২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

৭ নভেম্বর দেশ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছিল : বুলবুল

-

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ৭ নভেম্বর স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার অঙ্গীকার গ্রহণের তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশপ্রেমিক সেনা সদস্য ও সাধারণ মানুষ সম্মিলিতভাবে ওই সময়ের দেশ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছিল। স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতন্ত্র-মানবিক মূল্যবোধ ও সাম্যের পরিবর্তে বাকশাল কায়েম, বাকস্বাধীনতা হরণ এবং দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করার প্রেক্ষাপটে জনগণ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল।

তিনি বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পরিবর্তে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের দেশ ও জাতিসত্তাবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। এমতাবস্থায় ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদেরকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ভৌগলিক অখণ্ডতা, গণতন্ত্র এবং ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জাতীয় বিপ্লব সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মু. আব্দুল জব্বার, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, শ্রমিক নেতা হাফিজুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য মুতাসিম বিল্লাহ, আশরাফুল আলম ইমন, শাহীন আহমদ খান প্রমুখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তির দোসররা সেদিন ব্যর্থ হলেও তাদের ষড়যন্ত্র মোটেই বন্ধ হয়নি। অবাধ গণতন্ত্র, সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও আমরা সে লক্ষ্যে আজো পৌঁছাতে পারিনি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যই দেশের সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। গণতন্ত্র বিরোধী সে অপশক্তি আজো তৎপর আছে। তারা ২০০৬ সালে লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে প্রকাশ্য বিদালোকে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। তারা ৩০ ডিসেম্বরের তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আবারো হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে। কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে জাতীয় নেতাদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রহসনের বিচারিক কার্যক্রমে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচজন শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাসকে রক্তাক্ত ও কলংকিত করা হয়েছে।

তিনি বিপ্লব দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা, মানবতা ও মানবাধিকার রক্ষা ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এই ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের লক্ষ্যে সকলকে ইষ্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ৭ নভেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। সেদিন সৈনিক এবং সাধারণ জনতা সম্মিলিত বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সুসংহত ও আধিপত্যবাদী শক্তির কবল থেকে দেশকে রক্ষা করেছিলেন। আধিপত্যবাদী অপশক্তি ও তাদের দোসররা আমাদের স্বাধীকার হরণের যে নীলনকশা প্রণয়ন করেছিল তা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছিল সিপাহী-জনতার যুগপৎ বিপ্লবের মাধ্যমে। মূলত ৭ নভেম্বরের চেতনা আধিপত্যবাদী ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে এক ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চেতনা। তাই বিপ্লব দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের বিপ্লবের উপযোগী মানুষ তৈরী করে বর্তমান স্বৈরাচারের হাত হতে দেশকে মুক্ত ও গণতন্ত্র উদ্ধারের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement