০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬
`

২০০ রানও স্বস্তির নয়

সেঞ্চুরি করেছেন অ্যালেক্স হেলস। সাইফ হাসানের ঝড়ো ফিফটি। বিপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৮৬ রানের জুটি তাদের : বিসিবি -


বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে চলছে রানের বন্যা। মিরপুর থেকে সিলেট-সব জায়গাতেই ব্যাটারদের রাজত্ব। উইলো হাতে চালাচ্ছেন তা-ব। সেঞ্চুরি যেন কোন ব্যাপারই নয়। কোনো দল ২০০ রান করেও যেন স্বস্তিতে থাকতে পারছে না। সিলেট স্ট্রাইকার্স গতকাল নিজেদের মাঠে ২০৫ রান করেও রংপুর রাইডার্সের বিদেশী রিক্রুট অ্যালেক্স হেলসের সেঞ্চুরির কাছে হার মানল। ৩৯ ওভারে হয়েছে ৪১৫ রান। উইকেট পড়েছে ৬টি। হেলসের ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে রংপুর। বিপিএল ইতিহাসে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩১ ছক্কার রেকর্ড হয়েছে এই ম্যাচে।
বিপিএল সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে হয়েছে রান উৎসব। চার ম্যাচের সবকটিতে জিতল রংপুর। ৮ পয়েন্ট নিয়ে দলটি রয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। সিলেট তাদের খেলা দুই ম্যাচেই হারল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২০৫ রান তোলে সিলেট। জবাবে ৬ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটে ২১০ রান জয়ী রংপুর। সীমানার আকার ছোট করায় ব্যাটাররা পান বাড়তি সুবিধা।

ব্যাটিং স্বর্গে রনি তালুকদার ও জাকির হাসানের ফিফটিতে ২০০ ছাড়ানো পুঁজি পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। কিন্তু সেই বড় সংগ্রহও যথেষ্ট হলো না। দ্বিতীয় উইকেটে ১০১ বলে ১৮৬ রানের আক্রমণাত্মক জুটিতে জয়ের রসদ পেল রংপুর রাইডার্স। সাইফ হাসান ঝড়ো ফিফটি (৮০) করে ফিরলেও অ্যালেক্স হেলস অপরাজিত থাকলেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে।
বিপিএলে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড এটি। ২০২০ সালের আসরে মিরপুরে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে ২০৫ রান তাড়া করে ৮ উইকেটে জিতেছিল খুলনা টাইগার্স। শীর্ষে অবস্থান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। ২০২৩ সালের আসরে এই সিলেটেই খুলনার বিপক্ষে ২১০ রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা।

রান তাড়ায় বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৮৬ রানের জুটি গড়েন হেলস ও সাইফ। আগের রেকর্ডেও আছে হেলসের নাম। ২০১৯ সালে রংপুরের হয়েই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ১৮৪ রান যোগ করেছিলেন তিনি।
হেলস-সাইফের রেকর্ড জুটির দিন হয়েছে ছক্কারও নতুন রেকর্ড। ব্যাটিংবান্ধব উইকেটের পাশাপাশি ছোট সীমানার সুবিধা কাজে লাগিয়ে মোট ৩১টি ছক্কা মেরেছেন ব্যাটসম্যানরা। বিপিএলে এক ম্যাচে এটিই সর্বোচ্চ ছয়ের রেকর্ড। এর আগে ভিন্ন দুটি ম্যাচে দেখা গেছে ২৯টি করে ছক্কা।
ম্যাচসেরা ইংলিশ ওপেনার হেলস তা-ব চালিয়ে অপরাজিত থাকেন ১১৩ রানে। বিপিএলে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আর স্বীকৃত টি-২০তে সব মিলিয়ে সপ্তম। তার ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ছিল ২০১.৭৯। ৫৬ বল মোকাবিলায় ১০টি চারের সঙ্গে সাতটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
বিপিএলে যে কোনো উইকেট জুটিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি হেলস গড়েন সাইফের সঙ্গে মিলে। জয় নাগালে থাকা অবস্থায় সাইফ আউট হন ৮০ রানে। চলতি আসরে এটি তার টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। ৪৯ বলের আগ্রাসী ইনিংসে তিনি মারেন ৩টি চার ও ৭টি ছক্কা। তার বিদায়ের পর ডাবল নিয়ে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন হেলস। থার্ড ম্যান ও ডিপ মিড-উইকেট দিয়ে টানা দুই ছক্কায় ম্যাচ শেষ করেন তিনি।

লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই আজিজুল হাকিম তামিমের উইকেট খোয়ায় রংপুর। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক ৫ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি। কিন্তু দলীয় ২ রানে আঘাত পাওয়ার ধাক্কা সামলে নেন হেলস ও সাইফ। দুজনের চার-ছক্কার বৃষ্টির বিপরীতে অসহায় হয়ে পড়ে স্বাগতিক সিলেট। দলটির বোলিং আক্রমণ খুঁজে পায়নি কোনো পাল্টা জবাব।
সিলেটের পক্ষে পেসার তানজিম হাসান সাকিব ২৩ রানে পান ২ উইকেট। তিনি ছাড়া বাকিরা ছিলেন এলোমেলো। রান বিলিয়ে দেন। এর আগে রংপুরের বোলাররাও সুবিধা করতে পারেননি রান সহায়ক পিচে। তাদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন সিলেটের ব্যাটাররা। তবে বিফলে যায় তাদের প্রচেষ্টা।
ওপেনার রনি ৩২ বলে ৭টি চার ও তিনটি ছক্কায় করেন ৫৪ রান। তিনে নামা জাকির ৩৮ বলে ৪টি ছক্কায় ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া, আমেরিকান ব্যাটার অ্যারন জোন্স ১৯ বলে একটি চার ও চারটি ছক্কায় ৩৮ ও জাকের আলী অনিক ৫ বলে তিনটি ছক্কায় ২০ রান করেন। দুজনই অপরাজিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
সিলেট স্ট্রাইকার্স : ২০৫/৪ (রনি ৫৪, মানজি ১৮, জাকির ৫০, স্টার্লিং ১৬, জোন্স ৩৮*, জাকের ২০*; সাইফউদ্দিন ২/৩১, মাহেদি ১/৩৮, আকিফ ১/৫১)।
রংপুর রাইডাসর্ : ১৯ ওভারে ২১০/২ (হেলস ১১৩*, আজিজুল ০, সাইফ ৮০, ইফতিখার ৮*; তানজিম ২/২৩, আল আমিন ০/৫৩, টপলি ০/৩৭)।
ফল : রংপুর রাইডার্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : অ্যালেক্স হেলস

 


আরো সংবাদ



premium cement