২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`

৫২ জাতীয় স্বাধীনতার প্রথম সোপান : রিজভী

- ছবি : নয়া দিগন্ত

‘আবার যদি দেশে ফ্যাসিজমের উত্থানে হয়, একুশের চেতনাই তা রুখবে’ বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘৫২ ছিল জাতীয় স্বাধীনতার প্রথম সোপান।’

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা অম্লান চেতনা, এই চেতনা কোনোদিন ম্লান হবে না। যদি আবারো কোনো ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটে, কোনো ধরনের ডিক্টেটরের উত্থান ঘটে, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের দামাল ছেলেদের, তারা এদেশের জনগনকে আবারো রাজপথে লড়াইয়ে নামতে উদ্বুদ্ধ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, ৫২ একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে আমাদের কাছে এমন একটি চেতনা। এমন একটি বৈপ্লবিক আদর্শ যা আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে, যেটাকে কখনোই ধ্বংস করা যায় না, যেটিকে কখনোই ম্লান করা যায় না। একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে অনাধিকাল ধরে যতদিন পৃথিবী মানুষ এবং আমাদের সমাজ-সংসার থাকবে, ততদিন আমাদেরকে সাহস যোগাবে এবং লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’

রিজভী বলেন, ‘একুশ মানে অধিকারের সংগ্রাম, একুশ মানে সাংস্কৃতিক সংগ্রামও। এটা ছিল জাতীয় স্বাধীনতার প্রথম সোপান, এই ভাষা আন্দোলনের সোপান পেরিয়ে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছি স্বাধীনতার যুদ্ধের দিকে, আমাদের মহা অর্জন আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। যখনই আমরা স্বৈরাচারের কবলের মধ্যে পড়েছি, যখন দেশে গণতন্ত্রহারা মানুষ বন্দিশালার মধ্যে বাস করেছে, তখন ‘৫২ আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে, আমাদের প্রেরণা জাগরিত করেছে কিভাবে আমরা এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, অত্যাচারির বিরুদ্ধে লড়াই করব। একুশের প্রেরণাতে আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি, অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। তাদের রক্তাক্ত পথপেরিয়ে চূড়ান্ত যে আন্দোলন, ছাত্র-জনতার যে বিপ্লব তার মধ্য দিয়ে সেই ভয়ঙ্কর উপীড়ক এবং রক্তপিপাসু স্বৈরাচার, ভয়ঙ্কর দুর্নীতিবাজ সরকার তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি অন্তর্বর্তী সরকার, এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে একটি অবাধ নির্বাচন করা এবং তার সাথে আরো কিছু আনুসাঙ্গিক কাজ আছে, বিভিন্ন সংস্কার আছে। যেটা প্রয়োজনীয় সংস্কার যেটা যে সময় আছে সেই সময় করা সম্ভব। কিন্তু জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে, দেশের জনগণ এবং তরুণ প্রজন্ম আজকে যাদের ১৮ বছর বয়স, যাদের একুশ বছর বয়স তারা কেউ ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তারা জানে না। কারণ ১৭ বছর ভোট হয়েছে চতুস্পদজন্তু দিয়ে ভোট কেন্দ্রে, দিনের ভোট রাত্রে করেছে। এগুলো থেকে উত্তরণে ঘটিয়ে জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করার জন্যই একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। এটা সরকারের দায়িত্ব।’

রিজভী বলেন, ‘আগে স্থানীয় সরকার না, পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এই বির্তকে আমার মনে হয় অন্তর্বর্তী সরকারের অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। বরং এই সরকারকে প্রথমেই জনগণের ক্ষমতা জনগনকে ফিরিয়ে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে যে সরকার গঠন করবে তারাই নির্ধারণ করবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন না অন্যান্য নির্বাচন কখন হবে। আপনারা দেখেছেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী জিতেছে, সিলেট সিটি নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান জিতেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশনে মোহাম্মদ হানিফ জিতেছে, বিএনপির সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করায় বিরোধীরা জিতেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সেটা হয়নি।’

‘খালেদা-তারেক নিয়ে ফেসবুকে দেয়া তথ্য সঠিক নয়’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু নেতা বা কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখছেন যে আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি হবে, এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। কিন্তু এটা আমাদের দল বিএনপির অবস্থান নয়। এই কথাটা আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলাম।’

এর আগে ভোর সাড়ে ৬টায় নিউ মার্কেটের কাছে বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিশাল প্রভাব ফেরি আজীমপুর কবরস্থানে যায় রিজভীর নেতৃত্বে। সেখানে ভাষা শহীদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসে বিএনপির প্রভাত ফেরি। নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে। রিজভীর নেতৃত্বে শহীদ মিনারের বেদীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

তাদের মধ্যে ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরাফত আলী সপু, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


আরো সংবাদ



premium cement
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণ নয়, শ্লীলতাহানি হয়েছে : পুলিশ সুপার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে পারে আমেরিকা চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতহানির ঘটনায় আরো ৩ জন গ্রেফতার ইবির আল কুরআন বিভাগের প্রথম পুণর্মিলনী অনুষ্ঠিত রাজনীতিবিদদের মাঝে বিভেদ থাকলে সামনের দিনগুলো খারাপ হতে পারে : আবুল আসাদ ডুসাসের নেতৃত্বে শুয়াইব-আশিক ইসলামী যুব মজলিসের নতুন কমিটি গঠন বাংলাদেশ পৃথিবীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল : ধর্ম উপদেষ্টা সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য পরিবেশের সুরক্ষা করতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যাকাত গুরুত্বপূর্ণ : বাণিজ্য উপদেষ্টা

সকল