ফিট থাকার রহস্য কাভার ষ্টোরি
- সুমনা শারমিন
- ৩০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
নিজেকে সুন্দর দেখাক তা কে না চায়? আর এ সৌন্দর্য যদি দীর্ঘ দিন ধরে রাখা যায় তাহলে তো কথাই নেই! চলুন জেনে নেয়া যাক চিরসবুজ থাকার কিছু সহজ উপায়। দীর্ঘ দিন তারুণ্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন অনেক কিছু। সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যকর খাবার, হাঁটাচলা, ব্যায়াম, পজিটিভ চিন্তা করা, মনকে প্রফুল্ল রাখা আর এসব কিছুর পাশাপাশি রূপচর্চা তো রয়েছেই।
প্রতিদিনই মানুষের একটু একটু করে বয়স বাড়ে, বিশেষ করে ২৫ বছর বয়সের পর থেকে ত্বকে তার প্রভাব পড়তে শুরু করে। তবে এটা কিন্তু কোনো দুঃসংবাদ নয়। পরিবর্তন ও বিকাশ এটাই প্রকৃতির নিয়ম। শরীর, ত্বক, মন অর্থাৎ পুরো মানুষটিই বদলায় ধীরে ধীরে। বয়সের সাথে পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক, তবে তাতে সৌন্দর্য হারাতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বয়সের সাথে ত্বক পাতলা ও শুষ্ক হয়। তাই এমন ক্রিম বা কসমেটিক ব্যবহার করতে হবে যাতে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘ই’ থাকে। বয়স যতই হোক না কেন, সময়ের সাথে কিছুটা তাল মিলিয়ে চলা বেশ প্রয়োজন। নিজেকে তরুণ ভাবা এবং সব বিষয়ে আপডেট থাকা অবশ্যই এ ক্ষেত্রে একটা বড় ব্যাপার।
ত্বকের যতœ
চর্ম বিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে দূরে রাখা প্রয়োজন। এতে যে ত্বক সহজে বুড়িয়ে যায় তা নয়, এর ফলে ত্বকে ক্যান্সারও হতে পারে। তা ছাড়া আজকাল পরিবেশ দূষণও ত্বকে বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে। তাই যতটা সম্ভব দূষণ থেকে নিজেকে দূরে রাখা এবং বাইরে থেকে ফিরে গোসল বা ভালো করে হাত-মুখ ধোয়া উচিত।
ভেষজ কসমেটিক
বর্তমানে সৌন্দর্য চর্চায় আবার আগের ট্রেন্ড ফিরে এসেছে, অর্থাৎ গাছগাছালির পাতা, রস, শেকড় ইত্যাদির তৈরি ভেষজ ক্রিম, পাউডার, তেল নানা কিছু এসে গেছে বাজারে। সৌন্দর্য পিপাসু অনেকেই আজকাল তাই সে দিকেই ঝুঁকছেন।
খাওয়া-দাওয়া
সুস্থ আর সুন্দর থাকতে খাওয়া-দাওয়ার ভূমিকা অনেক। মানুষের শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, শর্করা, মিনারেল এগুলোর দরকার। সব কিছুই খাওয়া উচিত, তবে একটা পরিমিতিবোধ থাকতে হবে। প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল খাবার তালিকায় থাকা প্রয়োজন। সৌন্দর্য চর্চা বা তারুণ্য ধরে রাখতে গ্রিন-টি বা সবুজ চায়ের জুড়ি নেই। এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। নিয়মিত গ্রিন-টি পান শরীরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মুখ হচ্ছে শরীরের আয়না। অর্থাৎ শরীরের ভেতরটা ভালো থাকলে চোখে-মুখে তার প্রভাব তো পড়বেই। যারা শরীর নিয়ে একটু ভাবনার মধ্যে আছেন অর্থাৎ যারা মুটিয়ে গেছেন তাদের অবশ্যই খাবারের পরিমাণ এবং ক্যালরির দিকে নজর দেয়া উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম
শুধু সুন্দর মুখ আর টান টান ত্বকই তারুণ্যের চাবিকাঠি নয়। শরীরটাও থাকতে হবে টান টান আর সে জন্য চাই নিয়মিত কিছুক্ষণ শরীরচর্চা বা ব্যায়াম এবং মুক্ত বাতাস সেবন। শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট থাকার জন্য বছরে অন্তত একবার ‘মেডিক্যাল চেকআপ’ করিয়ে নেয়াও অত্যন্ত দরকারি। আমরা যারা স্বাভাবিক কাজকর্মের মধ্যে থাকি তারা সব সময় ব্যায়ামের দিকে খুব একটা নজর দেই না। কিন্তু শরীরটা তো ঠিক রাখা চাই। তাই নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম একজন সুস্থ মানুষের খুবি জরুরি। শরীরে বাড়তি মেদ ঝরাতে আপনার সিদ্ধান্তই আসল। আপনি চাইলেই আপনার ওজন নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। শরীরে জমে থাকা বাড়তি মেদ ঝরাতে আপনাকে কী করতে হবে? পোড়াতে হবে ক্যালরি। যত ক্যালরি বাড়তি খাচ্ছেন প্রতিদিন, ততখানি ঝরিয়ে ফেলতে পারলেই বাড়বে না ওজন।
পজিটিভ চিন্তা
যথেষ্ট ঘুম, অপ্রয়োজনীয় স্ট্রেস এড়িয়ে চলুন। অ্যালকোহল, ধূমপান পুরোপুরি ছেড়ে দিন আর দিনে অন্তত একবার প্রাণ খুলে হাসুন। প্রচুর বই পড়–ন, গান শুনুন। প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক রাখুন, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে পারলে অন্যের উপকার করার চেষ্টা করুন। তবে সে জন্য চাই সুন্দর একটি মন। আর সুন্দর মনের অধিকারী হতে পারলে তারুণ্য যে আপনার হাতের মুঠোয়!
এভাবেই চলুক আগামী কিছু দিন তার পর নিজেই দেখবেন আপনার এনার্জি লেভেল কত বেড়েছে। আপনি কতটা ঝরঝরে অনুভব করছেন। আমাদের অন্তরের বিশ্বাসই আমাদের লক্ষ্য অর্জনের মূল হাতিয়ার। তাই বিশ্বাস করুন নিজেকে, আর ভালোবাসুন নিজের কাজকে।