ঐতিহ্যের খাবার : রঙের ফিচার
- শওকত আলী রতন
- ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
বাঙালি জাতির বাঙালিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায় দেশীয় তৈরি নানা ধরনের জিনিসপত্রে। খাবারের ক্ষেত্রেও রয়েছে বাঙালির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। আমাদের দেশের গ্রামীণ মেলাগুলোতে ঐতিহ্যবাহী বেশ কিছু সুস্বাদু খাবারের দেখা মেলে।
খাবারের জন্যই মূলত মেলাগুলো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের নজর কাড়ে। চিরায়ত বাংলার এসব খাবারের সাথে কমবেশি পরিচিতি রয়েছে আমাদের। মেলা ঘুরে দেশীয় এসব খাবারের স্বাদ না নিয়ে ঘরে ফেরেন এমন মানুষের খুুঁজে পাওয়া যাবে না। গ্রামীণ মেলায় গিয়েছেন কিন্তু মুড়ি মুড়কি, বিন্নি বাতাসা আর পাপড় কেনেন না সেটা খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। বিশেষ করে বৈশাখী মেলায় দেশীয় সব খাবারের বিপুল সমাহার দেখা যায়। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের লোক ও কারুশিল্প মেলা, রাজধানীর বাংলা একাডেমির বৈশাখী মেলা ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোগে আয়োজিতসহ গ্রামীণ মেলায় নানা স্বাদের খাবার পাওয়া যায়। নানা স্বাদের খাবারের মধ্যে বিশেষ করে শনপাপড়ি, বাদামি, লাড্ডু, নুকুল দানা, মুড়ি মুড়কি, নিমকি, মদন মুরালি, বাতাসা, নারকেলের নাড়–, নারকেল ভাজা, তিলের খাজা, মুড়ির মোয়া, চিঁড়ার মোয়া, মনেক্কা, রসমণ্ডল, বিন্নি ধানের খই, কদমা ও চিনির খেলনা, গুড়ের বাতাসা ইত্যাদি।
এক সময় এগুলো পুরোপুরি হাতের সাহায্যে তৈরি হলেও এখন বেশ কিছু আইটেমের খাবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেশিনে প্রস্তুত হয়ে থাকে। খাবারের গুণগতমান আগের চেয়ে ভালো হওয়ায় ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে কিনছেন।
রাজধানীর অভয় দাস লেনের বিক্রেতা মো: নুর আলম জানান, হরেক রকম খাবারের পসরা সাজিয়ে আমরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান গাড়ি দিয়ে বিক্রি করে থাকি। দিন দিন এসব খাবারের ক্রেতা বাড়ছে। শখের বশে খাবারগুলো একবার কেনার পর দেখা যাচ্ছেÑ পুনরায় তারা কিনছেন। তিনি জানান, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে শাহবাগ, টিএসসি ও দোয়েল চত্বরের সামনের রাস্তায় নিয়ে বিক্রি করে থাকি।
সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত বাংলা একাডেমি চত্বরের বৈশাখী মেলায় প্রতি বছর ঐতিহ্যবাহী নানা খাবার নিয়ে আসেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা জানান, বৈশাখী মেলায় হরেক রকম পণ্যের ক্রেতার পাশাপাশি খাবারের ক্রেতাও রয়েছে অনেকে। খাবারগুলো আত্মীয়স্বজনের জন্য দেশের বাইরে পাঠিয়ে থাকেন। যার কারণে এই জাতীয় খাবারের চাহিদা রয়েছে। তবে ক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। এসব খাবারের স্থায়ী দোকান না থাকলেও ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা রাজধানীজুড়ে বিক্রি করে থাকেন খাবারগুলো।