শাসকগোষ্ঠী বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর সহিংস আক্রমণ শুরু করেছে : মির্জা ফখরুল
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ২১:১৯
অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ব্যাপক সহিংস আক্রমণ শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৯ জুন ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ও ০১ জুলাই সারাদেশের সকল মহানগরে এবং আজ সারাদেশের সব জেলা শহরে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হিংস্র আক্রমণ চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখম করেছে।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ নাটোর জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নাটোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গুরুতর আহত করে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর এবং কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন সিকদারসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়। সকাল থেকে বাগেরহাট জেলা বিএনপি কার্যালয়ের ভেতর বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ নেতাদেরকে পুলিশ বাহিনী অবরুদ্ধ করে রাখে।
নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন আড়াইহাজার থানা বিএনপি নেতা ও দুবতারা ইউনিয়ন বিএনপি নেতার ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা ও তাদেরকে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
৩০ জুন ২০২৪ তারিখ কামরাঙ্গীচর থানার একটি মিথ্যা মামলায় থানা বিএনপির ১ম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: জহিরুল হকসহ মোট ছয়জন নেতা-কর্মী এবং কোতয়ালী থানার একটি মিথ্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিকদলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার জামিন বাতিল ও তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গতকাল রাত ২টা ৩০ মিনিটের রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদ আল-আমিনকে সাদা পোশাকধারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া গত ৩০ জুন ২০২৪ তারিখ দুপুর ১২টার সাতক্ষীরা জেলাধীন কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো: কামরুজ্জামানকে রতনপুরস্থ নিজ বাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী অবৈধ শাসকগোষ্ঠী বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ব্যাপক সহিংস আক্রমণ শুরু করেছে। নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখমসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হলো আওয়ামী অবৈধ শাসন নিয়ে কেউ যেন প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়। বিএনপিসহ সমমনা দল এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতেই অবৈধ আওয়ামী দখলদার সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পৈশাচিক উন্মত্বতায় মেতে উঠেছে। এ ধরনের বর্বরতার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। নিষ্ঠুরতা, পৈশাচিকতা, বর্বরতা, অমানবিকতার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত নেতা-কর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন। তিনি উল্লিখিত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিখোঁজ নেতাদের অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জোর আহ্বান জানান।