খেলল না মোহামেডান জয়ী ঘোষণা আবাহনীকে
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৭
রাসেল মাহমুদ জিমির হলুদ কার্ডসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার দাবিতে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচটি না খেলারই হুমকি দিয়েছিল মোহামেডান। তবে শেষ পর্যন্ত সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মোহামেডান ঠিকই মাঠে নেমেছে। কিন্তু অঘোষিত ফাইনালের সুন্দর সমাপ্তি দেখল না কেউ। মোহামেডান বারবার বলে আসছিল তাদের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র চলছে। গতকাল আরো একবার তারা আঙুল তুলল ফেডারেশন-লিগ কমিটি-আম্পায়ারের দিকে।
তৃতীয় কোয়ার্টার শেষ হতে দুই মিনিট বাকি থাকতে যখন মোহামেডান ৩-২ গোলে এগিয়ে তখন একটি শটকে কেন্দ্র করে আবাহনীর ভারতীয় আফফান ইউসুফ এবং মোহামেডানের মালয়েশিয়ান জুল পিদাউসের সাথে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। তাতে জড়িয়ে পড়ে উভয়দলের খেলোয়াড়রা। একপর্যায়ে মোহামেডানের দীন ইসলাম ইমন ও তানভিরকে লাল কার্ড এবং জুল পিদাউসকে হলুদ কার্ড দেখায় আম্পায়ার। আর আবাহনীর নাঈম ইসলামকে লাল কার্ড ও আফফান ইউসুফকে হলুদ কার্ড দেয়ায়। মোহামেডান আম্পায়ারের কাছে রিভিউ চাইলে আম্পায়ার অস্বীকার করে। ফলে তারা আর না খেলার সিদ্ধান্ত নেয়। তাতে অপমৃত্যু ঘটল মোহামেডান ৩-২
গোলে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও উপভোগ্য এক ম্যাচের। ম্যাচে উত্তেজনা ছিল আগাগোড়াই। শুরুতেই ভারতীয় খেলোয়াড় আফফান ইউসুফের পেনাল্টি কর্নারের গোলে আবাহনী এগিয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে ২৫ মিনিটে আবাহনীকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন পুষ্কর খীসা মিমো। তৃতীয় কোয়ার্টারে ঘুরে দাঁড়ায় সাদা-কালোরা। মালয়েশিয়ান খেলোয়াড় ফাইজাল বিন সারি ৩২ মিনিটে ফিল্ড গোল, ৩৬ ও ৩৮ মিনিটে পিসি থেকে গোল করে হ্যাটট্রিক করেন এবং মোহামেডানকে ৩-২ গোলের লিড এনে দেন। তখনই অঘটনটা ঘটল।
আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি মোহামেডান, মাঠ ছেড়ে চলে যান মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। আবাহনীর খেলোয়াড়রা অবশ্য মাঠেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। বারবার অনুরোধের পরও মোহামেডান দল আর মাঠে নামেনি। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে দুই আম্পায়ার ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজান। লিগের বাইলজ অনুযায়ী মোহামেডান খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করা হয় ৩-০ গোলে।
এরপর আরেক নাটক। বাইলজ অনুযায়ী মোহামেডান এই ম্যাচে হারলেও আম্পায়ারের শেষ বাঁশি বাজানোর পর উল্লাসে মেতে ওঠে সাদা-কালো দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা। মোহামেডান ক্লাবের পতাকা নাড়িয়ে উল্লাস করেন। সেফি তোলেন। আর 'জয়ী' আবাহনী নীরবেই মাঠ ছাড়ে। এই ম্যাচে আবাহনীকে জয়ী ঘোষণার কারণে লিগে আবাহনী ও মেরিনার্সের পয়েন্ট সমান ৩৭ হয়েছে। লিগের বাইলজ অনুযায়ী আবাহনী ও মেরিনার্সের মধ্যে প্লে-অফ ম্যাচ হওয়ার কথা। এর জন্য দুই দলকেই চিঠি পাঠাবে ফেডারেশন। তাতে শিরোপার জন্য দুই দল প্লে অফ খেলবে নাকি যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবে ফেডারেশন।
মোহামেডানের ম্যানেজার প্রিন্স জানান, 'আমাদের গর্ব, মোহামেডানের গর্ব যে, ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকার পরও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি। ষড়যন্ত্র করে জিততে চাও, শিরোপা নিতে চাও, মাঠে না পেরে অন্যায়ভাবে দু'জনকে লাল কার্ড দিয়ে বলো খেলো। হকি যেখানে দ্রুতময় খেলা, এক মিনিটেই হতে কয়েক গোল, সেখানে দু-তিনজন কম নিয়ে কিভাবে খেলব। আম্পায়ারদের কাছে রিভিউ চেয়ে পাই না। তাদের রিভিউ দেখতে সমস্যা কোথায়? তোমরা যখন শিরোপার জন্যই এমন করছ, খেলাটাকে নষ্ট করছ, আর নাটক সাজিয়ে আমাদের খারাপ বানাচ্ছ। তাহলে আর কী করা, নেও- তোমরা শিরোপা নিয়ে যাও।'
এ দিকে মোহামেডান যখন খেলবে না বলে, তখন ওমানি আম্পায়ার একটু কঠোরই হন। কালবিলম্ব না করে খেলা শেষের বাঁশি বাজান। ওই মুহূর্তে আবাহনীকে উল্লাস করতে দেখা যায়। কয়েকজন খেলোয়াড় গিয়ে আম্পায়ারের সাথে করমর্দন করেন। তারাও হয়তো এমন সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি। আবাহনীর এক অফিসিয়াল জানান, 'খেলায় হারজিত আছেই। মোহামেডান আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মানেনি। ভেবেছিলাম (১৫+২) ১৭ মিনিট বাকি আছে এবং এগিয়েও আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই খেলা শেষের বাঁশি। আমরা হারি বা জিতি, তাদের এমন করা উচিত হয়। বাইলজ অনুযায়ী রিফিউজ টু প্লে হিসেবে আম্পায়ার তার সিদ্ধন্ত জানিয়েছেন।'
তবে মেরিনার্সের সাথে প্লে অফ হবে কি না সে সম্পর্কে এড়িয়ে যান এই কর্তা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা