ছাত্র-জনতার ওপর হামলা : নাটোরে আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

নাটোরের গুরুদাসপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ১৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এতে আরো অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: গোলাম সারওয়ার হোসেন।

নামীয় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সবুজ ফকির, কল্লোল ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মিল্টন উদ্দিন, যুবলীগ নেতা জামাল সরকার, নিষিদ্ধ সংগঠন গুরুদাসপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবলুর রহমান, বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, ধারাবারিষা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও আওয়ামী লীগ সমর্থক জাহিদুল ইসলামসহ আরো অনেকে।

এর আগে বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থী মো: আব্দুল্লাহ গুরুদাসপুর থানায় মামলাটি করেন।

আব্দুল্লাহ উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের সাখাওয়াত সরদারের ছেলে। তিনি আহম্মেদপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই গুরুদাসপুর পৌরসভার বঙ্গবন্ধু সরকারী টেকনিক্যাল কলেজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের মিছিল বের করে থানা চত্বর হয়ে বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজ এলাকায় পৌঁছালে ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আসামিরা এলোপাতাড়ি হামলা করে। এতে স্কুল-কলেজের আন্দোলনরত অন্তত ১০জন শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়ে জখম করা হয়। আন্দোলনে ছাত্র-জনতার চিৎকারে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মো: আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের মিছিল চলার সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা প্রকাশ্যে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছিল। এ সব ভিডিও ও স্থিরচিত্র সংরক্ষতি আছে। সব তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা সবাই হামলার সাথে জড়িত। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।’

তবে হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাবলুর রহমান।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা করলে বুধবার রাতেই এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলার বেশিরভাগ আসামি গত ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। পাশাপাশি মামলাটি তদন্ত করে দেখা হবে।’