২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

খালেদা জিয়ার প্যারোল ও সংসদে যাওয়া নিয়ে স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

বেগম খালেদা জিয়া - সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি এবং দলের নির্বাচিত এমপিদের শপথ না নেয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা।

তারা এ বিষয়টিকে মীমাংসিত ইস্যু মনে করে জাতীয় সংসদে না যাওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য প্যারোলে আবেদন না করে জামিনের জন্য আইনি লড়াইকে আরো গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। কেউ দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নিলে তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও পরামর্শ দেন স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য। লন্ডন থেকে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্ত হয়ে এতে একমত পোষণ করেন। 

গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক সদস্য এসব তথ্য জানান। 
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অংশ নেন। 

বৈঠকের বিষয়ে স্থায়ী কমিটির একজন নেতা জানান, সম্প্রতি বিএনপির নির্বাচিত এমপিরা শপথ নিচ্ছেন এমন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে সিনিয়র নেতাদের মতামত জানতে চান। এ সময় উপস্থিত স্থায়ী কমিটির সবাই শপথ না নেয়ার পক্ষে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। তাদের সবার অভিন্ন মতামতের উপর ভিত্তি করে এমপিদের শপথ না নেয়ার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। কেউ অংশ নিলে তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। 

জানা গেছে, বৈঠকে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও আলোচনা হয়। এ সময় হাসপাতালে তার চিকিৎসা কেমন চলছে তা তদারকি করারও সিদ্ধান্ত হয়। 
এ ছাড়া বৈঠকে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মামলার গতিবিধি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আইনি লড়াইকে আরো জোরদার ও সমন্বিত করার সিদ্ধান্ত হয়। মামলা পরিচালনার জন্য সিনিয়র আইনজীবীদেরকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয় বৈঠকে।

‘জেলে বসে মরে যাবেন তবু আপস করবেন না’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে ভালোভাবে চিনি। তার সাথে প্যারোলের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আপোষহীন নেত্রী, জেলে বসে মরে যাবেন কিন্তু আপস করে প্যারোলে মুক্ত হবেন না।

২২ এপ্রিল (রোববার) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ও বর্তমান ছাত্রফোরাম আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল খালেক হাওলাদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডাকসুর সাবেক জিএস ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ।

সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেওয়া উপহার। তাই এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন শুরু করতে হবে।

সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যাই করি না কেন দেশনেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং গনতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর নাম আন্দোলন সংগ্রাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যখনই রাজপথে নেমেছে তখনই কিছু না কিছু হয়েছে। তাই গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশনেত্রীকে মুক্ত করার আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আমি বিশ্বাস করি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, দাবি এমনি এমনি আদায় হয় না। ৫২, ৬৯, ৭১ ও ৯০ তে কঠোর আন্দোলন করে রাজপথে রক্ত দিয়ে দাবি আদায় করা হয়েছে। তাই আমাদেরও দেশনেত্রীকে মুক্ত ও গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement