৫৭ বছর বয়সে ট্রাফিক পুলিশের এসএসসি পাস
- বগুড়া অফিস
- ১৩ মে ২০২৪, ১৮:৩৯
৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাশ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বগুড়া সদর ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদ। তিনি এ নাটোর জেলার মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার এমন সফলতায় জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদ ১৯৬৮ সালে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে ১৯৮৭ সালে ৮ম শ্রেণি পাশে বাংলাদেশ পুলিশের কন্সটেবল পদে চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদান করেন। চাকরিসূত্রে তিনি বগুড়ার শেরপুর, সদর ও নন্দীগ্রাম ডিএসবি, সদর কোর্ট এবং সর্বশেষ বগুড়া ট্রাফিকে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ছেলে ও মেয়েদের করেছেন উচ্চ শিক্ষিত। তার এখন চাকরি রয়েছে ২ বছর ১০ মাস। চাকরি শেষে হোমিও চিকিৎসায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। কিন্তু সেই কোর্সে ভর্তি হতে তার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। তাই সিদ্ধান্ত নেন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২২ সালে তিনি নাটোর মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেই ইন্সটিটিউট থেকেই এ বছর তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং জিপিএ -৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদ তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, পারিবারিক অস্বচ্ছলতায় ৮ম শ্রেণি পাশ করেই পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেছিলাম। আমার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ওপর ছোট থেকেই দুর্বলতা ছিল। অবসরে যাওয়ার পর যেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করে সবার সেবা করতে পারি সে কারণে চাকরির পাশাপাশি নিয়মিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করতাম। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার কোর্সে ভর্তি হতে এসএসসি পাসের সার্র্টিফিকেট লাগে। তাই ২০২২ সালে সিদ্ধান্ত নেই এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার। অতঃপর টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে এ বছর এসএসসি পাশ করেছি।
তিনি বলেন, আমার আর চাকরি আছে ২ বছর ১০ মাস। এখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিএইচএমএস কোর্সে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার। অবসরে যাওয়ার পর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে সবাইকে সেবা করতে চাই।
তিনি আরো বলেন, আমার এই বয়সে আমার পরিবার ও ডিপার্টমেন্ট অনেক সহযোগিতা করেছে। আমার মা বেঁচে আছেন। তার বয়স ১০০ বছর। আমার মা আমার এই সফলতার কথা শুনে অনেক খুশি হয়েছেন। নতুন করে পড়াশোনা শুরু করার সময় অনেকেই কটু কথা বলেছেন। কিন্তু পরিবার ও ডিপার্টমেন্টের উৎসাহে আমি পিছ পা হইনি। ইচ্ছা থাকলে সফলতা আসবেই। আমি এ জন্য পরিবার ও পুলিশ বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে সকলের দোয়া চাই।