বুদ্ধির জয়
- মিজান ইবনে মোবারক
- ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০৫
এক বনে বাস করত একদল পিঁপড়া। হেসেখেলে খেয়েপরে বেশ ভালোই দিন কাটছিল তাদের। কোনো দুঃখ কষ্ট ছিল না। সকাল হলে দল বেধে খাবার খুঁজতে বের হতো। সন্ধ্যার আগেই খাবার নিয়ে বাসায় ফিরে আসত সবাই। এরপর সারাদিন ধরে সবার সংগ্রহ করা খাবারগুলো এক জায়গায় করত। তার চারপাশে গোল করে বসে পিঁপড়ারা নাচ-গান করত, আনন্দ ফুর্তি করত। এরপর হতো ভোজ অনুষ্ঠান। সবার একত্রিত করা খাবার থেকে যে যার পছন্দমতো খাবার খেত। এভাবে বেশ আনন্দে কাটছিল তাদের দিন।
একদিন হঠাৎ এক ঝড় এসে সব এলোমেলো করে দিলো। পিঁপড়াদের দুরবস্থা নেমে এলো। বনের গাছপালা, ফলমূল সব ঝড়ের কবলে পড়ে শেষ হয়ে গেল। পিঁপড়াদের বাসাও ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। কয়েকটি পিঁপড়া মারা গেল।
পিঁপড়াদের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেল। সারাদিন খুঁজেকোনো খাবার পাওয়া যেত না। বাচ্চা পিঁপড়াগুলো খুব কান্নাকাটি করত। না খেয়ে থাকতে থাকতে দিন দিন অসুস্থ হয়ে যেতে লাগল।
বনের পিঁপড়ারা এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে জরুরি পরামর্শে বসল। কী করা যায় সবাই মিলে ভাবতে লাগল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না। কেউ ভালো কোনো মতামত দিতে পারছিল না। কোনো খাবারের সন্ধান দিতে পারছিল না। সেদিন আর কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছা গেল না।
পরদিন আবার সবাই একত্রিত হলো। খুব গভীরভাবে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে লাগল। এমন সময় একটি দোয়েল পাখি সে দিক দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের কথাবার্তা শুনে বলল, নদীর ওপারে এক বিশাল বন রয়েছে। সেখানে অনেক খাবার পাওয়া যায়। তোমরা সেখান থেকে খাবার সংগ্রহ করতে পারো।
পাখির কথা শুনে পিঁপড়াগুলো বেশ খুশি হলো। সবার মুখে হাসি ফুটল। কিন্তু কে যাবে নদী পার হয়ে খাবার আনতে আর কীভাবেই বা যাবে? তখন আবার পরামর্শে বসল পিঁপড়ারা। একটি বৃদ্ধ পিঁপড়া বলল, আমি যখন ছোট ছিলাম। তখন একবার এমন ঝড় হয়েছিল। তখন খাবারের সঙ্কট পড়েছিল। আমার বাবা আর দাদু মিলে পাতা দিয়ে নৌকা তৈরি করে দূর থেকে খাবার আনত।
বৃদ্ধ পিঁপড়ার কথা শুনে বাকি পিঁপড়ারা বলল, এটি তো খুবই সুন্দর বুদ্ধি। আমরাও তাই করব।
তারপর শুরু হলো পাতার নৌকা বানানো। নৌকা বানানো শেষে একদল পিঁপড়া তাতে চড়ে নদী পার হলো। বিকেলে নৌকা বোঝাই করে খাবার নিয়ে এলো বাসায়। পিঁপড়ারা খাবারগুলো পেট ভরে খেলো। আরো একটি কাজ করল পিঁপড়ারা। নৌকাতে করে কিছু ফলের বীজ এনেছিল তারা। সেগুলো মাটিতে পুঁতে দিলো। কিছু দিনের মধ্যেই সে বীজ থেকে চারা গজাল। গাছ হলো। ফুলে-ফলে ভরে গেল সমস্ত বন। তারপর থেকে পিঁপড়াদের আর খাবারের জন্য কষ্ট করতে হয়নি। পিঁপড়াগুলো গাছের ফল ফুল খেয়ে বেশ আনন্দে জীবনযাপন করতে লাগল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা