মেহেরপুরে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীসহ ১৯ জন বিরুদ্ধে মামলা

২০১৪ সালে মেহেরপুরে জামায়াত নেতা তারিক মো: সাইফুল ইসলামকে কথিত বন্ধুকযুদ্ধের নামে হত্যার ঘটনায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তৎকালীন পুলিশ সুপার এ কে এম নাহিদুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতের তারিক মো: সাইফুল ইসলামের ভাই তাওফিকুল ইসলাম এ মামলা করেন।

মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেন। মামলায় ১৯ জনের মধ্যে চারজন রাজনৈতিক নেতা ও বাকি ১৫ জন পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তা।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন তৎকালীন এ এস পি মোস্তাফিজুর রহমান, এ এস পি আব্দুল জলিল, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদ মোমিন মজুমদার, সদর এসি ল্যাণ্ড ফরিদ হোসেন, গাংনী র‌্যাব ক্যাম্পের কামন্ডার ক্যাপটেন আশরাফ হোসেন, ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম, বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আসাদ মিয়া, ওসি ডিবি বাবুল আক্তার, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম, এ এস আই আব্দুল হান্নান, কনস্টেবল সাধন কুমার, নারদ কুমার, ডিবির কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, সাবেক ইউপি সদস্য দরুদ আলী।

বাদির বর্ণনায় জানা গেছে, ২০১৪ সালে তারিক মো: সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলার সহকারী সেক্রেটারি ছিলেন। পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা থাকায় ভিন্ন মতের নেতৃত্বকে সমূলে বিনাশের লক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে।

২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ব্যক্তিগত কাজে তারিক মো: সাইফুল ইসলাম মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার ইসলামি ব্যাংকের কাছে গেলে আসামি বারিকুল ইসলাম লিজন ও দরুদ আলী সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুলকে জানায়।

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশে তৎকালীন পুলিশ সুপার কে এম নাহিদুল ইসলামের নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা তারিককে আটক করে। তাৎক্ষণিক সাংবাদিকরা জানতে পেরে পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত হলেও তারিকের স্ত্রী স্বামীর সন্ধানে পুলিশ সুপারের কাযার্লয়ে গেলে পুলিশ সুপার আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেন। আটকের পর গোপনস্থানে রেখে থেকে তারিককে শারীরিক ও মানসিক নিযার্তন করে আসামিরা।

পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরতলী বামনপাড়া শ্বশান ঘাট এলাকায় কথিত বন্ধুকযুদ্ধের নামে একাধিক গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে মেহেরপুর মর্গে থেকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরিবারের কাছে দেয়া হয়নি এমনকি মামলা না করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হয় এবং দ্রুত লাশ দাফনের নির্দেশ দেয়া হয়।

চলতি বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে ন্যায় বিচারের পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় বাদি ন্যায় বিচারের লক্ষে আদালতে মামলা করেন।