জনপ্রিয়তার শীর্ষে জুম
- সুমনা শারমিন
- ২৬ জুন ২০২০, ০০:০০
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ বা ঘরে বসে কাজ করছি আমরা কমবেশি সবাই। ঘরে বসে কাজ করা এবং তা ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা মনিটর করা, কর্মীরা সময়মতো কাজ শুরু করল কিনা ইত্যাদি যথাযথভাবে দেখার প্রয়োজন হচ্ছে। ওয়ান টু ওয়ান যোগাযোগে জনপ্রিয় সব ভিডিও কলিং সফটওয়্যারের মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে জুম, মাইক্রোসফট টিমস, গুগল মিট, গুগল ক্লাসরুম, হাউজ পার্টি, ওয়েবেক্স ইত্যাদি অ্যাপভিত্তিক এই ভিডিও কলিং সফটওয়্যারগুলো। লকডাউনের কারণে আকাশচুম্বী চাহিদা দেখা গেছে জুম ভিডিও কমিউনিকেশনস ইনকরপোরেশনের তৈরি রিমোট কনফারেন্সিং অ্যাপ জুমের। একই সাথে জুমের ব্যবসা বেড়েছে রকেট গতিতে। গত ডিসেম্বরে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর জুমের ব্যবসায় এতটাই উল্লম্ফন ঘটেছে যে বাজার মূল্যে প্রতিষ্ঠানটি এখন মার্কিন চিপ নির্মাতা এএমডিকে পেছনে ফেলেছে।
২০১১ সালে চীনভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবসায়ী এরিক ইউয়ান জুম প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ছয় মাস আগেও ভিডিও কনফারেন্সিং প্লাটফর্ম হিসেবে সাধারণ মানুষ শুধু স্কাইপের নামই জানত। সারা বিশ্বে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল এক কোটি। লকডাউন শুরুর পর থেকে জুমের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে। গত এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী, এখন দৈনিক ৩০ কোটির বেশি মানুষ সক্রিয়ভাবে জুম ব্যবহার করে অফিস ও অন্যান্য মিটিং এবং অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে জুম। কিন্তু তথ্যনিরাপত্তা ইস্যুর কারণে সেবাটিতে বড় ধরনের পটপরিবর্তনও দেখা গেছে। মার্কিন সিনেটরদের অ্যাপটি ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে শিক্ষার্থীদের দূরশিক্ষণ কর্মসূচিতেও অ্যাপটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জুম ব্যবহারে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আরো কয়েকটি দেশ ও প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় ব্যবহারকারীদের আস্থা ফেরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অ্যাপটির ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বেড়েছে ঘরে বসে কাজ করার প্রবণতা। ভাইরাসটির সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ায় দূরশিক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহারও বেড়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বিভিন্ন ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ। লকডাউন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে করপোরেট অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। এমনই একটি সেবা হলো জুম। ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ হিসেবে এটি যুক্তরাজ্যে প্রথম ও যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রেও জুমের ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। গত ২৬ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেশটিতে অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ৩২ লাখ বার।
যদিও তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় সেই যুক্তরাষ্ট্রেই ব্যবহারকারীদের আস্থা হারাতে শুরু করেছে জুম। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন সিনেটের পক্ষ থেকে সদস্যদের অ্যাপটি ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। বিষয়টিতে ওয়াকিবহাল একজন জানিয়েছেন, সিনেটরদের ঘরে বসে কাজ করার জন্য বিকল্প প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
জুম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
শিক্ষকদেরকে ভিডিও-কনফারেন্সিং অ্যাপ জুম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সিঙ্গাপুরের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। লকডাউন ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাপটিতে ‘গুরুতর কিছু ঘটনার’ পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। সিঙ্গাপুরে লকডাউনের মধ্যেই শিক্ষকরা জুমে পাঠ নেয়ার সময় ঘটেছে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ভূগোল পাঠের সময় ভিডিও কনফারেন্সে পর্দায় দেখানো হচ্ছে ‘অশালীন ছবি’ এবং অপরিচিত কেউ এসে ‘অশ্লীল মন্তব্য’ করার ঘটনাও ঘটেছে।
ঘটনার বিস্তারিত না জানিয়ে সিঙ্গাপুরের মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রযুক্তি বিভাগের অ্যারন লো বলেন, এগুলো খুবই গুরুতর ঘটনা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখন দু’টি ঘটনাই তদন্ত করছে এবং প্রয়োজনে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হবে। সতর্কতা হিসেবে এই নিরাপত্তা ত্রুটিগুলো ঠিক না করা পর্যন্ত আমাদের শিক্ষকরা জুম ব্যবহার করতে পারবেন না। শিক্ষকদের নিরাপত্তা প্রটোকল নিয়ে আরো পরামর্শ দেয়া হবে, তারা যাতে নিরাপদ লগইন ব্যবহার করেন এবং সভার লিঙ্ক শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাড়া বাইরের কারো সাথে শেয়ার না করেন।
ইতোমধ্যে জুম অ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাইওয়ান এবং জার্মানি। নিরাপত্তার কারণে মামলাও হয়েছে অ্যাপটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড এনক্রিপশন না থাকায় এবং ‘জুমবম্বিংয়ের’ কারণে বিশ্বজুড়েই সমালোচনার মধ্যে রয়েছে লকডাউনের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয়তা পাওয়া ভিডিও কনফারেন্সিং এই সেবা। ত্রুটির কারণে আমন্ত্রিত নন এমন গ্রাহকও সভায় ঢুকে পড়ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
লকডাউনের বাস্তবতায় বিশ্বজুড়েই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে বিভিন্ন স্কুল। আর এর জন্য অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষকরা ব্যবহার করছেন জুম ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপটি। গোপনতা এবং নিরাপত্তা ত্রুটি উন্নত করতে ৯০ দিনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে জুম। এ ছাড়া উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ফেসবুকের সাবেক নিরাপত্তা প্রধান অ্যালেক্স স্ট্যামসকে। জুমের নিরাপত্তা ত্রুটি নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই সমালোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। এরই মধ্যে অ্যাপটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে গুগল, স্পেসএক্সসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। হ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা