২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘কিছু এনজিও পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে দেশের স্বাধীনতা-বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’

দেশ ও ধর্মবিরোধী এনজিওদের অপতৎপরতা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত - ছবি : নয়া দিগন্ত

‘বিদেশী এজেন্ডাধারী কিছু এনজিও সেবার নামে এদেশে বড় ধরনের ব্যবসা করছে, সহায়তার নামে জনগণকে শোষণ করে যাচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে দেশের স্বাধীনতা-বিরোধী ষড়যন্ত্রেও তারা লিপ্ত রয়েছে, এদের উদ্দেশ্য সেবা নয়, বরং শোষণ করা, অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়া। এরা অর্থের বিনিময়ে মুসলমানদের ঈমান ক্রয় করছে। মুসলিমদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা। ব্র্যাক, গ্রামীণ, আশাসহ, বন্ধু সোশ্যাল-সহ বহু দেশী-বিদেশী এনজিও রয়েছে- যারা এসব এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। তাদের প্রেসক্রিপশ অনুযায়ীই তৈরি হয়েছে ধর্ম ও দেশবিরোধী শিক্ষানীতি।’

গত সোমবার ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ কর্তৃক আয়োজিত ‘দেশবিরোধী এনজিওদের সাম্রাজ্যবাদী ও ধর্মবিরোধী অপতৎপরতা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তাগণ এসব কথা বলেন। মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী’র সভাপতিত্বে জাতীয় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসাইন, প্রফেসর মোখতার আহমাদ, মুফতী ফয়জুল করীম, মাওলানা সাইয়েদ মুহাম্মাদ হাসান আল-আজহারি, ড. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, ডা: শামসুল আরেফীন শক্তি, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মাওলানা মুস্তাফিজ রাহমানী, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, মাওলানা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা রেজাউল করিম আবরার, মুফতি সাইফুল ইসলামসহ বিশিষ্ট আলিম, শিক্ষাবিদ ও সমাজচিন্তক ব্যক্তিবর্গ।
বক্তাগণ দেশ ও ধর্মবিরোধী চক্রান্তে জড়িত এনজিওদের সম্পর্কে জাতিকে সজাগ হওয়ার আহ্বার জানান। যেসব এনজিও এসব কুৎসিত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কটের ডাকও উঠে আসে সেমিনার থেকে।

‘সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো এই ভূখণ্ডকে নিয়ে গভীর সব ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে রেখেছে। আর এনজিওগুলো তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। যাদের মধ্যে ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, আশা, প্রশিকা, কেয়ার, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, টিএমএসএস, কারিতাস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। অধিকার, অর্থসহায়তা ও স্বাস্থ্যসেবার আড়ালে সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডারের মতো বিকৃত মতবাদ প্রচারে কাজ করছে তারা। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সিএনএন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে—বাংলাদেশে সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডারবাদ প্রচারে সরাসরি অনুদান দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সরকার। তাদের এই অর্থ ভোগ করছে ‘বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’, ‘বয়েস অব বাংলাদেশ’-সহ বিভিন্ন সমকামী এনজিও। অন্যদিকে ইহুদী ধনকুবের জর্জ সরোসের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অনুদান পেয়েছে ব্র্যাক। আর জর্জ সরোস হলো সমকামী আদর্শের অর্থ যোগানদাতা। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশের মতো মুসলিম দেশগুলোতে পাশ্চাত্যের বিকৃত জীবনাচার ও সমকামিতার প্রচার-প্রসার ঘটানো। পাশাপাশি খ্রিস্টান মিশনারীদের কার্যক্রম বেগবান করা। মুসলিম ভূখণ্ডে বিধর্মী খ্রিস্টানদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।’- যোগ করেন বক্তরা।

সেমিনারে বক্তাদের কথায় উঠে আসে ঐক্যের কথা। তারা বলেন, এহেন মুহূর্তে আমাদের সকলকে ইসলামকে বিজয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পারস্পারিক সমালোচনা, শত্রুতা, গীবত পরিহার করতে হবে। ইসলামের মৌলিক বিষয়ে যারা একমত তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা না করে তাদের ভুল-ত্রুটি থাকলে সংশোধনের মানসিকতায় সরাসরি তাকে বলতে হবে। এছাড়া পরস্পর সমালোচনা পরিত্যাগ করতে হবে। আমরা ইচ্ছা করলেই একা একা, বা ছোট ছোট শক্তি দিয়ে সবকিছু করতে পারব না। এজন্য ইসলামকে বিজয়ের লক্ষ্যে সকলের চিন্তা এক হতে হবে। বৃহৎশক্তি ছাড়া ইসলামের বিজয় সম্ভব না।

বক্তাগণ বলেন, এনজিওদের ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে। মসজিদের মিম্বরগুলো থেকে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। জাতীয় ইস্যুগুলোতে বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ধৈর্যের সাথে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বক্তারা।

 


আরো সংবাদ



premium cement