১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায়

বৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় - ফাইল ছবি

রাজশাহীসহ সারা দেশ তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত। টানা তাপদাহের কারণে সেচ সঙ্কটে পড়েছে বোরো আবাদ। ঝরে পড়ছে গাছের আম। পাট, ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসল ঝলসে গেছে। ছোট অবস্থাতেই ফেটে যাচ্ছে লিচু। এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় ও বৃষ্টির ফরিয়াদ জানিয়ে রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

মঙ্গলবার রাজশাহীর বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলায় এই নামাজ আদায় করেন তারা।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত শাহদৌলা সরকারি কলেজ মাঠে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়। নামাজে ইমামতি ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বাঘা শাহী মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো: আশরাফ আলী। এতে অংশ নেন বাঘা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীসহ স্থানীয় মুসল্লিরা।

বেলা ১১টার দিকে পুঠিয়া উপজেলার পিএন মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। পুঠিয়া উপজেলা ওলামা পরিষদ এই নামাজের আয়োজন করে। নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম। নামাজ শেষে রাজশাহীসহ সারা দেশে বৃষ্টির জন্য দোয়া করা হয়।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঘা উপজেলায় বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আড়ানী পৌর এলাকার গোচর গ্রামের মন্টু আলী ও রোকেয়া বেগমের উদ্যোগে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় কিছু মানুষের বিশ্বাস ব্যাঙের সঙ্গে ব্যাঙের বিয়ে দিলে অনাবৃষ্টি কেটে যাবে।

এর আগের দিন সোমবার চারঘাট উপজেলার তাতারপুর গ্রামে বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত গ্রামের বেশ কিছু বাড়িতে বৃষ্টির জন্য গান গাওয়া শেষে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। বিয়ে শেষে সন্ধ্যায় ছিল খাবার আয়োজন। ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন নামের দুই শিক্ষার্থীর উদ্যোগে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়।

গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) থেকে রাজশাহীতে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ওইদিন রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মূলত পহেলা এপ্রিল থেকেই রাজশাহীতে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ছিল। কিন্তু গেল সপ্তাহ থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এর আগের দুই দিন ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সাধারণত ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল দীর্ঘ ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে এর আগে ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরো সংবাদ



premium cement