১৭ ভরি স্বর্ণসহ আঙ্গুল কাটা গ্রুপের ৩ সদস্য গ্রেফতার
- বগুড়া অফিস
- ০৯ মে ২০২৪, ১৯:৪১
বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোতে রেকি করে ‘আঙ্গুল কাটা গ্রুপ’। কিছুদিন পরে সেখানে এসে সুযোগ বুঝে মাত্র ১০ মিনিটে চুরি করে সটকে পড়েন তারা।
‘আঙ্গুল কাটা গ্রুপ’ নামের এই চোর চক্রের মূল টার্গেট সোনা বা মোবাইলের দোকানে চুরি করা। বগুড়া জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এমনই এক চোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে ১৭ ভরি সোনাসহ চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগরের ‘আঙ্গুল কাটা গ্রুপের’ প্রধান রুবল ওরফে আঙ্গুল কাটা রুবেল (২৭), একই জেলার দক্ষিণ সদরের শাহজালাল (৪৬) ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ইব্রাহিম নয়ন (৩০)। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় দুটি থেকে ১২টি পর্যন্ত চুরির মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, গত ২০ এপ্রিল বগুড়া শহরের নিউ মার্কেটে আল-তৌফিক জুয়েলার্স নামের একটি সোনার দোকানে চুরি হয়। চোরের দল ওই দোকানের শাটারের তালাকেটে সোনার দোকানটিতে প্রবেশ করে ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে। মাত্র ১০ মিনিটে চোর দলের সদস্যরা চুরির ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় পরদিন সদর থানায় মামলা হয়। এরপর থেকে চোরের দলটিকে ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। ঘটনাস্থলের আশপাশের দুটি সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রায় এক সপ্তাহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে চোর দলের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ চোর দলের সদস্য। আঙ্গুল কাটা রুবেল চোর দলের প্রধান। তার নামেই দলটির নামকরণ হয়েছে। রুবেলের নেতৃত্বে ১২জন সদস্য কাজ করেন। তাদের প্রধান টার্গেট সোনা ও মোবাইলের দোকান। তারা প্রথমে ক্রেতা সেজে কোন দোকানে চুরি করবেন, সেই টার্গেট ও পরিকল্পনা করেন।
কয়েকদিন পর সেখানে এসে সুযোগ বুঝে চুরি করে সটকে পড়েন। গ্রেফতার নয়নের দায়িত্ব ছিল স্বর্ণের দোকানের তালা কাটা। বাকিরা ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করেন। ঘটনার দিন চুরি করা স্বর্ণ নিয়ে যাওয়ার সময় তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।
পরবর্তীতে চক্রটির প্রধান রুবেলের নির্দেশে নাটোর জেলার মাদরাসা মোড়ে একত্রিত হয়ে তারা কুমিল্লা গিয়ে নিজেদের মধ্যে চুরির মালামাল ভাগ করে নেন। দলের প্রধান রুবেলের ভাগে পড়ে ১৭ ভরি স্বর্ণ। তিনি সেগুলো কুমিল্লার সোয়াগাজী বাজারে বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সের মালিক গ্রেফতার শাহজালালের কাছে বিক্রি করেন। গ্রেফতার এড়াতে তারা প্রত্যেকে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রথমে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় ইব্রাহিম নয়নকে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোর দলটির প্রধান আঙ্গুল কাটা রুবেল ও স্বর্ণ ব্যবসায়ি শাহজালালকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির কথা স্বীকার করেছেন।