতে দেখা যায়নি! কাজেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদ-নির্ভর মোদি সরকার সুস্পষ্টভাবে ‘সংখ্যালঘু কার্ড’ চেলে আমাদের দেশকে চাপে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে মোদি ভারতের পার্লামেন্টে এক বক্তৃতায় বলেছেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষার জন্য ভারতের ১০০ কোটি হিন্দু উদগ্রীব হয়ে আছে! অথচ ভারতে প্রতিনিয়তই মসজিদ ভাঙা, মসজিদের নিচে মূর্তি খুঁজে পাওয়া, মাদরাসা বন্ধ করে দেয়া, হিজাব নিষিদ্ধ করা, গরুর গোশত খাওয়ার জন্য মুসলমানকে হত্যা করা, বুলডোজার দিয়ে মুসলমানদের বাড়িঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া- ইত্যাদি মুসলমান নির্যাতনের ঘটনা সগৌরবে ঘটানো হচ্ছে। কিন্তু ‘ইসকন’ নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সুস্পষ্ট রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় গ্রেফতার করায় ভারত বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।

হাসিনার পতনে হতাশাগ্রস্ত নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে টেলিফোনে কথা বলে বাংলাদেশে চরম হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন, যদিও বাইডেন তার এই অভিযোগ আমলে নেননি। এদিকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সাম্প্রতিক নির্বাচনপূর্বক বক্তব্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে মোদির কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, মোদির প্ররোচনা বা মোদিকে তুষ্ট করার জন্য এবং হিন্দু আমেরিকানদের ভোট পাওয়ার লক্ষ্যেই ট্রাম্প এই মন্তব্য করেছিলেন।

শুধু মোদিই নন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশীদের উল্টো করে টাঙিয়ে বিচার করবেন! অর্থাৎ হাসিনার পতনে তিনি এতই ক্ষুব্ধ যে, জনসমক্ষে এই ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশীদের শাস্তি দেয়ার জন্য ভারত বর্তমানে ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে। এতে আমাদের দেশের কিছু রোগীর কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তাদের চেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে ভারতের স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন মার্কেট, হাসপাতাল, হোটেল ও ব্যবসায়ীরা। ভারতের ভিসা না পেয়ে বাংলাদেশী রোগী ও পর্যটকরা এশিয়ার অন্যান্য দেশে ভ্রমণে যাচ্ছেন। ভারতের এ আচরণ যেন নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গের মতো!

ভারতের পররাষ্ট্রনীতি কিভাবে বাংলাদেশে পরাজিত হলো : বাংলাদেশে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত ১৬ বছর তারা যেভাবে বাংলাদেশের এক ব্যক্তি বা এক দলের সাথে সম্পর্ক রেখে চলেছিল তা যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। তারা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইসলামী দল ও ব্যক্তিত্বদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলতে চেয়েছিল। হত্যা, গুম, জেল, মামলা, ফাঁসি ইত্যাদির মাধ্যমে হাসিনা সরকার রাজনৈতিক নেতাদেরকে কোণঠাসা করে রেখেছিল। কিন্তু হাসিনার পতনের পর ভারত সমর্থিত সেই আওয়ামী জুলুম-নির্যাতন বুমেরাং হয়েছে। গত ১৫-১৬ বছরের ভারতীয় কূটনীতিও বিফলে গেছে। তারা চীন এবং আমেরিকা থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে চেয়েছিল। কিছুটা সফলও হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ভারতের সেই কূটনৈতিক চর্চা ৬ আগস্টই মিলিয়ে গিয়েছে। তাদের কূটনীতি ছিল কেবল হাসিনাকেই সন্তুষ্ট রাখা। বিপরীতে ১৭ কোটি বাংলাদেশীর মনে জন্মেছে ভারতের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ।

বাংলাদেশে ভারতের আরো একটি মহাবিপর্যয় ঘটে গেছে। এর ফিজিক্যাল বা দৃষ্টিগ্রাহ্য দলিল ও প্রমাণ নেই। তবে সচেতন মহলের কাছে অনুধাবনীয় এই বিপর্যয়। জনশ্রুতি ও অনুভূতি রয়েছে যে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ (RAW) এ দেশের বিভিন্ন সংস্থার শিরায় শিরায় রক্তের মতো প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল হাসিনার সহায়তায়। এমনকি অভ্যুত্থানের পরপরই বিভিন্ন সন্দেহজনক ভিডিও চিত্রেও দেখা গিয়েছিল বেশ কিছু অস্ত্রধারী পোশাকি লোক উড়োজাহাজে আরোহণ করছে। জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছিল- এরা ভিনদেশী অস্ত্রধারী লোক আমাদের বিভিন্ন সংস্থার সাথে মিশে কাজ করছিল। তবে ‘র’ ভারত কিংবা শেখ হাসিনাকে এই অভ্যুত্থানের বিষয়ে কোনো সতর্কবার্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। সম্ভবত ‘র’-এর ইতিহাসে এই ব্যর্থতা ছিল সবচেয়ে বিপর্যয়কর! কারণ, এই গণ-অভ্যুত্থান সফল হওয়ায় বাংলাদেশে ভারতের সাজানো বাগান ধ্বংস হয়ে গেছে। তাদের পাকা ধানে মই পড়েছে!

ভারতের ব্যর্থতার কারণ : বাংলাদেশে মোদি এবং হাসিনার পরাজয় একই সূত্রে গাঁথা। দীর্ঘদিন যাবৎ ভারত ও হাসিনা পরস্পরের পরিপূরক ছিল। ভারত হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করেছে আর হাসিনা দু’হাত ভরে যা যা স্বার্থ ছিল ভারতের সবই দিয়েছেন প্রাণ খুলে। তিস্তার পানির অভাবে তিস্তাপাড়ের কয়েক কোটি বাংলাদেশী মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। ২০১০ সালে ভারত তিস্তা চুক্তির সব আশা দিলেও শেষ মুহূর্তে ঠুনকো অজুহাতে চুক্তিপ্রক্রিয়া থেকে সরে যায়। অন্যদিকে ফারাক্কা চুক্তি করেও পানি না পাওয়া, ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেয়া, ভারতের আন্তঃনদীসংযোগ প্রকল্প ইত্যাদি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভারতের প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়ার সব কারণই বিরাজমান ছিল। এর সাথে যোগ হয়েছে পরপর তিনটি নির্বাচনে সরাসরি ভারতের সহযোগিতায় ভুয়া নির্বাচনে হাসিনার ক্ষমতা নেয়া। এতে গত তিন নির্বাচনে নতুন ভোটার হওয়া কোটি তরুণ ভোট দিতে পারেনি। কাজেই তরুণদের হৃদয়েই সবচেয়ে বেশি ঘৃণার সঞ্চার হচ্ছিল মোদি ও হাসিনার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আসে ভারতের দুর্নীতিবাজ বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী আদানির সাথে মারাত্মক অসম চুক্তি সম্পাদন। হাসিনার দাসখত দেয়া এই বিদ্যুৎ চুক্তি সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ডভাবে ক্ষুব্ধ করে তোলে। বাংলাদেশের স্বার্থের লাশের কফিনে সর্বশেষ প্যরেক ঠুকা হয় গত নভেম্বরে হাসিনা বেশ কিছু দেশবিরোধী সমঝোতা স্মারক সম্পাদন করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শেষ কৌশলগত স্বার্থ এবং নিরাপত্তাকে পদদলিত করা হয়। রেল করিডোরের নামে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে অবাধ যাতায়াতের সর্বপ্রকার সুযোগ দেয়া হয়। মোংলা বন্দরকে ভারতের হাতে তুলে দেয়ার সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়। এটি গোটা জাতি মেনে নিতে পারেনি।

বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান : ভারতের এ ধরনের একতরফা নোংরা আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে পাল্টা কৌশল নিতে হবে। গত ১৬ বছর আমরা শুধু ভারতমুখীই ছিলাম। ভারতকে তুষ্ট করতে গিয়ে হাসিনা অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করেছে। বর্তমান বাস্তবতায় আমাদেরকে পাকিস্তান ও চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। পাকিস্তান ও চীনের সাথে উষ্ণ সম্পর্ক আমাদেরকে আত্মবিশ^াস জোগাবে। সেই সাথে ভারতের মোড়লিপনা থেকে আমরা মুক্তি পাবো। আমাদের বর্তমান ভারত-নির্ভরতা কমাতে পারলেই আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে আমাদের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। আমরা মাথা উঁচু করে ভারতের সাথে ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হবো।

চুক্তি পুনর্বিবেচনা : এ যাবৎ ভারতের সাথে করা অসম চুক্তিগুলোর বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে তুলে ধরতে হবে। সেগুলোতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে হবে; এমনকি সংশোধন করতে না পারলে চুক্তিগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

সামরিক সহযোগিতা : ভারতের সাথে ইতোমধ্যে বেশ কিছু সামরিক বিষয়ে ‘সমঝোতা স্মারক’ সম্পন্ন করা হয়েছে। এর সবগুলোই পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। সামরিক অস্ত্র-সরঞ্জামাদি, সামরিক যান ও এয়ারক্র্যাফট ইত্যাদি ক্রয় বা ভারত থেকে সংগ্রহের সব ‘এমওইউ’ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভারতীয় অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি কোনোক্রমেই বৈশ্বিক মানের নয়। তদুপরি যে দেশটি তিন দিক থেকে আমাদেরকে ঘিরে রেখেছে এবং আধিপত্য চাপিয়ে দিতে চায় তাদের প্রস্তুতকৃত অস্ত্র কিছুতেই আমাদেরকে কৌশলগত সুবিধা দিতে পারবে না। যতদূর জানা যায়, গত ১৫ বছরে ভারতের প্রভাবে আমাদের রণকৌশল প্রশিক্ষণের ধারণা ও শিক্ষাকে সমন্বয় করা হয়েছিল। সেই সব পরিবর্তন সরিয়ে আমাদের রণকৌশল পাঠদানকে আগের অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে।

গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় : প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এসবের আড়ালে ভারতের ‘র’-এর যাবতীয় তৎপরতা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। কাজেই দীর্ঘ ১৫ বছরে এ দেশে গড়ে উঠা বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট, এজেন্সি ও অপারেটরদেরকে চিহ্নিত করে নিষ্ক্রিয় করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সাথে যে সমস্ত দেশীয় পত্র-পত্রিকা আমাদের দেশে ভারতের স্বার্থে তৎপর রয়েছে সেগুলোকে দেশের জন্য কাজ করতে বাধ্য করতে হবে।

তিক্ত ইস্যুর সমাধান : ভারতকে কিশোরী ফেলানী হত্যার বিচার করতে হবে। সীমান্তে নিয়মিতভাবে ‘বিএসএফ’ কর্তৃক বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ করতে হবে। এ জন্য দ্বিপক্ষীয় সমাধান না হলে জাতিসঙ্ঘে যেতে হবে। আর যথাশিগগিরই সম্ভব তিস্তা চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। এই চুক্তিতে ভারত অস্বীকার করলে চীনকে দিয়ে তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণের পদক্ষেপ নিতে হবে।

সত্যিকারার্থে আঞ্চলিক ‘হেজিমনি’ কায়েম করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি ব্যর্থ হয়েছে। শুধু হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশে তারা আধিপত্য কায়েম করতে সক্ষম হয়েছিল। এখন হাসিনার পতনে তাই ভারত নিজেদেরকে পরাজিত মনে করছে। কিন্তু আমরা ভারতকে প্রতিবেশী বন্ধু হিসেবেই বিবেচনা করি। তবে সেই বন্ধুত্ব হতে হবে পারস্পরিক সম্মান, মর্যাদা, ন্যায়ানুগ ও ভারসাম্যপূর্ণ।

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement