বাংলাদেশের রেকর্ড জয়

২০২৩ সালে সাউথ আফ্রিকা সফরে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিন উইকেটে ২৫০ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেটাই ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। গতকাল করলো ৪ উইকেটে ২৫২ রান। শারমিন আক্তার সুপ্তর অভিষেক হয়েছিল ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ১৩ বছর পর প্রতিপক্ষ হিসেবে তাদের আবার পেয়ে প্রত্যাবর্তনটা রাঙালেন। ১৬ মাসের বেশি সময় পর ওয়ানডে দলে ফেরা শারমিন আক্তার সুপ্তর ব্যাটে ইনিংসের ভিত তৈরি হয়। তার ঝড়ো ইনিংসে প্রথমবার আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজি পেয়ে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্পিনারদের ঝলকে দিশেহারা হলো আয়ারল্যান্ড। তাদের অল্প রানে আটকে ওয়ানডেতে সবচেয়ে নিজেদের সবচেয়ে বড় রানের জয় পেল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। এর আগের বড় জয় ছিল গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইস্ট লন্ডনে ১১৯ রানের। আর গতকাল ১৫৪ রানের।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ড নারী দলকে পাত্তাই দিলো না বাংলাদেশ নারী দল। সফরকারীদের ১৫৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। রানের হিসেবে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। বাংলাদেশের রেকর্ড ৪ উইকেটে গড়া ২৫২ রানের জবাবে মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে যায় আইরিশ নারীরা। একই মাঠে আগামি ৩০ নভেম্বর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা অসাধারণ করে বাংলাদেশ। টাইগ্রেসদের জয়ে বড় অবদান সুপ্তর। ডান হাতি ব্যাটার ৮৯ বলে ১৪ চারে করেন সর্বোচ্চ ৯৬ রান। এ ছাড়া ১১০ বলে ৬১ রান আসে ফারজানা হক পিংকির ব্যাটে। আইরিশদের একশোর নিচে আটকে দিতে সম্মিলিতভাবে উইকেট নিয়েছেন বোলাররা। পেসার মারুফা আক্তার ১৮ রানে পান দুই উইকেট। অফ স্পিনার সুলতানা খাতুন ও বাঁ হাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার দুজনেই ২৩ রান দিয়ে পান তিনটি করে উইকেট।
২৫৩ রানের লক্ষ্যে নেমে তৃতীয় ওভারেই পর পর দুই বলে গ্যাবি লুইস ও এমি হান্টারকে তুলে নেন মারুফা। তার এনে দেয়া শুরু ধরে স্পিনাররা দেখাতে থাকেন দাপট। ওপেনার সারাহ ফরবেস থিতু হলেও উড়তে পারেননি, ডট বলের চাপে তাকে ক্রিজে আড়ষ্ট করে রাখে বাংলাদেশ। ওরলা প্রেনডারগাস্ট ৩৪ বলে ১৯ করে ফেরার পর ২৫ রান করে নিজের লড়াই থামান সারাহ। আইরিশ ব্যাটারদের মধ্যে এরপর দুই অঙ্কে যেতে পেরেছেন আর কেবল একজন। লাউরা ডেলানি ৩৮ বলে করেন ২২ রান।
সকালে টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে মন্থর শুরু করে বাংলাদেশ। মুরশিদা খাতুন-ফারজানা হকের জুটির পর তিনে নেমে দলের রানের চাকায় গতি আনেন সুপ্ত। পরে প্রায় পুরো ইনিংস টেনে নিয়ে দলকে শক্ত জায়গায় নেয়ার কারিগর তিনি। মধ্যে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির (২৮ বলে ২৮) সাথে মিলে ৬১ রানের জুটি পান তিনি। মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির পর দ্রুততম সেঞ্চুরির কাছেও ছিলেন। ৪৯তম ওভারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৮৯ বলে ৯৬ রানে থেমে সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়েন। তবে তার ইনিংসেই বড় জয়ের ভিত পেয়ে বোলিংয়ে নিজেদের কাজটা করেছে টাইগ্রেসরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ইনিংস : ২৫২/৪ (ফারজানা ৬১, মুর্শিদা ৩৮, শারমিন সুপ্ত ৯৬, নিগার সুলতানা ২৮, স্বর্ণা ১৩*, মোস্তারি ৫*, ফ্রিয়া সার্জেন্ট ২/৫১, লউরা ডিলানি ১/৩৮, এইমি মাগুইরি ১/৬২)।
আয়ারল্যান্ড ইনিংস : ২৮.৫ ওভারে ৯৮/১০ (সারাহ ফোর্বস ২৫, প্রেনডারগাস্ট ১৯, লউরা ডিলানি ২২, এইমি ৯*, রেমন্ড ৭, সুলতানা ৩/২৩, নাহিদা ৩/২৩, মারুফা ২/১৮)।
ফল : বাংলাদেশ ১৫৪ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : শারমিন আক্তার সুপ্ত।
সিরিজ : ১-০ তে এগিয়ে বাংলাদেশ।