ঈদের সাজ : রঙের ঝলক
- নিপা আহমেদ
- ১৪ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
ঈদে ঘরোয়া দাওয়াত আর বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরিই হয় বেশি। তাই এসবের সাথে মানিয়ে নিজেকে সাজানো জরুরি। স্থান-কাল ভেদে নিজেকে সেই অনুযায়ী সাজাতে হবে।
ঈদের সাজসজ্জা নিয়ে জানাচ্ছেন স্রুতধারা ফ্যাশনহাউজ ও বেয়ারবিজ বিউটি সেলনের কর্ণধার রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন সেলিম তুলি।
ঈদের দিন নিজেকে সুন্দর প্রাণবন্ত করে উপস্থাপন করতে সবাই চাই। তাই ঈদ উৎসবের আগে আপনার ত্বক, চোখের ভ্রƒ, নখ প্রভৃতির যতœ নেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। উৎসবের জন্য এসব প্রস্তুতি ফেলে না রেখে কিছুটা আগে থেকেই স্পা, স্যালন-পার্লারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিতে পারেন।
ঈদের দিন দীপ্তময় ত্বক আপনাকে বাড়তি দ্যুতি এনে দেবে। ঈদের সপ্তাহখানেক আগেই আপনার ত্বকের সাথে মানানসই একটি ফেসিয়াল করিয়ে নিন। এতে ত্বকে আর্দ্রতা ফিরবে, ত্বক টান টান হবে, ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক দীপ্তিও বাড়বে। অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে আপনার হাত-পা, ভ্রƒ, ওপরের ঠোঁট প্রভৃতি ওয়াক্সিং করিয়ে নিন। এতে ত্বকে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও সেটা উপশমের যথেষ্ট সময় পাবেন। ঈদের ঠিক আগমুহূর্তে পুরো হেয়ার স্টাইল বদলে ফেলা কখনোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তবে চুলের আগা ফাটার সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি পেতে এবং চুলে স্বাস্থ্যকর ঔজ্জ্বল্যে আনতে অবশ্যই ঈদের আগে একবার চুল ট্রিম করিয়ে নিন। এ ছাড়া নিষ্প্রাণ চুল প্রাণবন্ত করার জন্য চুলের ধরন অনুযায়ী হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। নখ ভেঙে যাওয়া ঠেকানো অথবা ভেঙে বিকৃত হয়ে যাওয়া নখের শ্রী ফিরিয়ে আনার সবচেয়ে ভালো উপায় মেনিকিউর করিয়ে নেয়া। একটি ভালো মেনিকিউরের প্রভাব হাতের ত্বকের ওপর পরবর্তী তিন সপ্তাহের মতো থাকে। ফলে আপনি ঈদের এক সপ্তাহ আগে মেনিকিউর করালে এবং কিছুটা যতœশীল হলে তা ঈদ উৎসবের পুরো সময় পর্যন্ত থাকবে। মুখমণ্ডল ও হাতের পরিচর্যার পাশাপাশি পায়ের নখ ও গোড়ালির পরিচর্যা করতে পেডিকিউর যেন বাদ না পড়ে কোনোভাবেই।
ঈদের দিনের সাজ
এই ঈদে বিশেষ করে তরুণীদের জন্য বিভিন্ন ডিজাইন, কাটিং ও রঙের পোশাকে সেজেছে ফ্যাশান হাউজগুলো। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, কুর্তি, স্কার্ট, টপস্, লেহেঙ্গা, টিউনিক এসেছে তাদের রুচি ও পছন্দের কথা মাথায় রেখে। শুধু ডিজাইন নয়, রঙ ও কাটিংয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে অভিনবত্ব। তবে রঙ নির্বাচনে বিবেচনায় রাখতে পারেন আবহাওয়ার বিষয়টি। যেমনÑ বৃষ্টি বা মেঘলা দিনে বেছে নিতে পারেন উজ্জ্বল রঙ। আবার কড়া রোদে প্রচণ্ড গরমের দিনে ব্যবহার করতে পারেন হালকা রঙের ও হালকা নকশার পোশাক। ফেব্রিকের মধ্যে আছে মসলিন, সুতি, লিনেন, ক্রাশড কটন, অ্যান্ডিকটন, খাদি, ক্রেপ, সিল্ক, জর্জেন্ট, তাঁত ইত্যাদি। শাড়ির সিলেকশনেও থাকতে পারে যেকোনো হালকা রঙ। শাড়িতে আজকাল চলছে স্টোন ও চুমকির কাজ করা বিভিন্ন শিফন, পিওর সফট সিল্ক, জর্জেন্ট, সুতি ও তাঁত। এ ছাড়া ট্রেডিশনাল শাড়ি, কাতান, বেনারসি, জামদানি ও বিভিন্ন বুটিকের ডিজাইনের শাড়ি পছন্দ করতে পারেন।
ঈদে দিনের মেকআপ
মেকআপ শুরু করার আগে মুখ ভালো করে ক্লিন করে নিতে হবে। এক টুকরো বরফ নিয়ে পুরো মুখে ঘষে নিন। এতে মেকআপ স্থায়ী হবে। এরপর ওয়াটার বেজড ফাউন্ডেশন আঙুলের ডগায় নিয়ে ফোঁটা ফোঁটায় সারা মুখে লাগিয়ে পরে ম্যাসাজ করে ত্বকের সাথে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। ত্বকে কোনো দাগ বা চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল থাকলে সেই জায়গাতে কনসিলার লাগিয়ে নিন। আপনার ত্বকের রঙের থেকে অর্ধেক শেড হালকা রঙের কনসিলার বেছে নিতে হবে। এবার ফেস পাউডার দিয়ে ন্যাচারাল লুকের বেজ মেকআপ করে নিন। এরপর ব্রাশ দিয়ে চিকবোনের ওপর ম্যাট ব্রোনজার লাগিয়ে নিন। ব্রোনজারের ব্যবহার ত্বকে গ্লামারস লুক নিয়ে আসে। এরপর গালের ওপর পিচ বা ব্রাউন শেডের ব্লাশন টাচ দিয়ে নিন। এবার চোখের পাতায় নিউট্রাল শেড অথবা পেস্টাল শেডের কালার যেমন লাইট পিঙ্ক ও ক্রিম কালারের আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন।
ওপরের অংশে লাইট শিমারিং শ্যাডো দিয়ে হাইলাইট করুন। এবার ওয়াটার প্রুফ আইলাইনার বা কাজল চোখের উপর ও নিচে টেনে লাগান। ট্রান্সপারেন্ট মাশকারা ২-৩ বার কোট করে লাগিয়ে নিন। ঠোঁটের জন্য দিনে সফট কালারের লিপস্টিক লাগাতে পারেন এবং রাতে লাগাতে পারেন ড্রেসের সাথে মিলিয়ে ডার্ক কালারের লিপস্টিক। ড্রেসআপ সেরে করে নিন চুলের সেটিং। অনেকেই টিপ পরতে পছন্দ করেন। কপাল যদি বড় হয় তবে বড় টিপ আর ছোট হলে ছোট সাইজের টিপ পরলে মানানসই হবে। সবশেষে বেছে নিন মিষ্টি গন্ধের পারফিউম। আর পোশাকের সাথে মিলিয়ে মানানসই গয়না, স্যান্ডেল হ্যান্ডব্যাগ ইত্যাদি বেছে নিন। হয়ে গেল আপনার ঈদের সাজ।