সরকার জামায়াতকে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে : গয়েশ্বর
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১২ জুন ২০২৩, ১৪:২৮
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘নিরাপদ প্রস্থান’ চাইলে একটি মাত্র পথ খোলা আছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই সরকারকে যেতে হবে। এই সরকারের নিরাপদে প্রস্থান করতে চাইলে একটি মাত্র পথ খোলা আছে। তা হচ্ছে জনগণের মালিকানা জনগণের হাতে ফেরত দিতে হবে, তাদের ভোটাধিকার তাদের কাছে ফেরত দিতে হবে; জনগণের ১০ দফা মেনে নিতে হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। ‘শহীদ জিয়া মানেই বাংলাদেশ মহান স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’র ৪২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। পরে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে গুম হওয়া পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
সংলাপ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের নেতারা সংলাপ সংলাপ করছে। সংলাপ হতে পারে। কিন্তু তার আগে ১০ দফা মেনে নিতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সংলাপ হতে পারে।
এ সময় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। এরপর ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে নানা বক্তব্য গণমাধ্যমে আসছে। গত ১০ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে জামায়াতের সমাবেশের অনুমতি দেয়া নিয়েও নানা কথা-বার্তা আলোচনা হচ্ছে।
আসলে ভিসানীতির কারণে সরকার জামায়াতকে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, জামায়াত রাজনীতি করবে- এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এতদিন জামায়াত কেন রাজনীতি করতে পারেনি, সেটাই তো প্রশ্ন হওয়া উচিত। এখন কেন সরকার অনুমতি দিলো? এই অনুমতি দিয়ে সরকার বুঝাইতে চাইল, সরকারের সাথে তাদের আঁতাত হয়েছে- কেউ কেউ এ কথা বলছেন। আসলে সরকার জামায়াতকে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। এক ভিসানীতির কারণে সরকারের সবাই প্রেসার মাপতেছে; সুগার পরীক্ষা করছে। সবকিছুর তো শেষ আছে।
এ সময় গত সাড়ে ১৪ বছরে ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে গুম, খুন দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে কথাও বলেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, গুম, খুন, হামলা, মামলা এবং দুর্নীতির সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়ত ২-৩ শতাংশ সদস্য জড়িত থাকতে পারে। দুর্নীতি অপকর্মের সাথে সচিবালয়ের হয়ত একই অবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আমলাদের বেশিরভাগই ভালো; তারা তো সরকারের কোনো অপকর্মের দায়ভার নেবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া, না যাওয়া নিয়েও কথা বলেছেন। আবার শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার নাকি সেখানে একাধিক বাড়ি আছে, আমেরিকা না গেলে ওই বাড়ি কে দেখাশুনা করবে, প্রশ্ন রাখেন গয়েশ্বর।
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা শুধু অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছি না। এই লড়াই আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা কোনোদিন আপোস করব না এই সরকারের সাথে। এই অস্তিত্বের লড়াই করতে যেখানেই আছেন বা যেই পরিচয়েই আছেন তারা আমাদের বন্ধু।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডাকাতের খপ্পরে পড়েছে। এই ডাকাতের খপ্পর থেকে রক্ষা করতে হলে শুধু জামায়াত ইসলাম কেন রাজপথে যারাই থাকাবে আমরা মনে করব তারা ন্যায়ের পথে এবং সংগ্রামের পথে আছে।
স্বাধীনতা ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মোঃ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।