রেজাল্ট নিয়ে ভাবছেন না শান্ত

অতীত সাফল্য বড়জোর আত্মবিশ্বাস জোগাতে পারে কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে ওসব কাজে আসবে না। ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর সংবাদ সম্মেলনে এসে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশকে। এরপর একটু সতর্কবার্তার সুরেই মনে করিয়ে দেন, এটা কিন্তু নতুন সিরিজ। এরপর বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও মনে করিয়ে দিলেন, এটা কিন্তু নতুন সিরিজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টেই জয়ের অভাবনীয় সাফল্য। অতীত নিয়ে পড়ে থাকার সময় শেষ।

রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তান ২৭৪ করার পর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ধ্বংস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের পর সবার প্রত্যাশাটা এমন যে বাংলাদেশ এখন যেকোনো অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি কেমন, ড্রেসিংরুমের পরিবেশটাই বা কেমন? শান্ত জানালেন, ‘ফল নিয়ে যদি বলেন, পঞ্চম দিনে শেষ সেশনে গিয়ে আমাদের রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা। তার আগ পর্যন্ত আমরা নিজেদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে। এটা নতুন সিরিজ। ড্রেসিংরুমের বিশ্বাস, আমরা এখানেও খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব। আমরা ফল নিয়ে ভাবছি না। প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করতে চাই।’

ভারতের শক্তিমত্তা বিবেচনায় তাদের মাঠে টেস্ট জেতা যেকোনো বিচারেই সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। শান্তও স্বীকার করলেন সে কথা, ‘অবশ্যই। সবচেয়ে কঠিন একটি প্রতিপক্ষ, এটা আমরা সবাই স্বীকার করি। কিন্তু প্রতিপক্ষকে নিয়ে খুব বেশি চিন্তা না করে নিজেদের নিয়ে চিন্তা করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দলটার সেই সামর্থ্য আছে যে এখানে ভালো ক্রিকেট খেলা। জানান, পাঁচ দিনের একটা ম্যাচ, এই পাঁচটা দিন আমরা কিভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। লক্ষ্য তো একটাই থাকে আমরা প্রতিটি ম্যাচটা জিতব, সব আন্তর্জাতিক দলেরই এই লক্ষ্য থাকে। আমাদেরই একই লক্ষ্য। জেতার জন্য যে জিনিসগুলো করা প্রয়োজন, আমরা ওগুলোই করব। ফল নিয়ে যদি বলেন, পঞ্চম দিনে শেষ সেশনে গিয়ে আমাদের রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা। তার আগ পর্যন্ত আমরা নিজেদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব।’

ভারতের মাটিতে এ পর্যন্ত মাত্র তিনটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এই সফরে ভালো করতে পারলে সুযোগ কী হতে পারে ভারতের মাটিতে আরো বেশি টেস্ট খেলার। অধিনায়ক জানালেন, ‘অবশ্যই এ ধরনের সিরিজ যদি ভালো করতে পারি, প্রতিটি দলই হয়তো আমাদের সাথে আরো বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে চাইবে। এটা একটা অনেক বড় সুযোগ যে এখানে আমরা কত ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। আশা করি, বাংলাদেশ দল এখন যেভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলছে, সব দলই তো আমাদের সাথে খেলার ব্যাপারে আগ্রহী হওয়ার কথা।’

কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছে না শান্ত ও তার দল। নিজেদের পরিকল্পনা কাজে লাগানোর ব্যাপারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। বোলিং শক্তি নিয়ে শান্ত জানান, ‘যেটা বলেছি আমি ফল নিয়ে ভাবছি না। প্রক্রিয়াটা নিয়ে ভাবছি। যে পাঁচ-ছয়জন বোলার আছে তারা সবাই দীর্ঘ সময় ধরে ভালো জায়গায় বল করতে পারে। আশা করি, তারা নিজেদের কাজটা করবে।’
আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় দল ভারত। ঘরের মাঠে রোহিত শর্মার দল তো আরো অনেক বেশি শক্তিশালী। অধিনায়কের উত্তর, ‘আমরা কন্ডিশন এবং প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছি না। আমরা শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবছি। নিজেদের পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচটা ভালো হবে।’

বাংলাদেশ এখনো আবেগপ্রবণ দল কিনা! অধিনায়কের উত্তর, ‘হ্যাঁ, কারণ অনেকেই ১০-১৫ বছর ধরে খেলছে। বেশির ভাগই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, তাই কয়েক বছর ধরে কেউ সেভাবে আবেগাক্রান্ত হয় না। আমরা এখন নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। শুধু নিজেদের খেলা নিয়েই ভাবি। হারলে কিংবা জিতলে কী হবে, সেটা নিয়ে ভাবি না। শতভাগ উজাড় করে দেয়ার চেষ্টা করি।’