১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মানব মস্তিষ্ক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

-

সাম্প্রতিক সময়ে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবকিছুকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে মানবশক্তি অগ্রাহ্য করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে এমনটা ভাবা ভুল হবে। কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যত ভালো কাজই করুক না কেন, এখন পর্যন্ত মানুষের চেয়ে বেশি সৃজনশীল হতে পারেনি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক কাজের একক সমাধান হলেও, মানব মস্তিষ্কের সাধারণ বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ভবিষ্যতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সৃজনীক্ষমতা সংযোজন করতে পারলে তা নিশ্চয়ই চমৎকার হবে, তবে সেটি পরিপূর্ণ মানুষের প্রতিস্থাপন করার পরিবর্তে মানুষের সহকারী হিসেবে কাজ করবে।
চার পাশে তথ্য-উপাত্তের কোনো কমতি নেই, কিন্তু সেগুলো যাচাই-বাছাই করে বিশ্বস্ত উৎস নির্বাচন করার ক্ষমতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেই। কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে কর্মের যোগান দেওয়া সম্ভব হলেও, চিন্তার বিকল্প যোগানদাতা আবিষ্কার এখনো করা যায়নি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ করা গেলেও, কোনো তথ্য দিয়ে কী নির্দেশ করে তা বিচার করার ক্ষমতা কেবল মানুষেরই আছে। তথ্য বিবেচনা করে কোনো সিদ্ধান্তের প্রভাব সমাজের প্রেক্ষাপটে সুফল বয়ে আনবে তা যন্ত্র বা সফটওয়্যার বুঝবে না।
আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রকাশ করার ক্ষমতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে আলাদা বিশেষত্ব বহন করে। সামাজিক এবং মোবাইল প্রযুক্তি দ্রুত গ্রহণের ফলে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের উপায়কে ভিন্ন করেছে। যার ফলে ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্তি মানুষের আবেগিক বুদ্ধিমত্তা ও সহানুভূতি কমিয়ে দিচ্ছে। এই কারণেই মানসিক বা আবেগিক বুদ্ধিমত্তা (ইকিউ) দক্ষতার চাহিদা বাড়ছে। যতক্ষণ কর্মক্ষেত্রে মানুষ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আবেগিক বুদ্ধিমত্তা দক্ষতার মূল্যায়ন হবে, কারণ এটি মিথস্ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের সহযোগিতা ও দলগত কাজে পারদর্শিতার গুণাবলীর প্রতি দৃষ্টিপাত করে। কেননা কর্মীরা দলগতভাবে কাজ না করতে পারলে যেমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হয়, তেমনি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ হয়। কর্মক্ষেত্রে অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা, সম্মান প্রদর্শন করা, সঠিক অঙ্গভঙ্গি করা, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা, অনলাইন যোগাযোগ করা, উদারতা, প্রতিক্রিয়া দেওয়া ইত্যাদি প্রতিদিনকার কাজ। ইদানীং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে শ্রবণ ও বাচনিক পারদর্শিতা প্রদর্শন করলেও মানুষের ন্যায় কার্যকরী আন্তঃযোগাযোগে এটির বিচরণ নেই।
সময়ের সঙ্গে আমরা নানা বিষয় শিখি, বর্জন করি। আজ যে কাজ ভালো ফলাফল এনে দিয়েছে, আগামীকাল তা একইরকম থাকবে তা বলা যায় না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন সংস্করণে আসার কম সময়ে মানুষ মানিয়ে নিতে পারে বিধায় কর্মক্ষেত্রে মানুষের অংশগ্রহণ অগ্রাহ্য করার যৌক্তিকতা নেই।
কর্মক্ষেত্রে বিপুল কর্মীর সংযোগ হওয়ার পথ সহজ করতে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষমতার প্রয়োজন হয়। আন্তর্জাতিক পরিসীমায় প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ধরে রাখতে অন্য সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক মতাদর্শ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করতে হয়। কর্মক্ষেত্রে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা দলগত কাজে নির্দেশনা দেয় প্রত্যেকের কাজই নেতৃত্বের আওতাভুক্ত। একজন নেতাই দলের প্রত্যেকের সেরা গুণ চিহ্নিত করতে পারে, দুর্বলতাকে সক্ষমতায় পরিণত করতে পারে। যেকোনো ক্ষেত্রে সফলতা পেতে হলে, যেসব বিষয় সুবিধা দিতে পারে তার মধ্যে এটি অন্যতম। কর্মী নেতৃত্ব দিতে পারলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পক্ষে তা সম্ভব নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
খুলনায় পাটের বস্তার গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট সোনাগাজীতে উপজেলা যুব মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেফতার কুবিতে পিএইচডি ও এমফিল চালুর সিদ্ধান্ত প্রবাসীদের স্বজনদের জন্য শাহজালালে ওয়েটিং লাউঞ্জ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ‘আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার বাদীদের শাস্তির দাবি’ ঢাবি ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনায় বিশেষ কমিটি গঠন খুলনায় আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণচন্দ্রকে ডিম নিক্ষেপ মৌলবাদ থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে : আসিফ নজরুল নুর ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা : চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় পুলিশ বাহিনীর নিজেদের প্রমাণ করার এখনই সময় : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কিছু ঘটলে আন্তর্জাতিকভাবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলে ধরা হয় : আসিফ নজরুল

সকল