১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাবিতে ছাত্রদল নেতাকে হলরুমে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

রাবিতে ছাত্রদল নেতাকে হলরুমে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে - ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতাকে ক্যাম্পাস থেকে ধরে নিয়ে হলকক্ষে তিনঘণ্টা আটকে রেখে মারধর, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এ সময় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তোলেন ওই ছাত্রদল নেতা।

গতকাল সোমবার (৬ মে) রাত ১০টা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে তুলে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ভুক্তভোগী হলেন নাফিউল ইসলাম জীবন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক। তিনি আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।

এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। তার অনুসারীরা হলেন, সহ-সভাপতি মনু মোহন বাপ্পা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ শেখ, সাদিকুল ইসলাম সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ ও মাদার বখ্শ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিশকাত হাসান।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্দেশনা মোতাবেক তাদের কর্মী সভা থাকায় সোমবার রাত ৯টার দিকে নাফিউল তার এক বন্ধুর সাথে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানাতে আসেন। একপর্যায়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা তাকে অনুসরণ করলে বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন। ফলে নাফিউলের সাথে থাকা মোটরসাইকেল করে রোকেয়া হলের পশ্চিম পাশের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় ছাত্রলীগ নেতারা তাদেরকে পথরোধ করে আটক করেন। এরপর তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে আসেন।

তার কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তাকে মারধর করেন গালিব। একপর্যায়ে পিস্তল দেখিয়ে ওই ছাত্রদল নেতাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন তিনি। পরে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাদের কাছে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করতে বলেন নাফিউলকে। পরে রাত দেড়টার দিকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে তুলে দেন ছাত্রলীগ নেতারা।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, এর আগেও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা মেরেছে। গতকাল ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে পারে- এমন সন্দেহ থেকে তাকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। পরে তার কাছে কোনো তথ্য প্রমাণ না পাওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা নাফিউল ইসলাম বলেন, আমাকে রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত জোর করে তুলে নিয়ে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় আমাকে মারধরও করা হয়। গালিব তার পিস্তল দিয়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছিলেন। তিনি আমার পায়ে গুলি চালান, কিন্তু পিস্তলে বুলেট ছিল না। এছাড়াও প্রায় তিন ঘণ্টা আমাকে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এছাড়াও সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে বাধ্য করান।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, একা পেয়ে আমাদের সংগঠনের এক নেতাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে ছাত্রলীগ। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

এছাড়া প্রক্টরকে বারবার কল দিয়েও আমরা তাকে পাইনি। ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, কিছুদিন আগেও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তারা বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে চেয়েছিল। গতকাল আবারও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে- সেই সন্দেহ থেকে তাকে নিয়ে এসে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তবে সন্দেহ মোতাবেক কোনোকিছু তার কাছে পাওয়া যায়নি। পরে আমরা তাকে পুলিশের কাছে না দিয়ে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে তুলে দিয়েছি। তার মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইল সকলের সামনেই আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। তার গায়ে আমি বা আমার কোনো নেতাকর্মী হাত তুলেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমি রাতেই মাদার বখ্শ হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। তাদের প্রক্টরিয়াল অফিসে এনে তাদেরকে মারধর করা হয়েছে কিনা জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়। মারধর বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের কোনো অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগীরা। কিছুক্ষণ পর তাদেরকে আমরা ছেড়ে দেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সিরিয়া যাচ্ছেন কাতারের প্রতিনিধিদল ভারত কখনো চায়নি বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক : মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘উৎপাদনের জন্য কৃষি পণ্য ও উপকরণ সহজলভ্য এবং সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে’ পলিথিনে মোড়ানো নবজাতকের লাশ! আপনাকে ধরে এনে বিচার করা হবে : মোবারক হোসেন কালীগঞ্জে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উলামা পরিষদের বিক্ষোভ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরে যাবো : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতকে দেয়া ‘বিশেষ সুবিধা’ বাতিল করল সুইজারল্যান্ড বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাবি ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের শ্রদ্ধা কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত মাইকেল জ্যাকসনের অপ্রকাশিত গানগুলো শুধু একজনই শুনতে পারবেন!

সকল