এক গুলিতেই শেষ অন্তঃসত্ত্বা খাদিজার সোনালি স্বপ্ন
- রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম
- ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৫
বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত কুড়িগ্রামের নুর আলমের স্ত্রী খাদিজা বেগম (১৯) এখন নির্বাক। বিয়ের মাত্র এক বছরের মাথায় স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। গর্ভে আট মাসের সন্তান। ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খাদিজা বেগম। স্বামীর হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়ার দাবি তার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বামী হারিয়ে হতবাক খাদিজা বেগম। কখনো স্বামীর ছবি দেখে ডুকরে কেঁদে উঠছেন, আবার কখনো অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা ভেবে নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকছেন কবরের পাশে।
গত (২০ জুলাই) সকালে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে ভাড়া বাসায় খেতে যাচ্ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মোল্লা পাড়া এলাকার ২০ বছর বয়সী যুবক নুর আলম। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট সংঘর্ষ চলছিল। একটি গুলি তার চোখ ভেদ করে বের হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন নুর আলম।
স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণ করেন চিকিৎসক। পরে লাশ রাখা হয় জয়দেবপুরে সরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে লাশ নিয়ে এসে পরের দিন (২১ জুলাই) গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ভাগীরহাট গ্রামে দাফন করা হয়। নুর আলমের এমন মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়েছেন স্বজনসহ প্রতিবেশীরা। নিহত নুর আলমের স্ত্রী ও তার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তারা।
স্থানীয় শফিকুল ইসলাম বলেন, নুর আলম খুবই ভালো ছেলে ছিল। কোনো দল বা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না সে। তারা খুব গরিব মানুষ দিন করে দিন খেত। ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়ে গুলিতে মারা গেল। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। এছাড়াও তার স্ত্রীর গর্ভে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার দাবি করছি।
প্রতিবেশী মিলন বলেন, নিহত নুর আলমের পরিবার খুবই গরিব। সংসারে অভাব অনটন কমাতে সবাই কাজ করতে ঢাকায় গেছেন। সেখানেই কয়েক দিন আগে ছাত্রদের আন্দোলনে নুর আলম গুলি খেয়ে মারা গেলো।
নিহত নুর আলমের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, আন্দোলনে গুলিতে নির্মমভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। যারা আমার স্বামীকে মারছে, তার বিচার চাই বলে কন্নায় ভেঙে পড়েন। সরকারের কাছে স্বামী, আমার ও পেটের সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়ার দাবি জানান।
কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ সাঈদুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের ভ্যান চালক আমির হোসেন ও নুর বানু দম্পতি জীবিকার তাগিদে দুই ছেলে ও এক ছেলের বউকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। হঠাৎ গুলিতে কর্মক্ষম বড় ছেলেকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন পরিবারটি। এ অবস্থায় পরিবারটিকে সহায়তা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা