২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বিয়ের সাত মাসেই লাশ হলো শম্পা রানী

বিয়ের সাত মাসেই লাশ হলো শম্পা রানী -

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার শম্পা রানী নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের হিন্দুপাড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা যায়, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা শহরের বাসুদেবপাড়ার জোতিষ চন্দ্র দাসের অনার্স পাশ মেয়ে স্বপ্না রানী। ৭ মাস আগে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুরের সতীষ চন্দ্র সরকারের ছেলে অনিবাস চন্দ্র সরকারের সাথে বিয়ে হয়। অনিবাস বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাঠকর্মী।

অনিবাসের পরিবার জানায়, ৬ জুন শনিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বাড়িতে আগুন লাগে। এসময় শম্পা রানী ঘরের জিনিসপত্র বের করার সময় আগুনের তাপে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা তাকে মাথায় পানি দিয়ে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেন। আগুন নেভানোর পর রাত আনুমানিক দেড়টার সময় সে আবারও অসুস্থ বোধ করলে তাৎক্ষণিক তাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

স্বপ্না রানীর পিতা জোতিষ চন্দ্র দাস অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই জামাই অনিবাস তার মেয়ের প্র্রতি অবিচার করছে। স্ত্রী হিসেবে যে অধিকার পাওয়ার কথা তা তাকে দেওয়া  হয়নি। বিগত ৭ মাসে জামাই চাকরির স্থল কুড়িগ্রাম হতে ২ বার মাত্র বাড়িতে আসে। শ্বশুর বাড়িতে একবারও আসেনি। এমনকি অষ্টপ্রহরের সময় সে আমাদের  বাড়িতে নতুন জামাই হিসেবেও  উপস্থিত হয়নি। আমার মেয়ে মোবাইল করলে রিসিভ করে না। কথা বলে না। তাছাড়া কর্মস্থলে একটি মেয়ের সাথে অনিবাসের অবৈধ সম্পর্ক আছে। এ কারণেই সে শম্পার প্রতি বিরুপ আচরণ করতো।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর জামাই বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। বরং রাত ৯টার ঘটনা গভীর রাতে ৩টার দিকে অন্য লোকের মাধ্যমে খবর পাই আমরা। তিনি বলেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে মেরে ফেলে আগুন লাগার নাটক করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই ।

শম্পার মামা চিরিরবন্দর উপজেলার ৬নং ওমরপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড  মেম্বার শ্রী অভিজিৎ দাস মিঠু বলেন, বাড়িতে আগুন লাগার যে ঘটনা তারা উল্লেখ করছেন।  সেটা যে সাজানো তা আগুনে পোড়া ঘরের দৃশ্য দেখলেই বোঝা যায়। বলা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। কিন্তু তাতে ঘরের নিচের অংশে কোনো কিছুই পোড়েনি। শুধুমাত্র উপরের চালের কাঠ ও টিন পুড়েছে। এমনকি ঘরের প্লাইউড সিলিংও সামান্যতম ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। মুলত তারা সন্ধ্যা রাতেই শম্পাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে আগুনের নাটক করেছে। এখন বিষয়টি মিমাংসার জন্য বলা হচ্ছে। বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ নগদ ৭ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্নালংকার ও  ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র দিয়েও আজ বিয়ের মাত্র ৭ মাসের মাথায় আমাদের মেয়ের লাশ দেখতে হচ্ছে। সেখানে টাকার বিনিময়ে মিমাংসা নয়, হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান বলেন, নিহত গৃহবধূর বাবার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement