০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

বিএনপি নেতা পিন্টু হত্যার অভিযোগে হাসিনাসহ ২৭ জনের নামে মামলা

সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন পিন্টু - ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় অসুস্থ বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন পিন্টুকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে হত্যা করার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে পিন্টুর ছোট ভাই নাসিম উদ্দিন রিন্টু রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলা করেন।

এ মামলার শুনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাজি সেলিম, ইরফান সেলিম, তৎকালীন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, রাজশাহীর উপ-কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) বজলুর রশিদ, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার শফিকুল ইসলাম খান এবং জেলার শাহাদাত হোসেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন পিন্টুকে ২০০৯ সালে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি করা হয়। এ মামলায় ওই বছরের ৩ জুন পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও আদালত এ মামলার রায়ে নাসির উদ্দিন পিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে পিন্টুকে পঙ্গু করে দেয়া হয়। পরে পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আকতার কল্পনা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। এছাড়া ২০১৪ সালে পিন্টুর চিকিৎসার জন্য উচ্চ আদালতে পিটিশনও দাখিল করেন। এরপর আদালত নিজ খরচে পিন্টুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ আই হসপিটালে নিয়মিত চিকিৎসার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের এ নির্দেশ অমান্য করে প্রথমে তাকে নারায়ণগঞ্জ ও পরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, আদালতের চিঠি পেয়ে ২০১৫ সালের ২ মে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা: রইছ উদ্দিন কারাগারে গেলেও কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার অজুহাতে পিন্টুকে চিকিৎসার সুযোগ দেয়নি। এর পর দিন তার মৃত্যু হয়। তবে রাজশাহীর তৎকালীন ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদ ওই সময় নাসির উদ্দিন পিন্টুর মারা যাওয়ার ঘটনাকে ‘নরমাল ডেথ’ বলে প্রচার করেন।

মামলার পর বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক রানা গণমাধ্যমকে জানান, ‘আদালত হত্যা মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

পিন্টুর ছোট ভাই নাসিম উদ্দিন রিন্টু এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে তিনি জানান, ‘২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে হাজি সেলিমকে বিপুল ভোটে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তার ভাই। পরাজয়ের পর এতে তিনি ঈর্ষান্বিত হন। ক্ষমতায় আসার পর হাজি সেলিমসহ অন্যরা তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিডিআর হত্যা মামলার আসামি করেছিলেন। তাদের পরিকল্পনাতেই আমার ভাই পিন্টুকে কারা অভ্যন্তরে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি।’


আরো সংবাদ



premium cement