২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আলজেরিয়ায় তাবোন কেন পুনর্নির্বাচিত

- ছবি : সংগৃহীত

আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদুল মজিদ তাবোন বিপুল ভোটে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কিছু রাজনৈতিক সংস্কার করে দেশের অশান্ত পরিস্থিতি দূর করার চেষ্টা করেছিলেন।

আলজেরিয়ায় চলতি বছর ১২ জুন যে নির্বাচন হয়েছে, সেটি হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালে। গত মার্চে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন, যাতে কিছু রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশে অশান্ত পরিস্থিতি দূর করা যায়। মজিদ তাবোন হিরক মুভমেন্টের কারণে আগেভাগে নির্বাচন দিয়ে বিষয়টি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছেন। হিরক মুভমেন্ট শুরু হয় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন পঞ্চমবারের মতো বুতাফ্লেকা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। জনবিক্ষোভের ফলে তিনি ২০১৯ এপ্রিল পদত্যাগে বাধ্য হন। বিক্ষোভকারীরা রাজনৈতিক সিস্টেমের পরিবর্তন চেয়েছেন, যেখানে রাজনীতি ও সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব পৃথকভাবে কাজ করবে।

কোভিডের আগ্রাসন বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির পাঁজর ভেঙে দিয়েছে। আলজেরিয়ার তেল ও গ্যাস ইন্ডাস্ট্রিতেও হানা দেয় কোভিড। ফলে আলজেরিয়ানদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়, বেকারত্ব বেড়ে যায়। বিক্ষোভের মাত্রাও বাড়ে। সমালোচকরা বলেন, সামরিক নেতৃত্ব বেসামরিক ও গণতান্ত্রিক আলজেরিয়া পছন্দ করে না। গত বছর ২০২০ সালে সংবিধানের ধারা পরিবর্তন ও সংযোজন করে তাড়াহুড়োর এক নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হয়। ধারণা করা হয়েছিল, এতে বিক্ষোভ প্রশমিত হবে। হিরক মুভমেন্ট ও রাজনৈতিক নেতারা দেখানো-পাতানো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ থাকার বার্তা দিলেও বিশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলকে সমর্থন দেয়। আলজেরিয়ায় এটি খুবই কঠিন যে, সেনাবাহিনীর বিরাগভাজন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাবে। ফলে ১২ জুনের নির্বাচনও কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি ও অর্থবহ হয়নি। ৫৪টির মধ্যে মাত্র ২৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়।

আলজেরিয়া অনেক আগে থেকেই অর্থনৈতিক চাপে। রয়েছে পাহাড়সম দুর্নীতি ও অবিশ্বাস। “ইসলামিস্ট গ্রোথ অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি’ মনে করে, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সন্তোষজনক নয়। দলটি বলেছে, সরকার জনগণের ওপর অসময়ে নির্বাচন চাপিয়ে দিয়েছে। এটি যেকোনো সময় ‘ব্যাকফায়ার’ করতে পারে। নির্বাচন কমিশনের প্রধান শরাফি সাফাই দিয়েছেন, ‘বিগত নির্বাচনের মতো কোনো জালিয়াতি করা হয়নি। এবারের ভোটে ভোটাররা জানতে পেরেছে, কে কোন নীতি নিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং জনগণ কাকে পছন্দ করছে, মানে ভোট অবাধ হয়েছে।”

আলজেরিয়া সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার জন্য প্রচলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বাইরেও কৌশল অবলম্বন করেছে, যেমন সমগ্র সমাজ পদ্ধতি। প্রশাসন মনে করে কোনো একক পদ্ধতি দিয়ে কার্যকরভাবে সন্ত্রাস নির্মূল করা যাবে না; কেননা কোন একক উপাদান মানুষকে চরমপন্থী বানায় না। বিভিন্ন সেক্টর বলতে সরকার, নাগরিক সমাজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়কে সহযোগিতার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমার দেখেছি, ২০০০ এর দশকে শুধু ধর্মীয় মৌলবাদ বিবেচনা করে ধর্মপালনকারী সাধারণের ওপর একধরনের চাপ ও নির্যাতন নেমে আসে। মৌলবাদ ঠেকাতে তারা ধর্মীয় স্থানগুলোর সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়। ফলে মানুষের মনে প্রশাসন ও সেনা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুঞ্জীভ‚ত হতে থাকে।

বিগত সরকার কেবল প্রতিক্রিয়াশীল সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপের পরিবর্তে চরমপন্থীদের সমস্যা নিরসনের ওপর জোর দেয়। ফলে সাধারণ লোকজন সরকারকে কল্যাণকামী সরকারের রূপচ্ছায়া হিসাবে মনে করতে থাকে। এরই ফলে তাবোন দ্বিতীয়বারে ভ‚মিধস বিজয় লাভ করেন, ৮৪.৩ শতাংশ ভোট পান। এই কর্মসূচির অর্থ হচ্ছে সক্রিয়ভাবে কাজ করা যাতে ব্যক্তিরা প্রথমেই চরমপন্থায় দীক্ষিত না হয় এবং যারা ইতোমধ্যে চরমপন্থী মতাদর্শে প্রভাবিত হয়েছে তারা যেন পুনর্বাসিত হয়।

আলজেরিয়া সক্রিয়ভাবে স্থানীয় সম্প্রদায়, ধর্মীয় নেতা ও শিক্ষাবিদদের কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এবং এডুকেশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছে। তারা চরমপন্থী আখ্যান মোকাবেলায় সংলাপ, সহনশীলতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা বেশি প্রচার করেছে। মৌলবাদ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ইসলামের মধ্যপন্থী ব্যাখ্যা প্রচারের মাধ্যমে আলজেরিয়া চরমপন্থী মতাদর্শের শক্তিকে দুর্বল করতে পেরেছে।

আবদুল মজিদ তাবোন একটি শক্তিশালী নির্বাহী শাখা গঠন ও বজায় রাখার সময় আইনসভা ও বিচার বিভাগীয় শাখাকেও শক্তিশালী করেছেন। এর জন্য তিনি সাংবিধানিক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলেন। সংস্কারগুলো ১৭ সদস্যের সংস্কার কমিটি খসড়া করেছিল। এতে আইনি তদারকি এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাড়ানোর ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। সংশোধিত সংবিধানটি ২০২০ সালের নভেম্বরে একটি গণভোটে অনুমোদিত হয়েছিল, তবে ভোটারদের উপস্থিতি তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না। এই কম ভোটদানের ফলে জনসাধারণের সম্পৃক্ততার অভাব ও সংস্কার সম্পর্কে সম্ভবত সংশয় প্রতিফলিত হয়েছিল; উপরন্তু, ২০২১ সালের জুনে যে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানেও ভোটার উপস্থিতি এক-তৃতীয়াংশেরও কম; যাকে স্বাধীনতার পর সর্বনিম্ন। বিশ্লেষকরা অনেকে বলেছেন যে এটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনসাধারণের অব্যাহত মোহভঙ্গের ইঙ্গিত।

আলজেরীয় সামরিক বাহিনীর সাথে আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকার সম্পর্ক জটিল ও মিশ্র প্রকৃতির ছিল এবং তার রাষ্ট্রপতি থাকাকালে এসব অনেক বিষয় জনসমক্ষে প্রকাশিত ও বিকশিত হয়েছিল। বুতেফ্লিকার সামরিক বাহিনীর সাথে একটি শক্তিশালী সংযোগ ছিল, যিনি আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জাতীয় মুক্তি বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন। তবে ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি হুয়ারি বৌমেদিয়েনের মৃত্যুর পরে, সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রপতি পদে বুতেফ্লিকার পরিবর্তে চাদলি বেনজেদিদকে বেছে নিয়েছিল, যার ফলে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সাময়িক রাজনৈতিক নির্বাসন দেয়া হয়েছিল।

১৯৯৯ সালে তার প্রত্যাবর্তন এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে চূড়ান্ত নির্বাচনের পরে, বুতেফ্লিকার রাষ্ট্রপতিত্বে আলজেরীয় রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব হ্রাস করার প্রচেষ্টাও দেখা গেছে। তার চতুর্থ মেয়াদে, তিনি একটি শক্তিশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ও সুরক্ষা বিভাগকে কোণঠাসা করার জন্য উল্লেখযোগ্য সংস্কার করেন এবং এর কাজগুলো রাষ্ট্রপতির নিয়ন্ত্রণে রাখেন।

এই প্রচেষ্টা সত্তে¡ও সামরিক বাহিনী আলজেরিয়ার রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসেবে থেকে যায়। ২০১৯ সালে বুতেফ্লিকার পদত্যাগে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। পঞ্চম মেয়াদে তার প্রার্থিতার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ আহমেদ গাইদ সালাহর নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নেয়। সালাহ বুতেফ্লিকাকে অযোগ্য ঘোষণা করার সাংবিধানিক বিধান প্রয়োগের আহ্বান জানান, বিক্ষোভকারী জনগণ সেটি লুফে নেয়। ফলে ২ এপ্রিল ২০১৯ এ তার পদত্যাগ নিশ্চিত হয়।

তাবোনের সাথে সশস্ত্রবাহিনীর সম্পর্ক
গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের আহ্বান জানিয়ে ২০১৯ সালে হিরাক নামে সমাধিক পরিচিত আলজেরিয়ান বিক্ষোভ সত্ত্বেও, তাবোনের আমলে রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ আরো সামরিকীকরণ হয়ে উঠেছে। জনসাধারণের বাইরে এবং সরকারি অনুষ্ঠানের সময় তাবোনে প্রায়ই তার সামরিক চিফ অফ স্টাফ জেনারেল সাইদ চানেগ্রিহার সাথে থাকেন। এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আলজেরিয়ার রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব তুলে ধরে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুরক্ষিত করতে সামরিক বাহিনীর ভূমিকার ওপর জোর দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, এই সামরিকীকৃত রাজনৈতিক ব্যবস্থার শিকড় আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ (১৯৫৪-৬২) থেকে পাওয়া। সেনাবাহিনী তখন দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সময়ের সাথে সাথে সেনাবাহিনীর বিশিষ্টতা উল্লেখযোগ্যভাবে ওঠানামা করেছে। ১৯৮৯ সালে গণতান্ত্রিক সংস্কারের অংশ হিসেবে এটি ডি-পলিটিসাইজড করা হয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে হীরক বিক্ষোভের সময় এটি আবার প্রাধান্য পায়। তৎকালীন সামরিক চিফ অব স্টাফ জেনারেল আহমেদ গাইদ সালাহ হীরক আন্দোলনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন। উভয়ই এটিকে সমর্থন করেন এবং পরে এর দমনে সহায়তা করেন। এই সম্পর্কে সাংবিধানিক প্রভাবও গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯ সালের সাংবিধানিক সংশোধনী সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক প্রভাবকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেয়। সংবিধান দ্ব্যর্থহীনভাবে সামরিক বাহিনীকে দেশের ‘গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্বার্থ’ রক্ষার জন্য রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার কর্তৃত্ব দিয়েছে। সশস্ত্রবাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার হিসেবে তাবোনের অবস্থান আলজেরিয়ার শাসনে সামরিক বাহিনীর ভূমিকায় আরো জোর দেয়। তাবোনের বৈদেশিক নীতি ও সামরিক ক‚টনীতির গুরুত্বও সমধিক। তাবোনে পশ্চিম সাহারা ও ফিলিস্তিনসহ আলজেরিয়ার ঐতিহাসিক কারণগুলোর প্রতি তার প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়েছেন। তার বৈদেশিক নীতি আলজেরিয়ার সামরিক ও ক‚টনৈতিক কোরকে পুঁজি করে, সশস্ত্রবাহিনীকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে তৈরি করতে পেরেছে।

রাষ্ট্রপতি আবদেল আজিজ তাবোনের বিগত আমলে আলজেরিয়ায় বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অর্জন ও সংস্কার বাস্তবায়িত হয়েছিল। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে, তাবোনে একটি শক্তিশালী নির্বাহী শাখা তৈরি করে সরকারের আইনসভা ও বিচার বিভাগীয় শাখাগুলোকে শক্তিশালী করতে পেরেছিলেন এবং সংবিধান পরিবর্তনে হাত দিয়েছিলেন। এ খসড়াটি ২০২০ সালের মে মাসে সর্বজনীন করা হয়েছিল এবং ২০২০ সালের নভেম্বরে একটি গণভোটে অনুমোদিত হয়েছিল, যদিও ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল, যোগ্য ভোটারদের তিন-চতুর্থাংশ অংশ নেয়নি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাবোনে জাতীয় গণপরিষদ ভেঙে দেন এবং জুনে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানান। ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও সরকারপন্থী দলগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে। এসব পদক্ষেপ আলজেরিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য তাবোনের প্রচেষ্টার অংশ ছিল, যদিও তিনি বিরোধী দলগুলোর সমালোচনার মুখোমুখি হন। বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, প্রতিবেশী মরক্কোর সাথে আলজেরিয়ার সম্পর্ক বিশেষ করে পশ্চিম সাহারা ইস্যুতে তিক্ত হয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টে, এই উত্তেজনা এবং ইসরাইলের সাথে মরক্কোর ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার মধ্যে আলজেরিয়া মরক্কোর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। এসব ঘটনা তাবোনের নেতৃত্বে আলজেরিয়ার আঞ্চলিক কূটনীতিতে চলমান চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিফলিত করে। জনাব তাবোনের জন্য পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পর্যটনের উন্নয়ন করে রাজস্ব বৃদ্ধি জরুরি প্রয়োজন ও চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে।

আলজেরিয়ার পর্যটন শিল্প, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে, এটি ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল। সাহারা মরুভূমি বিশ্বের বৃহত্তম মরুভূমি, আলজেরিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে রয়েছে। এর মন্ত্রমুগ্ধকর বালিয়াড়ি, মরূদ্যান ও প্রাচীন কাফেলা রুটগুলো অন্বেষণ করতে ভ্রমণকারীরা এখানে ছুটে আসে। সাহারার বিশালতা এবং নিখুঁত সৌন্দর্য অনন্য অভিজ্ঞতার সন্ধানকারী অভিযাত্রীদের আকর্ষণ করে। আলজিয়ার্সের কাসবাহ ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, কাসবাহ সরু গলি, ঐতিহাসিক ভবন ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের গোলকধাঁধা। এ যেন আলজেরিয়ার অতীতের এক ঝলক। আলজেরিয়া একসময় রোমান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল এবং সেই যুগের অবশিষ্টাংশ সারা দেশে পাওয়া যায়। টিমগড়, জেমিলা ও টিপাসা উল্লেখযোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। কাবিলি পর্বতমালা থেকে জুর্দজুরা জাতীয় উদ্যান পর্যন্ত, আলজেরিয়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর। প্রেসিডেন্ট তেব্বুনি আলজেরিয়ার পর্যটন খাতকে উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন, তাদের একটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত মাস্টার প্ল্যান আছে। অবকাঠামো, আবাসন ও পরিষেবা বাড়ানোর কাজ অগ্রাধিকার দিয়ে শেষ না করলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement