মিয়ানমারের সুরে কথা বলছে বিএনপি : কাদের
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ২৬ আগস্ট ২০১৯, ১৯:২৪, আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০১৯, ২১:৫২
মিয়ানমার সরকার গত দুবছর ধরে সীমান্তে যে সুরে কথা বলেছ, সে সুরে বিএনপিও কথা বলছে বলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে পুরোপুরি ব্যর্থ বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে দাবি করেছেন তার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সীমান্তে গত দু'বছরে থেকে মিয়ানমার সরকার যে উস্কানি দিচ্ছে, যে ভাষায় কথা বলছে; বিএনপিও সে উস্কানির ভাষায় কথা বলছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উখিয়া-টেকনাফে আমাদের জনসংখ্যা চার লাখ আর রোহিঙ্গা ১১ লাখ৷ এ রোহিঙ্গাদের জন্য দেশে বিদেশে তদবিরের পর তদবির কারা করেছে, এখন তারা নিজেরা রাজনীতিতে সঙ্কটের ফাঁদে পড়ে আবলতাবল বকছে। দু'বছর থেকে সীমান্তে মিয়ানমার সীমান্তে বারবার উস্কানি দিয়েছে। আমাদের নেত্রী বারবার সতর্ক করেছেন, এদের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আগের যেকোন সময়ের থেকে বেশি দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চায় না। কেন চায় না, তার একটা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। এটা নিয়ে যারা কাজ করে তারা এটা ভালো জানে। মিয়ানমার সরকারের ওপর প্রেসার আগের থেকে অনেক বেড়েছে৷ তাই ভেতরে যাই থাক এখন তারা এদের ফিরিয়ে নেওয়ার মুখে কথা বলছে, এটা শেখ হাসিনার সরকারের সফলতা।
কাদের অভিযোগ করেন, বিএনপি নেত্রী দেড় বছর থেকে দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন।কিন্তু বিএনপি নেতারা দেড় মিনিটের জন্যও আন্দোলন করতে পারেনি৷ এখন বিভিন্ন ইস্যুতে ধোঁয়া তুলে বিএনপি নেতারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে৷
বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেপরোয়া চালাকের মতো রাজনীতিতে এরা বেপোয়া হয়ে উঠেছে। ইতিহাসেট কলঙ্কজনক রক্তাক্ত ঘটনায় নিজেদের মুখোচ উন্মোচিত হওয়ায় এরা আজ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিষোদগার-মিথ্যাচার করছে। রাজনীতির পরিশুদ্ধ ভাষার ব্যবহার করতে এরা ভুলে গেছে। ১৫ ও ২১ আগস্টে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। আদালতে, জনতার আদালতে এটা এখন প্রমাণিত। আগস্ট মাসে এদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। বিএনপি এখন অপরাধের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ব্যর্থ রাজনীতিকের অসহায়ত্ব ঢাকতে দলটির নেতারা এখন মিথ্যা প্রলাপ বকছেন।
১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্টের সঙ্গে বিএনপি জড়িত দাবি করে এসময় আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক এ নেতা বলেন, আমি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের কাছে বহুদিন থেকে একটি প্রশ্ন করছি, কিন্তু তার জবাব আজও পায়নি। জিয়াউর রহমান যদি ১৫ আগস্টের সঙ্গে জড়িত নাই হতেন তিনি খুনিদের বিচারেরর পথ কেন রূদ্ধ করেছিলেন?
তিনি আরো বলেন, এখানেই আপনাদের সংশ্লিষ্টতার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এ কথা আপনারা কখনও স্বীকার করেন না। যেখানে ২০১১ সালে আমাদের আমাদের আদালতে একজন মার্কিন রাইটার সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন, জিয়াউর রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তিনি ফারুক রশিদের কনভার্সেশনে তুলে ধরে পরিস্কার করেছিলেন জিয়াউর রহমান ছিলেন সেদিনের পরিকল্পনাকারী। সেদিনে হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড জিয়াউর রহমান। আর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টার মাইন্ড তারেক রহমান, জিয়াউর রহমানের সন্তান।
কাদের বলেন, চক্রান্ত চলছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যই ছিলো প্রতিবিপ্লব গড়ে তুলে পাকিস্তানি ভাবধারয়ায় বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া। এ দলটি এখন রাজনীতিতে অপ্রাসিঙ্গিক হয়ে পড়েছে৷
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কথা থেকেই আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেছেন, বড় কাজ করতে হলে বড় ত্যাগ শিকার করতে হবে। শেখ হাসিনা সে পথেই এগিয়ে চলেছেন। তাকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত চলছে। আমি আপনাদের বলবো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের এ চক্রান্তকে প্রতিহত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের সভাপতি ও কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম প্রমুখ।