ত্বকের সমস্যা মেছতা
রঙের ফিচার- ফাহমিদা জাবীন
- ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
মেছতা ত্বকের সাধারণ একটি সমস্যা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। মেছতা কী এবং কিভাবে একে রোধ করবেন সে বিষয়ে জানা খুবই প্রয়োজন।
মেছতার ধরন : মেছতা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণ মেছতা ও সানবার্ন মেছতা।
সাধারণ মেছতা : এটি আমাদের স্কিন কালারের চেয়ে সামান্য গাঢ়। গোলাকৃতির ও তুলনামূলক ছোট আকৃতির হয়। এই মেছতাগুলোর আকৃতি নখের ডগার মতো হয়।
সানবার্ন মেছতা : মেছতা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি গাঢ় হয়। এটির কোনো নির্দিষ্ট আকৃতি নেই। তবে সাধারণ মেছতার চেয়ে এটি বিস্তৃত হয়।
আরো এক ধরনের মেছতা দেখা যায়, একে লিভার স্পট বলে। লিভার স্পট তাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় যারা জীবনের দীর্ঘ সময় রোদে কাজ করেছেন। এটি সাধারণত বয়সকালেই বেশি দেখা যায়। সে জন্য একে অমব-ঝঢ়ড়ঃও বলা হয়। কিন্তু আসলে এটি লেন্টিগো টাইপ মেছতা বা ঋৎবপশষবং.
মেছতা কী : মেছতা বা ঋৎবপশষবং হচ্ছে ত্বকের ওপর সৃষ্ট এক ধরনের মসৃণ গাঢ় রঙের দাগ, যা সাধারণ গালের উপরি ভাগে, নাকের ডগায়, কাঁধে অথবা বাহুতে হতে পারে। গায়ের রঙ ফর্সা যাদের তাদেরই মেছতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। অনেক ছোট আকৃতির গাঢ় দাগ পাশাপাশি অবস্থান নিয়ে মেছতা সৃষ্টি করে। কোনো কোনো সময় এই দাগগুলো ক্রমাগতভাবে বাড়তেই থাকে। এমনকি শিশুদেরও মেছতা হতে পারে। ব্যক্তিভেদে মেছতার রঙও কিছুটা আলাদা হয়। যেমন লালচে, হলদে, বাদামি, খয়েরি অথবা কালো। ত্বকের স্বাভাবিক রঙের চেয়ে মেছতা অপেক্ষাকৃত গাঢ় রঙের হয়ে থাকে। আর রোদের সংস্পর্শে এসে এই গাঢ়ত্ব আরো বাড়তে থাকে। তবে শীতকালে মেছতা কিছুটা হালকা হয়ে যায়।
মানুষের শরীরে এক ধরনের পিগমেন্ট সেল রয়েছে যা ত্বক বা চুলের রঙ নিয়ন্ত্রণ করে। এগুলোকে বলা হয় মেলানিন। মেলানিন তৈরি হয় সেলানোসাইটিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। যদি কোনো কারণে শরীরে মেলানিন বেড়ে যায় তখন মেছতা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
রোদে বের হলেই সবার মেছতা হবে এমন কোনো কথা নেই। এখানে বংশগত প্রবণতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গবেষণায় দেখা গেছে জেনেটিক টেন্ডেন্সি ও সূর্যরশ্মির কম্বিনেশনে মেছতা তৈরি হয়। কিছু কিছু মানুষের দেহে সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি পড়ার সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য হারে পিগমেন্ট সেল বা মেলানিন বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ত্বকের আউটার লেয়ার হয়ে যায় আগের চেয়ে পুরু। যাদের গায়ের রঙ কালো তাদের সেভাবে মেছতা দেখা যায় না। কারণ কালো বর্ণের ত্বকে সূর্যরশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট এর সেভাবে এফেক্ট করতে পারে না।
সাধারণ মেছতা মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্যকে নষ্ট করে বটে। তবে শরীরের অভ্যন্তরে কোনো ক্ষতি করে না।
কিন্তু কিছু মেছতা আছে যেগুলোকে স্কিন ক্যান্সার হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। যেমন লেনটিগো ম্যালিগনা, মেলানোসা ও ব্যাসাল সেল কারসিনোমা। তবে আর্লি স্টেজে এগুলো ধরা পড়লে নিরাময় সম্ভব।
বিউটি কনসালটেন্ট আমিনা হক বলেন, সাধারণ মেছতার দাগ উঠানোর ক্ষেত্রে পিগমেন্টেশনের ওপর জোর দেই বেশি। যেমন বাইরে গেলে এসপিএফযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা এবং যতদূর সম্ভব কড়া রোদ এড়িয়ে চলা, ব্লিচিং ফেসিয়াল করার ব্যাপারে আমি কাউকে উৎসাহিত করি না। বরং এমন ফেসিয়াল ট্রিটমেন্ট নেয়া উচিত যার মাধ্যমে ভিটামিন-এ-অ্যাসিড, ঢাজোরাক ও ডিফেরিন জাতীয় উপাদানগুলো প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়। তা ছাড়া আলট্রাসনিক ফেসিয়াল থেরাপি করা যেতে পারে। যা কিনা ত্বকের পিগমেন্ট মেলানিনকে নিয়ন্ত্রণ করে।