পাওয়ার প্লান্টে ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
- মো: গোলাম আযম সরকার, পীরগাছা (রংপুর)
- ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:১৮
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার শেষ প্রান্তে এবং গাইবান্ধা উপজেলার সুন্দরগঞ্জে অবস্থিত পাওয়ার প্লান্টে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় মুক্তিগামী জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ শোভ, ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজির হোসেন, তাম্বুলপুর ইউপির চেয়ারম্যান বজরুল রশিদ মুকুল, শরিফুজ্জামান ডালেস, মশিউর রহমান ও শামছুল মিয়া প্রমুখ।
এ সময় শিক্ষার্থী সোহান অভিযোগ করে বলেন, তিস্তার বুকে নির্মিত তিস্তা বিদ্যুৎ প্রকল্পের আড়ালে ভারতীয় গুপ্তচর ব্যবহার করে এ অঞ্চলকে অশান্ত করার পায়তারা করা হচ্ছে। উত্তর জনপদকে রক্ষা করতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন আজ সময়ের একচ্ছত্র দাবি।
তিনি এ সময় বলেন, তিস্তার গতিপথ নিয়ন্ত্রণে যেখানে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রাণোচ্ছ্বল নদীটির গতিপথকে ব্যাহত করে পরিবেশ ও স্থানীয় জনতার স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড পরিচলানা করা হয়েছে পতিত স্বৈরাচারের আমলে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কুখ্যাত জুলুমবাজ, ধর্ষক, ভূমিদস্য এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের গডফাদার সালমান এফ রহমান গং বিগত বছরগুলোতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তিস্তা পাড়ের অসহায় মানুষদের নিজ ভূমি থেকে উৎখাত করে আসছিল। বেক্সিমকো সোলার পাওয়ার কর্তৃক নির্মিত অস্বচ্ছ তিস্তা পাওয়ার প্লান্টের সকল দুর্নীতি উন্মোচন ও বিদ্যুতের সঠিক হিসাব নিরূপনে তিস্তাপাড়ের সন্তানদের দায় মোচনের সময় এসেছে। জমিহারা হতভাগা মানুষদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমরা সাধারণ ছাত্রজনতা বদ্ধ পরিকর। তিস্তার বুকে নির্মিত এ প্রকল্পের আড়ালে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভারতীয় কর্মীর উপস্থিতি এবং দেশীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তিনি করেন।
এ সময় তিনি ৭ দফা দাবি করেন :
১. ক্ষুধা, মঙ্গা ও বন্যা প্রতিরোধে পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করো, করতে হবে।
২. ‘বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি’ কর্তৃক নির্মিত অস্বচ্ছ তিস্তা পাওয়ার প্লান্টে প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিরূপণে অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রীয় তদারকি কায়েম করা হোক।
৩. প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণকালে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দখলকৃত এবং অবমূল্যায়িত নদীবিধৌত জমির মালিকদের ন্যায্য অধিকার দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।
৪. জমি দখলকল্পে যে খুনের ঘটনা ঘটেছে তাতে লুটেরা সালমান এফ রহমানসহ জড়িত সকলের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করে মজলুমদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক।
৫. কোম্পানির উৎপাদিত বিদ্যুৎতের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও স্থানীয় বিদ্যুতের চাহিদাপূরণ পরবর্তী সুষ্ঠু বন্টনের ব্যবস্থা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ কায়েম হোক।
৬. অধিকতর বৈদেশিক বিনিয়োগের মাধ্যমে তিস্তা অববাহিকায় নদীবান্ধব শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত কর্মীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করাই অনিবার্য দাবি।
৭. মুক্তিকামী আপামর ছাত্রজনতা লুটেরাদের অবৈধ সম্পদের উৎস নিরূপণে রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনে মহামান্য আদালতের সুদৃঢ় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রজেক্ট ম্যানেজার সিভমেক ইঞ্জিনির্য়াস লিমিটেড মো: আজিজুল হক বলেন, দেখেন এই প্রকল্পটা যখন টেন্ডার করা হয় সেটা মূলত অন্তর্জাতিক টেন্ডার করা হয়। সেটা মূলত আন্তর্জাতিক টেন্ডার হয় সেই সুবাদে ইন্ডিয়ান কোম্পানী কাজটা পেয়েছে আমার জানামতে। এখানে ইন্ডিয়ান কোম্পানি রেইস পাওয়ার ইনফাকচার প্রাইভেট লিমিটেড প্রকল্প পরিচালনা করার জন্য তাদের ইন্ডয়ান ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত ছিলেন। প্রথম দিকে ২০ থেকে ২২ জন কর্মরত থাকলেও শেষেও দিকে এসে ১০ জন পর্যন্ত ছিলেন। ছাত্রজনতার বিপ্লবের পর তারা সকলেই ভারতে চলে গেছে ছুটি নিয়ে। সেখান থেকে মোবাইলের মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করছেন। ইন্ডিয়ান কোম্পানি হলেও মূলত আমাদের দেশীয় বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কাজগুলো করিয়েছেন। চলমান কাজ শেষ হতে আরো কমপক্ষে দুই বছর লাগতে পারে।
তিনি বলেন, এখান থেকে উৎপাতিদ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড রংপুরে চলে যাচ্ছে সেখান থেকে বিদ্যুৎ বন্টন করা হচ্ছে। তবে এর সুফল আমাদের দেশের মানুষই পাচ্ছেন। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।
তিস্তা সোলার লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার (অ্যাডমিনিস্টেশন অ্যান্ড সিকিউরিটি) সাজিদ জাকির বলেন, শিক্ষার্থী কিছু দাবি আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে করা সম্ভব সেগুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানাব। কিছু কিছু দাবি নির্বাহী আদেশের ব্যাপার সে গুলো আমাদের পুরুন করা সম্ভব নয়।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে পাওয়ার প্লান্টে জরুরি মিটিংয়ে আয়োজন করা হয়। মিটিংশেষে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে গাইন্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষার্থীরা লেখিতভাবে জানাবেন আমি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দিব, মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পীরগাছা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফতিসাম প্রীতি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা