২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না

যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না - সংগ্রহ

পবিত্র মাহে রমজানে রোজা রাখছে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ। রোজা ভঙ্গের কারণ নিয়ে অনেকের মধ্যে বেশ কিছু ভুল ধারণা কাজ করে। কিন্তু এই কারণগুলোতে আসলে রোজা ভঙ্গ হয়না। আসুন আজকে জেনে নেই তেমন কয়েকটি বিষয়।

১০টি কাজে রোজা ভঙ্গ হয় না-

১. ভুলবশত কোনো কিছু খাওয়া

২. ভুলবশত কোনো কিছু পান করা

৩. ভুলবশত স্ত্রী সহবাস করা

৪. নিদ্রায় স্বপ্নদোষ হওয়া

৫. স্ত্রীর প্রতি দৃষ্টিপাত করায় বীর্যস্খলন ঘটা

৬. তৈল ব্যবহার করা

৭. শিঙ্গা গ্রহণ করা

৮. সুরমা ব্যবহার করা

৯. চুমু খাওয়া

১০. অনিচ্ছায় বমি হওয়া।

 

অন্যত্র আরো কয়েকটির কথা উল্লেখ রয়েছে-

১১. মিসওয়াক করা। যে কোনো সময় হোক, কাঁচা হোক বা শুষ্ক।

১২. গরম বা পিপাসার কারণে গোসল কিংবা বারবার কুলি করা।

১৩. অনিচ্ছাবশত গলার মধ্যে অখাদ্য বস্তু চলে যাওয়া। যেমন ধোঁয়া, ধুলাবালি কিংবা মশা-মাছি ইত্যাদি।

১৪. মুখে থুথু আসলে গিলে ফেলা।

১৫. ইনজেকশন নেয়া।

১৬. রোজা অবস্থায় দাঁত উঠালে; শর্ত হলো কণ্ঠনালীর ভিতর রক্ত না যাওয়া।

১৭. শুধু নজরের কারণে বীর্যপাত হওয়া।

১৮. রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের করলে কিংবা বের হলে।

১৯. সাপ ইত্যাদি দংশন করলে।

 

কার ওপর রোজা ফরজ

সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান। আরবি দ্বিতীয় হিজরিতে আল্লাহ রব্বুল আলামিন মুসলিমদের ওপর রোজ ফরজের বিধান নাজিল করেন। প্রতি বছর রমজান মাসে সারা বিশ্বের মুসলিমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সিয়াম পালন করেন। তবে সব মুসলিমদের ওপর রোজা ফরজ নয়। কোন ব্যক্তির ওপর রোজা ফরজ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। কারো উপর রোজা ফরজ হওয়ার জন্য ৬টি শর্ত-

১. মুসলিম হওয়া

২. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া

৩. বিবেকবান হওয়া

৪. মুকিম হওয়া(সফরে রয়েছে এমন ব্যক্তি নয়)

৫. রোজা রাখতে সক্ষম হওয়া

৬. নিষিদ্ধ বিষয়াবলী থেকে মুক্ত হওয়া

 

সবচেয়ে বড় রোজা আইসল্যান্ডে, ছোট চিলিতে
সময়ের পার্থক্যের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন একদিন আগে-পরে হয়, তেমনি অঞ্চল ভেদে রোজার সময়ও কম-বেশি হয়ে থাকে। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা পালন করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা; কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সূর্যদয় ও সূযাস্তের পার্থক্যের কারণে  রোজার সময়ও কম বেশি হয়। কোন কোন অঞ্চলে সেটি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি আবার কোন অঞ্চলে অনেক কম।

এ বছর কোন কোন দেশে ২০ ঘণ্টার বেশি আবার কোন দেশে ১১ ঘণ্টারও কম সময় রোজা রাখাতে হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই সবচেয়ে বেশি সময় রোজা পালন করতে হচ্ছে ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ডের মুসলিমদের। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের এই ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এখন সবচেয়ে বড় দিন। ঘড়ির কাটার হিসেবে যা ২০ ঘণ্টা ১৭ মিনিট। দেশটির স্থানীয় সময় রাত আড়াইটায় সুবহে সাদিক হয়, আর ইফতার অর্থ সূর্যাস্ত হয় পৌনে এগারোটায়। এত দীর্ঘ সময় রোজা রাখতে সমস্যায় পড়ছেন দেশটির অল্প সংখ্যক মুসলিম নাগরিক। দেশটির মুসলিম জনসংখ্যা আটশোর মতো।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোজার সময় আইসল্যান্ডের প্রতিবেশী ও ডেনমার্ক শাসিত দ্বীপ গ্রিণল্যান্ডে। দেশটিতে এ বছর রোজার সময় ১৯ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। আর বাল্টিক অঞ্চলের দেশ ফিনল্যান্ড আছে তৃতীয় অবস্থানে, দেশটির মুসলিমরা রোজা রাখছে ১৯ ঘণ্টা ২১ মিনিট। এরপর যথাক্রমে একই অঞ্চলের নরওয়ে(১৯ ঘণ্টা ১৯ মিনিট), সুইডেন (১৯ ঘণ্টা ১২ মিনিট)।

উত্তর মেরুর অন্যান্য দেশগুলোতেও এরকম দীর্ঘ সময় রোজা রাখতে হচ্ছে মুসলিমদের। অন্যদিকে এই গ্রহের অন্য প্রান্তে অর্থাৎ দক্ষিণ মেরুতে পাওয়া যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দেশ চিলির মুসলিমরা সবচেয়ে কম সময় রোজা রাখছে। দেশটিতে এখন ১০ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট দীর্ঘ হচ্ছে দিন। আইসল্যান্ডের তুলনায় যা প্রায় ১১ ঘণ্টা কম। এছাড়া নিউজিল্যান্ডে রোজা হচ্ছে ১১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট। ব্রাজিল আর অস্ট্রেলিয়ায় হুবহু একই সময় রোজা রাখতে হচ্ছে, ১১ ঘণ্টা ৫৯ মিনিট।


আরো সংবাদ



premium cement