২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লেখালেখির জন্য পনেরোটি টিপস

-

লেখালেখি সৃজনশীল বিষয়। ভেতর থেকে লেখা চলে আসে। আবার আইডিয়া মাথায় এলে লিখতে বসেন। কলম ধরলেই লেখা চলে আসে। ভাব না এলে একটি শব্দও লিখতে পারেন না। এ রকম বিভিন্নভাবে লেখালেখির শুরু হতে পারে। একেকজনের জন্য একেকটা প্রযোজ্য। সৃজনশীল হলে লেখালেখিতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। এমন কিছু করণীয় আছে। যেটা মানলে লেখা সমৃদ্ধ হবে। পাঠক হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। সে রকমই কিছু টিপস দেয়া হলো।
এক. প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখুন। এক লাইন হলেও লিখুন। গল্পের বই সেটা যারই হোক। সময় পেলেই বসে পড়–ন। লেখালেখিতে ভালো করতে হলে প্রচুর পড়তে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। বলতে পারেন, যা পড়েন তা ভুলে যান। আসলে ভুলে যান না। অবচেতন মন শব্দগুলো মাথায় রাখে। যখন লিখবেন তখন যুৎসই শব্দ চলে আসবে।
দুই. কোথাও লেখা ছাপা হোক বা না হোক লিখে যেতে হবে। কেউ কেউ সমালোচনা করবে। গঠনমূলক সমালোচনা উপকারী। সমালোচনা শুনে থেমে গেলে চলবে না।
তিন. পত্রিকায় লিখতে চাইলে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পড়তে হবে। ই-পেপার বিনামূল্যে পড়া যায়। মনে রাখবেন, ইনপুট সমান সমান আউটপুট।
চার. আপনি আসলে আপনার লেখাটা কোথায় পাঠাতে পারেন সেটা কেবল পত্রিকা পড়লেই বুঝতে পারবেন। যে পাতায় লেখা পাঠাবেন সে পাতা ভালো করে পড়তে হবে।
পাঁচ. ছোট বাক্য ও সহজ শব্দে লিখুন। নিজের লেখা বারবার পড়ুন। কেটে ছেঁটে ঠিক করুন। এক জনপ্রিয় লেখক তার উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠা ৯৯ বার লিখেছেন।
ছয়. লেখার শুরুটা আকর্ষণীয়ভাবে করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন লেখা যত ছোট হবে ছাপার সম্ভাবনা তত বেশি। বাহুল্য পরিহার করতে হবে। যতটুকু না বললেই নয় ততটুকু বলতে হবে।
সাত. নিজের লেখা আশপাশের মানুষদের পড়তে দিন। তাদের মতামত জানুন।
আট. আপনাকে এক বস্তা বালু আর সিমেন্ট দেয়া হলো। আপনাকে জানতে হবে এগুলো কোনটা কী পরিমাণে মেশালে গাঁথুনি মজবুত হবে। লেখাও তেমনি ব্যাপার। কোথায় আবেগ থাকবে। কোন শব্দ কোথায় যুৎসই এটা বুঝতে হবে।
নয়. বাহুল্য পরিহার করুন। পত্রিকায় লেখা ছাপা হলে পাঠানো লেখার সাথে মিলিয়ে দেখুন। কোথায় সম্পাদনা করা হয়েছে। কোন ভুলগুলো শুধরে দেয়া হয়েছে।
দশ. খুব সুন্দরী একটি মেয়েকে ছেড়া কাপড় পরিয়ে বসিয়ে রাখলে কেমন লাগবে বলুন তো? তেমনি লেখার মধ্যে সঠিক উপযোগী ইনফরমেশন না থাকলে লেখা শক্ত হয় না। সুন্দর হয় না। লেখার প্রাসঙ্গিক যাবতীয় ইনফরমেশন সংগ্রহ করে বারবার যাচাই করুন। অনেক দুর্বল লেখাও শক্ত ইনফরমেশন থাকার কারণে অনেক সময় পাড় পেয়ে যায়।
এগারো. সব সময় পকেটে কাগজ কলম রাখুন। যখনই মাথায় কোনো আইডিয়া আসবে লিখে ফেলুন। এমনো হয় বাথরুমে বসে একটা লাইন মাথায় এলো। আপনি লিখে রাখলেন। পরে এক লাইনের লেখা ১০০ লাইন হয়ে গেল। কলম চলতেই থাকল।
বারো. মাথার কাছে একটা বাংলা অভিধান রাখুন। বানান ভুল পরিহার করতে হবে।
তেরো. মনের ওপর জোর খাটাবেন না। যে বিষয় লিখে আনন্দ পান সেটা নিয়েই লিখুন। সে বিষয়ে গুগুল সার্চ করে কয়েক শত লেখা পড়ে নিন। যে যত সমৃদ্ধ তার লেখা তত ভালো হয়।
চৌদ্দ. ফেসবুকে অনেক বড় লেখক পত্রিকায় এক ইঞ্চি জায়গাও পান না। ফেসবুক গ্রহণযোগ্য লেখালেখির মাধ্যম নয়। পত্রিকায় লেখা মানে লক্ষাধিক মানুষের পড়া। একজন অতি উচ্চপর্যায়ের সম্পাদক কখনো কখনো একাধিক সম্পাদক দ্বারা সম্পাদিত। তাই ফেসবুকের লাইক দিয়ে নিজেকে বিচার করবেন না।
পনেরো. লেখালেখি কঠিন সাধনা এবং লেগে থাকার বিষয়। একসময় আপনার একটি লেখাও ছাপা হবে না। আবার এমন একসময় আসবে সম্পাদকরা ফোন করে আপনার কাছ থেকে লেখা চেয়ে নেবে। এটাই বাস্তবতা।
নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন।
আপনি পারবেনই।
একদিন না একদিন।


আরো সংবাদ



premium cement