০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, empty
`

আখেরি জামানার মানবীয় পয়গাম্বর

-


দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার দুই দশক পূর্তি এ লেখার উপলক্ষ। আমি নয়া দিগন্ত পরিবারের সবার প্রতি একরাশ শুভেচ্ছা জানাই এবং এ পত্রিকার সার্বিক সাফল্য কামনা করি। নয়া দিগন্ত হচ্ছে প্রিন্ট মিডিয়া বা ছাপা কাগজের পঙক্তিভুক্ত। এই মিডিয়া সার্বিক দিক থেকে আজ অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জের মুখে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাথে তাকে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়ার পাঠক সংখ্যা এ প্রতিযোগিতায় কমছে এবং বিজ্ঞাপনী আয়ের অংশীদার বেড়েছে। ছাপা কাগজের উপকরণের দাম ও অন্যান্য ব্যয়ও ক্রমাগত বাড়ছে কিন্তু পত্রিকার বিক্রয় মূল্য তার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ানোর সুযোগ নেই

ফার্সি ও উর্দু ভাষায় আল্লাহর নবী ও রাসূলদের পয়গাম্বর বলা হয়। তাঁরা আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ। জিবরাইল ফেরেশতা মারফত পাওয়া আল্লাহর বাণী তাঁরা মানুষের মধ্যে প্রচার করেন। অর্থাৎ তাঁরা আল্লাহর পয়গাম বা বার্তা বহনকারী এবং আল্লাহই তাদের এ কাজে মনোনীত করেন।
পয়গাম্বর আল্লাহর তরফ থেকে পাওয়া একটি ধর্মীয় দায়িত্ব। এই পয়গাম্বরের মর্তবা অনেক। আল্লাহ মনোনীত করেননি এমন কাউকে পয়গাম্বর বললে রক্ষণশীল মুসলিম সমাজে তা ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার মতো গুরুতর অপরাধ বলে মনে করা হতে পারে। অথচ প্রাচীনকালে পারস্য অধিপতিদের শাহী পয়গাম যারা বয়ে নিয়ে যেত তাদের পয়গাম্বর বলা হতো। ইসলাম আসার পর সেই পয়গাম্বর শব্দটি নবী-রাসূলের প্রতিশব্দ হিসেবে ফার্সি ভাষায় ব্যবহার হতে থাকে।
এখন আখেরি জামানা। এই জামানার জন্য আল্লার সর্বশেষ নবী বা রাসূল এসে গেছেন অনেক আগেই। নবুওয়তের ধারা খতম হয়েছে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা সা:-এর মাধ্যমে। তিনি খাতামুন্নাবিয়্যিন- অর্থাৎ নবীকুলের সিলমোহর, শ্রেষ্ঠ নবী এবং সর্বশেষ নবী। কাজেই আল্লাহর মনোনীত পয়গাম্বর আসার দরোজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন মানবীয় খবর ও বার্তা নিয়ে যারা আসবেন তারা আল্লাহর পয়গাম্বর নন, রাজা বাদশাহর পয়গাম্বরও নন, তারা এই আখেরি জামানায় সাধারণ মানুষের পয়গাম্বর।

এখনকার এই বার্তাবাহক বা পয়গাম্বর হচ্ছে মিডিয়া বা গণমাধ্যম- রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র, ইন্টারনেট ও সাংবাদিকরা। এর পাশাপাশি আছে এখন সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিকমাধ্যম। এই মাধ্যমের খুব জনপ্রিয় সাইটগুলোতে আছে মেসেঞ্জার। এই মেসেঞ্জার কিন্তু প্রোফেট বা নবী নয়। কিংবা ট্রিনিটি বা ত্রিত্ববাদী খ্রিষ্ট ধর্মানুযায়ী হোলি ঘোস্ট বা গ্যাব্রিয়েলও নয়। এই মেসেঞ্জারের একমাত্র কাজ দু’পক্ষের মধ্যে ব্যক্তিগত বার্তা আদান-প্রদান। এসবের কোনো কিছুই বা কেউই আল্লাহর নবী বা রাসূল নয়; বরং মানবীয় পয়গাম্বর বলা চলে।
পাকিস্তানি জামানায় আইয়ুব শাসনামলে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বহুল আলোচিত গভর্নর ছিলেন মোনায়েম খাঁ। তিনি ঢাকা থেকে একটি বাঙলা দৈনিক পত্রিকা বের করতেন। সেটির নাম ছিল দৈনিক পয়গাম। বাংলাদেশ হওয়ার পর পত্রিকাটির নাম বদল করে দৈনিক স্বদেশ করা হয়। সরকার এর মালিকানা অধিগ্রহণ করে কোরবান আলীকে প্রশাসক নিয়োগ করে। শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় বাকশাল পদ্ধতি প্রবর্তনের পটভূমিতে সরকার নিয়ন্ত্রিত চারটি বাদে সব দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করলে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন পত্রিকাটি চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
আমি সেই ‘পয়গাম’কে এবং এতে কর্মরত সাংবাদিকদের আখেরি জামানার পয়গম্বরের আদর্শ হিসেবে মেনে নেয়ার কথা বলছি না। পয়গম্বর কথাটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমার অতি উৎসাহের কারণ হচ্ছে- শব্দটিতে মিশে আছে ধর্মীয় পবিত্রতার সৌরভ। সব ধরনের সাংবাদিকতায় এই পবিত্রতার দ্যোতনাটুকু থাকা দরকার বলে আমার মনে হয়।

মানুষ হচ্ছে হায়ওয়ানুন্নাতেক, বাকশক্তিসম্পন্ন প্রাণী। বাকশক্তি থাকার কারণে সে কথা বলতে এবং এই কথার মাধ্যমে অন্যের সাথে বার্তা ও ভাবের আদান-প্রদান করতে পারে। অন্য প্রাণীর এই আদান-প্রদানের সামর্থ্য খুবই সীমিত। মানুষ বিভিন্ন ইঙ্গিত, অঙ্গভঙ্গি, চিত্র প্রদর্শন ও আওয়াজ উচ্চারণের মাধ্যমে এই ভাবপ্রকাশ ও বার্তা দেয়ার কাজ শুরু করে। মানুষের উচ্চারিত ধ্বনি তার জবানে পরিণত হয়। আর ইঙ্গিত ও চিত্র থেকে উদ্ভাবিত হয় বর্ণমালা। বর্ণমালাই ভাব ও বার্তা আদান-প্রদানের লিখিত মাধ্যম হয়ে ওঠে। আর এই দুইয়ে মিলে সৃষ্টি হয় মানুষের ভাষার। এই ভাষার দু’টি ফর্ম হচ্ছে উচ্চারিত বা অডিও এবং লিখিত। এই ভাষা আবিষ্কার হওয়ার বা আল্লাহ মানুষকে এই ভাষা শিক্ষা দেয়ার সাথে সাথে মানবসভ্যতা এক ঝটকায় সহস্র বছর এগিয়ে গেছে।
ভাব ও বার্তা আদান-প্রদান, নিজেকে প্রকাশ ও অন্যকে জানার আকাক্সক্ষা মানুষের সহজাত। সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে মানুষ পর্বতগাত্রে ও বৃক্ষের বাকলে নিজের কথা খোদাই করে নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছে। তার কথা অপরকে জানাতে চেষ্টা করেছে। এখনো নগরীর গণশৌচাগারের দেয়ালে কিংবা কাগজি মুদ্রায় আমরা কত আবেগাক্রান্ত বাক্য দেখতে পাই। যোগাযোগের সব পথ বন্ধ হয়ে গেলে বিরহী প্রেমিক কম্পিত অক্ষরে লিখে রাখে ‘রীনা, আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না -ইতি ফয়সল। তার মনে ক্ষীণ আশা কখনো যদি তার হৃদয়ের এই পরম আকুতি রীনার চোখে পড়ে। কিন্তু ফয়সলদের এই আর্তি বেদনার্ত দীর্ঘশ্বাস হয়ে ভেসে বেড়ায় বাতাসে। তবু মানুষ তার কথা বলতেই থাকে, লিখতেই থাকে যখন যেখানে যে সুযোগ পায়।
শুধু নিজেকে জানাতে নয়, অন্যকে জানতেও মানুষের কৌতূহল প্রবল। সে তার চারিপাশকে, তার সমাজকে, তার দেশকে এবং তার জগৎকে জানতে চায়। এই জানার আকাক্সক্ষাই মিডিয়া ও সাংবাদিকতাকে অনিবার্য করে তুলেছে।

এই মিডিয়া বা সাংবাদিকতা কী জানাবে বা কতটুকু জানাবে তা নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে বিতর্ক। কেউ বলছেন, সবটা জানাতে হবে। যা ঘটছে তার পুরোটা, পুরো সত্যটা জানাতে হবে। সে সত্য যত উলঙ্গ, মন্দ, নিষ্ঠুর হোক। যা দেখব বা শুনব, কোনো কাটছাঁট ছাড়া তাই লিখব বা বলব। তাদের কথা সাংবাদিকতার কোনো এথিক্স, নর্ম, নীতি-নৈতিকতা বা আদর্শ থাকবে না, দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ থাকবে না, সীমানা থাকবে না, দেশপ্রেম, জাতীয় স্বার্থ ও দায়িত্ববোধ থাকবে না। যা সত্য তাই তুলে ধরতে হবে, তাতে যার লাভ কিংবা যারই ক্ষতি হোক।
এই মত সময়ের ধোপে অনেক পরিশীলিত হয়েছে। নৈতিকতা ও অন্যান্য মূল্যবোধের ভিত্তিতে নির্ণীত হয়েছে সাংবাদিকতার পরিসীমা বা বাউন্ডারি। এ জন্য একালে তথ্য কোনো সংবাদ নয়; বরং সংবাদের কাঁচামাল। এই তথ্য সম্পাদিত বা এডিটেড হয়েই সংবাদে উন্নীত হয়। এই সম্পাদনা সত্যকে গোপন বা বিকৃত করার জন্য নয়; বরং হীরে কাটার মতো করে সত্যকে আরো দ্যুতিময় করে তোলাই এই সম্পাদনার লক্ষ্য। এই সম্পাদনার মাধ্যমে অসংখ্য ঘটনার মধ্য থেকে জানার জন্য প্রয়োজনীয় সত্যটুকু বাছাই ও নির্বাচন করা হয় এবং এক্ষেত্রে আদর্শ, নৈতিকতা, দায়িত্বশীলতা, পরিমিতিবোধ ও সর্বোপরি জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় রাখা হয়। আর এসব কারণেই এই আখেরি জামানায় মিডিয়া ও সাংবাদিকতা কেবল তথ্য ও ঘটনার বিবরণ নয়, কেবল সংবাদ পরিবেশকই নয়, তাদের কাজের মধ্যে থাকে একটি মেসেজ, একটি কল্যাণের বার্তা। এই পবিত্র কর্তব্যের কারণে সাংবাদিকতা এখন বার্তাবাহক, সত্যিকারের মেসেঞ্জার ও নবুয়ত শেষ হওয়ার পর আখারি জামানার মানবীয় পয়গাম্বর।

প্রাচীন পারস্য সাম্রাজ্যে পয়গাম্বরের মতোই খুব কাছাকাছি পেশার আরেক দল লোক ছিলেন। তারা শাহী ফরমান বা রাজাদেশ বহন করতেন এবং তা কার্যকর করতেন। এদেরকে বলা হতো ফরমাবরদার। এই আখেরি জামানাতেও আমরা দেখি পয়গাম্বর হওয়ার বদলে অনেক সাংবাদিক ফরমাবরদার হয়েছেন। ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শাসনকালে সাংবাদিক নামধারী এই সব ফরমাবরদারের সাথে আমাদের চাক্ষুষ পরিচয় হয়েছে। পয়গাম্বরদের থেকে এই ফরমাবরদারদের পৃথক করতে হবে, আলাদা রাখতে হবে। না হলে নৈতিকতা ও জনস্বার্থ দুই-ই কোরবান হয়ে যাবে।
দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার দুই দশক পূর্তি এ লেখার উপলক্ষ। আমি নয়া দিগন্ত পরিবারের সবার প্রতি একরাশ শুভেচ্ছা জানাই এবং এ পত্রিকার সার্বিক সাফল্য কামনা করি। নয়া দিগন্ত হচ্ছে প্রিন্ট মিডিয়া বা ছাপা কাগজের পঙক্তিভুক্ত। এই মিডিয়া সার্বিক দিক থেকে আজ অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জের মুখে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাথে তাকে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়ার পাঠক সংখ্যা এ প্রতিযোগিতায় কমছে এবং বিজ্ঞাপনী আয়ের অংশীদার বেড়েছে। ছাপা কাগজের উপকরণের দাম ও অন্যান্য ব্যয়ও ক্রমাগত বাড়ছে কিন্তু পত্রিকার বিক্রয় মূল্য তার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ানোর সুযোগ নেই।

অপর দিকে, সোস্যাল মিডিয়ায় এখন দ্রুত সব খবর চলে আসছে। ফলে ধীরগতির ছাপা পত্রিকার সংবাদ পাঠকের হাতে বাসি বা পুরনো হয়ে আসছে। তা ছাড়া পরিবেশ সচেতনতার এ সময়ে ছাপা কাগজকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলেও বিবেচনা করা হচ্ছে।
বাস্তব এসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রিন্ট মিডিয়ার ১ নম্বরের হাতিয়ার হবে কোয়ালিটি। অর্থাৎ পেশাগত নৈপুণ্য, সৌকর্য ও সুচারুতার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দর্শনধারী ও গুণবিচারি, দু’দিক থেকেই সেরা হতে হবে। সংবাদ বাছাই ও গুরুত্ব নির্বাচন, ভাষার কারুকাজ ও সুখপাঠ্যতা, সম্পাদনার দক্ষতা, উপস্থাপনার চমৎকারিত্ব, শিরোনামের আকর্ষণীয়তা, অঙ্গসজ্জার নান্দনিকতা রক্ষায় আধুনিক ও চৌকস হতে হবে।
মানুষ এখন ব্যস্ত ও ধৈর্যহারা। তাই স্টোরি বর্ণনায় ধীরগতি ও দীর্ঘসূত্রতা বাদ দিতে হবে। ওয়ার্ড ইকোনমির ওপর জোর দিতে হবে এবং সময়ের সাথে লড়াইয়ে জিততে হবে। বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনতে হবে।

মহাস্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষের প্রকৃতি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবগত। তাই তিনি তার আসমানি কিতাবও ছন্দোময় ও ভাষার লালিত্যে সমৃদ্ধ করে নাজিল করেছেন। নবী-রাসূলদেরকে তিনি ভাষার ওপর অপরিসীম পাণ্ডিত্য দিয়ে ও বাগ্মিতায় পারদর্শী করে পাঠিয়েছেন। না হলে তাদের পক্ষে হেদায়েত করা কঠিন হতো এবং তাদের অনাকর্ষণীয় ভাষণের প্রতি মানুষ বিমুখ হয়ে পড়ত।
নবী মুসা আলাইহিস সালামের বাগ্মিতা শক্তি ছিল না। শৈশবে মিসরের ফারাওয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে তিনি জ্বলন্ত অঙ্গার মুখে পুরেছিলেন। এতে তাঁর জিহ্বা পুড়ে যায়। ফলে তিনি সাবলীলভাবে অনর্গল কথা বলতে পারতেন না। এই সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর ভাই হারুন আলাইহিস সালামকেও একই সাথে আল্লাহ নবুয়ত দিয়েছিলেন। তিনি ওজস্বী ভাষণ দিতে পারতেন। যেখানে আসমানি কিতাবগুলো ও নবীদেরকেও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে শিল্পসুষমা ও নান্দনিকতাকে গুরুত্ব দিতে হয়েছে, সেখানে গণমাধ্যমের পক্ষে সৌন্দর্য ও নৈপুণ্যকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
আর্টের পাশাপাশি প্রিন্ট মিডিয়াকে আরেকটি দিক দিয়ে ‘লেভারেজ’ নিতে হবে, সেটি হচ্ছে ‘অ্যাকুরেসি’ বা তথ্যের নির্ভুলতা। সোস্যাল মিডিয়ায় কোনো রকম যাচাই-বাছাই ও সম্পাদনা ছাড়াই খবর প্রচার করা হয়। এতে বিকৃত ও ভুল তথ্য এবং ফেক নিউজ হরদম প্রচারিত হতে থাকে। ফলে এ সব নিউজ নির্ভরযোগ্য নয়। প্রিন্ট মিডিয়ার চেক, ক্রসচেক ও রিচেক করে নিশ্চিত হয়ে সংবাদ পরিবেশনের সুযোগ আছে। ফলে তারা বিশ্বাসযোগ্যতায় সোস্যাল মিডিয়াকে হারিয়ে দিতে পারে।

প্রতিটি ছাপা কাগজকে প্রতিযোগিতায় টেকার জন্য এখন ইন্টারনেট এডিশনকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং এর জন্য দক্ষ টিম লাগবে। ছাপা কাগজের কেবল প্রভাতী ও নগর সংস্করণ নয়, প্রয়োজনে মধ্যাহ্ন, অপরাহ্ন ও সান্ধ্য সংস্করণ বের করতে হবে। আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ও অঞ্চলকেন্দ্রিক বিশেষ সংখ্যা বের করতে হবে। সাক্ষাৎকার, মতামত ও বিশ্লেষণ এবং ফিচার পাতাগুলোকে খুব মানসম্পন্ন করে ইলেকট্র্রনিক মিডিয়া ও সোস্যাল মিডিয়াকে টক্কর দিতে হবে।
আরো অনেক উপদেশ দেয়া যেত কিন্তু আলখেল্লাধারী বুড়ো দরবেশের মতো এত উপদেশে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটার সমূহ সম্ভাবনা থাকায় বাধ্য হয়ে এখানেই ইতি টানতে হচ্ছে।
আমার কথা ফুরাল, তবে নটে গাছটা মুড়াবার আগে শেষ কথাটা বলে যেতে চাই, আধুনিকতা ও স্মার্টনেসকে এতটা ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে যে, গণমাধ্যমের কোনো কিছুই যেন ঘূর্ণাক্ষরেও পাবলিসিটি মনে না হয়। আর জাতি হিসেবে আমরা এখন যে ক্রান্তির সময়ে পা রেখেছি সেই সময়ে গণমাধ্যমের সচেতন ও বলিষ্ঠ ভূমিকা অপরিহার্য প্রয়োজন হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই কথাটা যেন আখেরি জামানার মানবীয় পয়গাম্বরেরা কেউ ভুলে না যায়।
লেখক : সাংবাদিক, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব

 

 


আরো সংবাদ



premium cement