নতুন বিতর্ক : নির্বাচন না সংস্কার আগে
- মীযানুল করীম
- ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২১:০৩
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, তিন বাহিনীর প্রধান এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন বিএনপি ক্ষমতার তিনটি সম্ভাব্য কেন্দ্র। তাদের টক্কর লাগেনি। তাই অস্বস্তির মধ্যেও স্বস্তির শঙ্কা কাটিয়ে উঠেছে জাতি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভালোভাবে অন্তর্বর্তী সরকার চালাচ্ছেন। এ সরকারের সাফল্য আছে। কিন্তু ফেঁকড়া বেধেছে নির্বাচন বনাম সংস্কার নিয়ে।
বিএনপি চায় নির্বাচন তাড়াতাড়ি হোক। সরকার তা চায় না। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বারবার বলছেন, ‘নির্বাচন দিয়ে সরে যান’; আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে, ‘আমরা অন্তত ১৮ মাস থাকব।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভয়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। অন্য দিকে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সংস্কার নির্বাচিত সরকারের কাজ’। নির্বাচিত সরকার ছাড়া সংস্কার স্থায়ী হয় না। এটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে কথা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভী কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে। কিন্তু অনেকে এটিকে সমর্থন করেন না। তারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিতে রাজি নন। গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুরসহ তাদের বক্তব্য- বিগত তিনটি নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮, ২০২২) অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ, এ জন্য সামনের নির্বাচনে তারা অংশ নিতে পারবে না। জাতীয় পার্টি তাদের বৈধতা দিয়েছিল। এ জন্য এই দলটি অংশ নিতে পারবে না। ২০১৪ সালে হয়েছিল বিনা ভোটে নির্বাচন, ২০১৮ সালে হয়েছিল ‘নৈশভোটে’ নির্বাচন ও ২০২২ সালে হয়েছিল প্রহসনের নির্বাচন।
এসবের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। সে তার বশংবদ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এটি করেছিল। ধামাধরা পুলিশ বাহিনী এতে সহায়তা করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ও মুখপাত্র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘কোনো দল নির্বাচন দাবি করতেই পারে। তবে আমরা অস্থায়ী সংস্কার করে তারপর যাবো। কারণ, এ ছাড়া পথ সুগম হবে না। আরো কয়েকটি দল তাকে সমর্থন করে বলছে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থহীন।’ রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দেবো’। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীও যৌক্তিক সময়ে নির্বাচনের কথা বলছে; কিন্তু কেউ বলছেন না যৌক্তি সময় কোনটি। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেনও একই কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, তারা অন্তত দেড় বছর ক্ষমতায় থাকবেন। বিএনপি নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো করলেও তাদের বৃহৎ মিত্র জামায়াতে ইসলামী এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু বলছে না; বরং জামায়াত ইসলামী অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে প্রস্তুত।
আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনার পুত্র ও তার অন্যতম উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রথম দিকে বলেছিলেন তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেয়ার কথা, এরপর তিনি চুপ মেরে আছেন। নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য দলগুলো নির্বিশেষে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার চাপের মুখে নতি স্বীকার করবে না। এ জন্য আগে ‘সংস্কার না নির্বাচন আগে’- এ নিয়ে ঐকমত্য হওয়া দরকার।
সরকার জনপ্রশাসন, সংবিধান, সংসদ, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন প্রভৃতি নিয়ে কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং মৌলিক সংস্কারের ওপর জোর দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, মৌলিক সংস্কার না হলে নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হবে। এ কারণে আগে সংস্কার করা দরকার। এ জন্য সরকারের ‘যৌক্তিক’ সময়ের প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা