২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রৌমারীতে খালুকে হত্যা করে পালানোর সময় বিএসএফের হাতে আটক

পতাকা বৈঠকে ফেরত
রৌমারীতে খালুকে হত্যা করে পালানোর সময় বিএসএফের হাতে আটক - ছবি : নয়া দিগন্ত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ খালুকে ‘হত্যা করে’ সীমান্ত দিয়ে পালানোর সময় এক যুবককে আটক করে বিএসএফ। পরে বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটক যুবককে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে বিজিবি। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কাউনিয়ার চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বৃদ্ধের নাম বশির উদ্দিন (৮২)। তিনি উত্তর কাউনিয়ার চর গ্রামের মরহুম হেশকারী শেখের ছেলে। আটক যুবকের নাম নুর আলম (৩০)। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানা এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে।

ভুক্তভোগী বশির উদ্দিন সম্পর্কে নুর আলমের খালু। কয়েকদিন ধরে খালুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন নুর আলম।

নিহত বশিরের মেয়ে মাহমুদা আক্তার জানান, কাজের সুবাদে নুর আলম ভারতে থাকে। সেখান থেকে সে অবৈধ পথে ভারতে যাতায়াত করত। দুই সপ্তাহ আগে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নুর আলম রৌমারীর উত্তর কাউনিয়ার চর গ্রামে আসে। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে যায়। গত চারদিন আগে তার মাকে নিয়ে আবার কাউনিয়ার চরে বশিরের বাড়িতে আসে। রাতে অসুস্থ বশিরের সাথে একই বিছানায় ঘুমাত। সোমবার ভোররাতে সে বশিরকে মেরে সীমান্ত পথে পালিয়ে যায়। তবে কী কারণে সে বশিরকে মেরেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পরিবার।

মাহমুদা আক্তার বলেন, নুর আলমের কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল। সে অসুস্থ কি না সেটাও ঠিক জানি না। গত দুই রাত থেকে সে আমার বাবার সাথে থাকছিল। রাতে ঘুমায় না। সোমবার রাত ১টার দিকেও আমি দেখি গেছি আব্বা ভালো আছেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে নুর আলম চিৎকার করে বলতেছিল, খালু মারা গেইছে। আমরা আসি দেখি আব্বার শরীরে রক্ত। আমরা ওক আটকানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই (নুর আলম) ঘুষি দিয়া নিজেক ছটকে নিয়া ভারতে পালায় গেছিল। পরে বিএসএফ আটক করে ফেরত দিয়েছে। আমরা ওর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে দাঁতভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমি ওই বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি অসুস্থ বশিরকে মেরে ফেলা হয়েছে।

বিজিবি সূত্রে জানায়, সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় বিএসএফের হাতে আটক হয় নুর আলম। পরে মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ১০৫৪ (২-এস)-এর কাছে আসামের দ্বীপচর বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডারের সাথে বিজিবি দাঁতভাঙা কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আটক নুর আলমকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

রৌমারী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মর্তুজা জানান, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও রক্তাক্ত জখম রয়েছে। বিজিবি আটক যুবককে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শফিকুল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement