১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

দাম্পত্য কলহের কারণ

দাম্পত্য কলহের কারণ -


তোমরা পুরুষরা নারীর হৃদয় জয় করো। নারীদের হৃদয়টাকে ভালোবাসা দিয়ে একবার মুড়িয়ে নিতে জানলে, দেখবে কী মায়া আর মমতায় সে আগলে রাখে তোমাকে। নারী ভীষণ সংবেদনশীল হয়, তার প্রতি একটু যত্নশীল হলে জীবনসঙ্গী হিসেবে সে তার সর্বোচ্চটা উজাড় করে দিয়ে তোমায় ভালোবাসবে। নারীর জন্য খাঁটি প্রেমিক হও, কখনো উগ্র মেজাজে নয়, বরং যুক্তি দিয়ে তাকে বুঝাও। দেখবে সংসারটা সোনায় পরিণত হবে। আমার এমন কিছু পুরুষের জীবনী জানা আছে, যারা ব্যক্তি হিসেবে যথেষ্ট ভালো হওয়া সত্ত্বেও তার ঘরওয়ালি জীবনসঙ্গী নারীটিকে সে ভালো মানুষ হিসেবে পায়নি। নিয়তি আসলে সবাইকে তার ইচ্ছে মতো জীবনসঙ্গী দেয় না, তার প্রমাণ দেখেছি অহরহ।

যাদের সংসারে নিত্যদিন ঝগড়া-বিবাদ লেগেই আছে; তারা অপারগ তাদের জীবনসঙ্গিনীর হিংস্রতা আর অসভ্য আচরণ রোধ করতে। কিছু নারী হিংস্র হয়ে স্বামীর পরিবারের সবার সাথে দুর্ব্যবহারও করে। এমন পরিবার খুব লক্ষণীয় আমাদের এখনকার বর্তমান সমাজে; কিন্তু তবুও স্বামী বেচারা সংসারটা একমাত্র টিকিয়ে রাখছে একরকম বাধ্য হয়ে। সন্তানদের দিকে তাকিয়ে। মূলত এদের কাছে সম্মানটা বড় বলে এরা পারে না কোনো পদক্ষেপ নিতে। পারে না বিয়েবিচ্ছেদ করতে। কিছু নারী ভীষণ উগ্রপন্থী হয়, নারীদের বেশ কিছু হঠকারিতায় আর উগ্র মেজাজে কিছু কিছু পুরুষের জীবনও প্রায় অতিষ্ঠ।

জীবনে কিছু পেতে হলে কিছু দিতেও হয়। আমার দেখা কিছু পুরুষ ভাই, বন্ধু কিংবা আত্মীয় এদের মধ্যে দেখেছি অনেক পুরুষের জীবনটা আসলে গাধার মতো; এরা সংসারের হাল ধরতে গিয়ে সারাটি জীবন শুধু অক্লান্ত পরিশ্রম করেই যান। দিনশেষে তার সংসারে কোনো শান্তি নেই। এতটুকুও কোনো সম্মান নেই! এটাও দেখেছি কোনো কোনো নারী স্বামীকে ভালোবাসার ক্ষেত্রেও ছলনা করে অনেক জায়গায়। উপরে একরকম আর ভেতরে তার রূপ সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। এই জন্যই যুগ যুগ ধরে পুরুষের দৃষ্টিতে নারী হয়ে উঠেছে ছলনাময়ী। এই কথার বিরোধিতা করা যদিও আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কেননা সব নারী যে এক নয়, এটা বুঝাতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। যুক্তির চেয়ে বাস্তবে পা রাখতে হবে সত্যতা প্রমাণের জন্য।

নারী ও পুরুষ দু’জন দু’জনের পরিপূরক হলেও কিছু কিছু মানুষের জীবন পাঠ করলে বুঝা যায়, তারা কতটা কষ্টে আছেন। না তারা গিলতে পারছে, আর না উগরে ফেলতে পারছে। এই জীবনে সে পুরুষের কষ্টের শেষ নেই, যারা পাশের সঙ্গীটিকে উত্তম মানুষ হিসেবে পাননি, ভারাক্রান্ত হৃদয়টা চুরমার হতে হতে একসময় ক্লান্তিতে চোখ বোজে সেসব পুরুষ। এমন পুরুষের জন্য সত্যি মায়া হয়। চোখের সামনে দেখা মিলল জীবনে এমন অনেক ঘটনা। কোথাও স্বামী ভালো হলে স্ত্রী খারাপ হয়, আবার কোথাও স্ত্রী ভালো হলে স্বামী তার বিপরীত হয়। এটাই বর্তমান সমাজের চিত্র।

আবার নারীও যেন ঠিক তেমন, যে নারী উত্তম একজন জীবনসাথী পাননি, তারও কষ্টের শেষ নেই এই ছোট্ট জীবনে। এমন কিছু নারীর গল্পও জানি। দেখেছি নারীদের নিজস্ব কিছু সংগ্রামের জীবন। নারীর ভাগ্যে উত্তম সঙ্গী মেলাও অনেকসময় ভার। কিছুদিন আগে, ফেসবুকের আমার ফলোয়ার লিস্টের এক নারী খুব কাকুতি-মিনতি করে আমার সাথে তার জীবনের কিছু কথা বলতে চাইল। প্রথমে কথা বলতে ইচ্ছে পোষণ করিনি, পরে ভাবলাম দেখি কী বলতে চায় সে। তারপর তার সাথে এক কলেই আমার এক ঘণ্টা সময় ব্যয় হলো, সময়টা যদিও আমার খুব মূল্যবান ছিল। তবুও শুনলাম তার জীবনের করুণ কাহিনী। কিছু কথা শুনে মনে মনে ভাবলাম এমনও হয় মানুষের জীবন! তাকে সমাধানের কিছু পথ বাতলে দিলাম। ভীষণ অদ্ভুত তার জীবন। তবুও সংসারে কেটে যাচ্ছে এক অমানুষের সাথে দীর্ঘ ২০টা বছর। আবার এমন নারীকেও আমি দেখেছি, যার স্বামী তার দ্বিতীয় পক্ষের বউয়ের সাথে রং-তামাশায় লিপ্ত আছে তারই চোখের সামনে অথচ সে কিছুই করতে পারছে না।

জীবন খুব সুন্দর এটা যেমন আমরা সবাই জানি, তার চেয়েও জীবন কারো কারো কাছে নরকতুল্য! কেননা জীবনে একজন উত্তম সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে একবার ভুল করেছে, সে তার জীবনটাকে ঠেলে দিয়েছে স্বেচ্ছায় নরকের দিকে। নারী-পুরুষ সে নরকে জ্বলছে সারা জীবন। কখনো কারো কারো ক্ষেত্রে মিরাক্কেল ঘটে, দু’জন উত্তম জীবনসঙ্গী এক হয় স্রষ্টার নির্দেশে। তাদের জীবনটা আসলেই সোনায়-সোহাগা! এমন ভাগ্য হাতেগোনা কয়েকজন পাওয়া যাবে। সংসার এক কঠিন যাত্রা, এখানে পা ফেলতেও খুব সাবধানে ফেলতে হয়। স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই মানিয়ে চলার অভ্যাস করতে হয়, শুধু স্ত্রী খারাপ হলে যে স্বামী মানিয়ে চলবে আবার স্বামী খারাপ হলে যে স্ত্রী মানিয়ে চলবে তা কিন্তু নয়; দু’জনকেই মানিয়ে চলার জন্য মন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তবেই ভালো একটা সংসারের আশা করা যায়।

আমি এমনও মানুষ দেখেছি আমার এতটুকু জীবনে, যারা শুধু সমাজের ভয়ে আর সম্মান রক্ষার্থে একই সাথে কাটিয়ে দিচ্ছেন বছরের পর বছর একই ছাদের নিচে। মূলত তাদের মধ্যে কোনো প্রেম নেই, ভালোবাসা নেই, একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাও নেই! অথচ কী অদ্ভুত এক কষ্ট বুকে চেপে কাটিয়ে দিচ্ছেন একসাথে। যেখানে সংসারের নিয়মই হলো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর সম্মান থাকবে। সেখানে জীবন অসার। দাম্পত্য কলহের মূল হলো এই বিষয়গুলো। স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই মানিয়ে চলতে হবে। শ্রদ্ধা ও সম্মান রাখতে হবে। একই রাজ্যে দুই নেতা হলে উভয়ে নেতৃত্ব দিতে গেলে ভুলবোঝাবুঝি ও তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হবে, তাই নেতা একজন থাকলেই সংসারে মঙ্গল হবে। শান্তি আসবে। সংসার হবে এক সুখের ঠিকানা।
চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
গজারিয়ায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ভারতীয় পেসার বরুন ঘোষণাপত্রে সবার আগে স্বৈরাচার হাসিনার বিচার দেখতে চায় জনগণ : সারজিস পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি : উপদেষ্টা মাতৃভূমিতে নারী শিক্ষা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন মালালা দোহারে ব্যাচ-৭৫ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান খুলনাকে ১৭৯ রানের টার্গেট দিলো রাজশাহী ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে জুলাই অভ্যুত্থানের ৬ বেওয়ারিশ লাশ পলাতক ওসি শাহ আলমকে গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি নতুন বছরে মাঠে নামতে মায়ামিতে মেসি ফকিরহাটে লখপুর গ্রুপের ১৭ শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি শ্রমিকদের

সকল