ফ্যাশনে প্রিন্টের শার্ট রঙের ঝলক
- সাবিরা সুলতানা
- ১০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
ছেলেদের ফ্যাশনে প্রিন্টের শার্টের ট্রেন্ড বহু পুরনো। তবুও এই ট্রেন্ডের একটা আবেদন প্রায় সারা বছরই থেকে যায়। বিশেষ করে গরমের সময় প্রিন্টের শার্ট ব্যবহার করতে দেখা যায় বেশি। এবারের গ্রীষ্মের ফ্যাশনে প্রিন্ট প্যাটার্নের শার্ট বেশ চলছে। গরমের অস্বস্তিকর দিনগুলোতে একটু আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য অনেকেই হাফহাতা শার্ট ব্যবহার করেন। এই হাফাহাতা শার্টেই প্রিন্টের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। তবে ফুলহাতা শার্টে রয়েছে প্রিন্টের ব্যবহার।
ক্যাজুয়াল ফ্যাশনে প্রিন্টের শার্টের ট্রেন্ড ছেলেদের করে তোলে আরো আধুনিক ও এলিগ্যান্ট। এ ছাড়া তাদের ফ্যাশনে নিয়ে আসে বৈচিত্র্য।
শার্টে প্রিন্ট নিয়েও রয়েছে অনেক ধরন। ফুলেল প্রিন্ট, চেক, পলকা, ডটস জ্যামিতিক নকশাসহ কয়েক ধরনের প্রিন্ট সাধারণ শার্টে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে আবার ছোট-বড়র বিষয়ও রয়েছে। বড় ফুলের প্রিন্টেড নকশা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ছোট ফুলের নকশা। একইভাবে বড় আকারের ডটস খুব একটা শার্টের প্রিন্টে ব্যবহার হয় না তবে ছোট পলকা ডটসের ব্যবহার ব্যাপক। ডটসের বদলে কখনো স্টার, পাতা বা অন্য কোনো ছোট নকশাও দেখা যায়। চেক শার্টের বদলে আজকাল অনেকেই বেছে নিচ্ছেন প্রিন্টের শার্ট। এইসব শার্টে এক দিকে যেমন ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠা যায় তেমনি ছেলেরা তাদের পোশাকের সম্ভারে বৈচিত্র্যও আনতে পারে খুব সহজে।
শার্টে ফ্লোরাল প্রিন্ট অর্থাৎ ফুল, লতা বা পাতায় নকশা বেশি প্রচলিত। এ ধরনের প্রিন্ট আউটফিটে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি বেশ সতেজ একটা ভাব তৈরি করে আউটলুকে। ফ্লোরাল প্রিন্ট সব পরিবেশেই মানিয়ে যায়।
এরপর যে প্রিন্টটি শার্টের ক্ষেত্রে বেশি জনপ্রিয় সেটি হলোÑ ডটস। যারা একটু কম ফ্যাশনেবল হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চান তারা এ ধরনের প্রিন্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে এ ধরনের প্রিন্ট একই সাথে ট্রেন্ডি আর সফিস্টিকেটেড।
ছেলেদের শার্টে আরো কয়েকটি কমন প্রিন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়। যেমন সেইল বোট, ক্যান্ডি, আমব্রেলা প্রিন্ট, স্টার। এসব ছাড়াও আজকাল অন্য প্রিন্টও ব্যবহার হয়ে থাকে। যে কেউ তার পছন্দানুসারে যেকোনো প্রিন্টের শার্ট বেছে নিতে পারে।
এ ছাড়া রয়েছে ব্লক প্রিন্ট।
শার্টে ফ্যাশনের ক্ষেত্রে ব্লক প্রিন্টকে বলা যায় নতুন মাইলফলক। আমাদের ফ্যাশন ডিজাইনারেরা ব্লক প্রিন্টকে খুবই দক্ষতার সাথে যোগ করেছেন ছেলেদের ফ্যাশন ট্রেন্ডে। প্রতিটি উৎসবে ফ্যাশন ডিজাইনার ভিন্ন ভিন্ন মোটিফ নিয়ে কাজ করে থাকেন। যেসব মোটিফগুলো তারা শার্টের প্রিন্ট হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে দিয়ে শার্টের প্রিন্টে যোগ হয় বৈচিত্র্য। আর প্রিন্টেড শার্ট এভাবে হয়ে ওঠে আরো ফ্যাশনেবল। প্রিন্টের শার্টে একই সাথে রয়েছে রঙের বৈচিত্র্য। বিভিন্ন রঙে প্রিন্ট ও ব্লক হয়ে থাকে শার্টে, যা দেখতে খুবই ট্রেন্ডিং এবং গরমের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক। তবে গ্রীষ্মে উজ্জ্বল রঙগুলোই বেশি মানানসই।
এবারের ফ্যাশন ট্রেন্ডে আরো একটি সংযোজন কলার ও হাতের স্লিভে প্রিন্টের কাপড়ের ব্যবহার। এই ডিজাইনগুলোতে শার্টের রঙের থেকে ভিন্ন রঙের প্রিন্টের কাপড় ব্যবহার করা হয় কলার ও হাতের স্লিভে। যারা বৈচিত্র্য পছন্দ করেন তারা অনায়াসে এসব শার্ট বেছে নিতে পারেন।
এ ছাড়া, জ্যামিতিক নকশাও শার্টের প্রিন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায়। যদি কেউ ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ সার্কেল, পিরামিড এ ধরনের ডিজাইন পছন্দ করেন তাহলে অনায়াসে বেছে নিতে পারেন জ্যামিতিক প্রিন্টের শার্ট।
এসব ছাড়াও এ বছর শার্টের ক্ষেত্রে শেড রঙের শার্ট বেশ জনপ্রিয়। অর্থাৎ একই শার্টে কোথাও গাঢ় কোথাও থাকছে হালকা রঙের কম্বিনেশন। যেমন শার্টের অর্ধেকটা যদি ডেনিম নীল রঙ হয় তাহলে বাকিটা থাকছে হালকা সবুজ। এ ধরনের শার্টও আজকাল বেশ জনপ্রিয় ফ্যাশন ট্রেন্ড।
প্রিন্টের শার্ট পরার ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু নিয়মরীতি। প্রিন্টের শার্ট ডেনিমের সাথেই সবচেয়ে ভালো মানায়। তবে এ ক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে কিছু বিষয়। গাঢ় রঙের ডেনিমের সাথে হাফ হাতা প্রিন্টের শার্ট বেমানান। ডার্ক ডেনিমের সাথে ফুলস্লিভ ও স্লিমফিট শার্ট বেছে নিন। ডার্ক কালার ফ্লোরাল প্রিন্ট বাছাই করুন। হালকা রঙের ডেনিমের সাথে হালকা রঙের প্রিন্টের শার্ট ক্যাজুয়াল লুক দেয়।
এ ছাড়া ব্লেজার বা কোটের সাথে প্রিন্টের শার্ট আউটলুকে আনবে স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য। সেক্ষেত্রে অবশ্য টাই না থাকলে ভাল হবে। কাফলিন, টাই এসবও বাছাই করুন শার্টের সাথে মিলিয়ে।