২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন থামাতে সব দলের একসাথে আন্দোলন

- ছবি : নয়া দিগন্ত

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পীরগাছায় আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবিতে পাঁচ দিন থেকে আন্দোলন করছেন স্থানীয় সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। মাঠে বিভিন্ন জন বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যভাবে কথা বললেও আন্দোলনের মাঠে সবাই এক। পীরগাছার উন্নয়নে সবাই একসাথে আন্দোলন করছেন প্রতিনিয়ত।

সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে পীরগাছা সরকারী কলেজ হলরুমে ১০ তারিখে পীরগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিটির আহ্বানে এক জরুরি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। মিটিংয়ে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। উদ্বোধনের দিনেই বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামানো হবে। এ দিকে, সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে বুড়িমারী ট্রেন থামানোর জন্য করা হয় মানববন্ধন। মানববন্ধনে সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মী-সহ হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন এবং মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত থেকেই প্রতিদিন ঢাকায় যাওয়ার সময় এবং আসার সময়ে এই দু’বার করে তিন মিনিটি করে ট্রেনটি থামিয়ে রাখা হচ্ছে। পীরগাছা রেলস্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবিতে উদ্বোধনের দিন থেকে প্রতিদিন আসা-যাওয়ার পথে আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনকে আটকে রাখছেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

সূত্রে আরো জানা গেছে, শুক্রবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় ও রাত ১০টায় চতুর্থ দিনের মতো ট্রেনটিকে ওই স্টেশনে তিন মিনিট আটকে রাখা হয়। এ সময় ট্রেন থামাতে পীরগাছা স্টেশন এলাকায় হাজার হাজার মানুষ অবস্থান নেয়। এর আগে উদ্বোধনের দিন মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই স্টেশনে ট্রেনটিকে ৩৫ মিনিট আটকে রাখা হয়। পরে রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশ্বাসে ছেড়ে দেয়া হলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন আসা-যাওয়ার পথে ন্যূনতম ৩ মিনিট ট্রেনটিকে ওই স্টেশনে থামিয়ে রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষণা মোতাবেক প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ট্রেনটিকে আটকে রাখছেন তারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই ট্রেনটি থামাতে হবে। প্রয়োজনে আমি ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে জীবনকে উৎসর্গ দিব। তবুও আমি চাই ট্রেনটি থামানো হউক। আমাদের উন্নয়নের জন্য ট্রেনটি থামাতে হবে। আমারা এলাকার উন্নয়ন চাই। উন্নয়নের জন্য সবাই একসাথে আন্দোলন করছি।’

পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন বলেন, ‘ট্রেনটি থামানো খুবই জরুরি।’

পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন বলেন, ‘আমাদের এমপি সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সাথে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি আমাদের ঢাকায় ডেকেছেন। আমরা আজ (শনিবার) ঢাকায় যাবো। আশা করছি, শিগগিরই পীরগাছায় স্টপেজের বিষয়ে পরিপত্র জারি হবে। তবে পরিপত্র না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে।’

পীরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসের শাহ মাহবুরার রহমান বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

পীরগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা বলেন, ‘প্রতিদিন বুড়িমারী এক্সপ্রেসকে আটকে রাখছেন স্থানীয়রা।’

উল্লেখ্য, শনিবার (৯ মার্চ) বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রাবিরতি পীরগাছায় না থাকার বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র বিষয়টি নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে পীরগাছা সরকারি কলেজে ট্রেনটির যাত্রা বিরতির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণের জন্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী সরকারসহ সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুশীল সমাজের নেতারা অংশ গ্রহণ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল