খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় হত্যার চেষ্টা হচ্ছে : রিজভী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৮ মার্চ ২০১৯, ১৩:০২
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া একটি অস্বাস্থ্যকর ও পরিত্যক্ত কারাগারের মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। ৭৪ বছর বয়সের দেশনেত্রীকে আজ এভাবে দীর্ঘ এক বছর যাবৎ নির্মম-নিষ্ঠুর নিপীড়ণের মাঝে বিনা চিকিৎসায় পুরাতন জরাজীর্ণ আবদ্ধ কারাগারে বন্দী করে রাখার উদ্দেশ্যই হচ্ছে এক অনন্ত প্রতিহিংসার জ্বালা মেটানো। দেশনেত্রীকে সরকার সরাসরি গলাটিপে হত্যা না করে এভাবে বিনা চিকিৎসায় অন্ধকার কারাগারে আটকিয়ে রেখে তিলে তিলে হত্যা করার চেষ্টা করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি লাখ লাখ কন্ঠে কোটি কোটি বার উচ্চারিত হলেও সরকার বেগম জিয়াকে নিয়ে তাদের নিজস্ব জীবনবিনাশী নকশা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই- অনেক অত্যাচার-যন্ত্রণা দিচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। এক বছরের বেশি সময় কারাগারে আটকিয়ে রেখে কষ্ট দেয়ার পরেও কেন প্রতিহিংসা শেষ হচ্ছে না। এবার তাকে মুক্তি দিন।’
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা চলছে। দেশনেত্রীকে চিকিৎসা না দেয়ার বিষয়ে সরকারের প্রতি দেশবাসীর যে ধিক্কার উঠেছে সেটিকে আমলে না নিয়ে নাৎসীবাদী পন্থায় তারা তাদের মনুষ্যত্বহীন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেই চলেছে। কেরানীগঞ্জ কারাগারের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। সেখানে গ্যাস-পানির এখনো তেমন কোনো সুবন্দোবস্ত নেই। নির্মাণাধীন একটি কারাগারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্থানান্তরের সরকারি চিন্তা-ভাবনা মনুষ্যত্বহীন কাজ।
রিজভী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম জিয়ার প্রতি জুলুমের উগ্রগতি বন্ধ করুন। তাকে নিয়ে রাজনৈতিক ধূর্তামি বন্ধ করুন। এই মুহূর্তে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসা প্রাপ্তির বন্ধ করা পথকে খুলে দিন। দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলায় জনগণ ক্ষোভে অগ্নিবর্ণ হয়ে উঠেছে। এই সীমাহীন অন্যায়ের জবাব জনগণ একদিন দেবে।’
রিজভী বলেন, ‘বাকশাল মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছিল’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে গোটা জাতি আঁতকে উঠেছে, তার এই বক্তব্য শুধু গণতন্ত্র নয়, নাগরিক স্বাধীনতাকে মৃত্যুর দক্ষিণ বাহু দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলার আগাম আভাস। বাকশাল হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার মৃত্যু পরোয়ানা। বাকশাল মানেই হচ্ছে আওয়ামী লীগ ছাড়া এদেশে আর কোনো দল থাকবে না। তাদের পোষ্য গণমাধ্যম ছাড়া আর কোনো গণমাধ্যম থাকবে না। তাদের বিরদ্ধে কেউ টু-শব্দটি উচ্চারণ করতে পারবে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকবে না। আর এই কারণেই শেখ হাসিনা প্রধান প্রতিপক্ষ এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির মূল কাণ্ডারী নির্দোষ বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে শেখ হাসিনা জোর করে কারাগারে আটকিয়ে রেখেছেন। জামিনযোগ্য মামলাগুলোতে হুকুম দিয়ে জামিন বাধাপ্রাপ্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়ার প্রতি সরকারের এই ধরণের অন্যায় আচরণই হচ্ছে বাকশালের আলামত।