রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অস্বচ্ছতার প্রতীক : সৈয়দ আবুল মকসুদ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৭ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৫৮, আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০১৮, ১৯:২৫
বাপা’র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট লেখক-বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, সুন্দরবনের পাশে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি একটি অস্বচ্ছতার প্রতীক। প্রকল্পটি কেবল আত্মঘাতী নয়, এর ভেতরে অস্বচ্ছতায় ভরা। আর এজন্য এ প্রকল্পটি নিয়ে সরকার দেশের পরিবেশবাদীদের সাথে কোনো ধরণের মুক্ত ও গঠনমুলক আলোচনায় রাজী নয়। বরং পরিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে নানান ধরণের কুৎসা রটাচ্ছে।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
“সুন্দরবন রক্ষায় অবিলম্বে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বেপরোয়া শিল্প স্থাপন বন্ধের” দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আবুল মকসুদ আরো বলেন, বাংলাদেশে নারী নদী ও বনভ’মি চরমভাবে আক্রান্ত। দেশে কোনো বন বিভাগ আছে বলে মনে হয় না। থাকলে সুন্দবনের এমন হাল হত না।
তিনি বলেন, সুন্দরবন এখন সরকারের নানান কর্মকাণ্ডে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে। অথচ এ সন্দুরবন আমাদের দেশের মানুষের গর্ব ও আমাদের অমূল্য সম্পদ।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি কর্তৃক সরকারের নিকট জমাকৃত ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিবেদন এবং সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন ও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির জুলাই’১৭ সভার সুপারিশের ভিত্তিতে বন রক্ষায় সার্বিক পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে নিয়োজিত বিশেষ রেপোরটিয়ার প্রদত্ত সুন্দরবন বিষয়ক সর্বশেষ ও শক্তিশালী বিবৃতির প্রেক্ষিতে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বাপা’র সহ-সভাপতি ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, সুন্দরবন বিষযে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির প্রস্তাব সস্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নির্মাণের সকল কাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবনের পার্শ্ববতী বা অব্যন্তরের নির্মাণাধীন ও পরিকল্পিত ৩২০টি ও সকল সরকারী-বেসরকারী প্রকল্প ও স্থপানা অপসারণ, নির্মানাধীন প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ বরাদ্দকৃত সকল প্লট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ কর্তৃক উপস্থাপিত রির্পোট পড়ে শোনান তিনি। এতে বলা হয় বাঘের আবাসভূমি সুন্দরবন বেপরোয়া শিল্পায়নে হুমকির মূখোমূখি। তাই বাংলাদেশকে অবশ্যই সুন্দরবন সংরক্ষিত বনের মধ্যে শিল্পায়ন বন্ধ করতে হবে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, এমন কোন দিন নাই যে পরিবেশবাদীরা সরকারকে সুন্দরবনের পাশে এধরণের ক্ষতিকর প্রকল্পটি না করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে না। অথচ সরকার কোনোভাবেই কর্ণপাত করছে না। তারা সুন্দরবনকে ঘিরেই সব ধরণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মোঃ আব্দুল মতিন, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিলসহ মোঃ মোজাহেদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।