সমালোচনা আর চাপের মুখে সরকারের সামনে যে ৬ চ্যালেঞ্জ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:০৪
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এবং অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাসে নানা সঙ্কট আর জটিলতা সামনে এসেছে। সরকারের '‘হানিমুন পিরিয়ড’ শেষ উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলেছে, শুরুর সময়ের তুলনায় সরকার সমর্থন হারাচ্ছে।
বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের ওপর চাপও বাড়ছে।
‘এই সরকার জনসম্পৃক্তহীন অবস্থায় আছে,’ বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জোবাইদা নাসরীন।
তিন মাস আগেও সরকারকে দশের মধ্যে ছয় রেটিং দেয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন জোবাইদা, এখন সেটা চার হবে বলে মনে করছেন তিনি।
বিপুল প্রত্যাশার বিপরীতে অর্জনের জায়গার প্রতিফলন নিয়ে প্রশ্নের জায়গা রয়েছে। এমন অবস্থায় কোনো কোনো বিষয় সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা যাচ্ছে? সমালোচনার জায়গাগুলোই বা কী?
১. নির্বাচন
২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সময় ধরেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
তবে পরিষ্কার রোডম্যাপ না থাকার প্রশ্ন তুলেছে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দ্রুত নির্বাচন দেয়ার জন্য লাগাতার বলে যাচ্ছে দলটি। এমনকি নির্বাচন এই বছরের মাঝামাঝি জুলাই-অগাস্টের মধ্যে সম্ভব, এমনটাও বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বড় রাজনৈতিক দলের এমন চাপ সরকারকে কিছুটা হলেও বেকায়দায় ফেলে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমেদ।
তবে একই সাথে নির্বাচন ঘিরে আরো যে একটি প্রসঙ্গ রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে সেটা নির্বাচনের সময় সরকারের নিরপেক্ষতা। সরকারের সাথে যুক্ত থাকা অবস্থায় ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের প্রেক্ষাপটে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের কড়া সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই গভর্নমেন্ট নিরপেক্ষতা তো হারিয়েছে। আজকে বহু লোক পাবেন যারা বলবে এ অভ্যুত্থানের যে লক্ষ্য ছিল সেটা ব্যর্থ হয়ে গেছে।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, গণ অধিকার পরিষদের মতো দলের নেতারাও সরকারের সমালোচনা করছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক ম্যান্ডেট নিয়েও অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলো থেকে নির্ভরযোগ্য ও জবাবদিহিতামূলক করার চ্যালেঞ্জ যেমন আছে, তেমন নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিভাবে কার্যকর উপায়ে হবে, আছে সেই প্রশ্নও।
এসব মিলে সরকারের জন্য গ্রহণযোগ্যতা ধরে রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
২. রাজনৈতিক অবিশ্বাস
ছয় মাসের সময়কালেই নানা ধরনের রাজনৈতিক বিভাজন, দ্বন্দ্ব আর অবিশ্বাসের জায়গা দেখা যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘিরে। 'কিংস পার্টি' বিতর্কে সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ দু’জনেই বলেছেন, রাজনীতি করলে তারা সরকারি পদ থেকে বের হয়ে যাবেন।
কিন্তু তাতে করে বিএনপি থেমে যায়নি। দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকে ক্রমাগত বলা হচ্ছে, নতুন দলকে তারা স্বাগত জানাবেন, কিন্তু সরকারে থেকে দল গঠন হলে সেটা জনগণ মেনে নেবে না।
এর আগেও রাষ্ট্রপতি অপসারণ ও জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে ছাত্রনেতাদের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ দেখা গেছে।
সরকারের সমর্থনে দল হলে সেটা বিএনপির জন্য আঘাত তৈরি করে কিনা, কিংবা ‘এই সরকারটা আবার এক এগারোর মতো আচরণ করে কিনা তাদের সাথে’ এমন শঙ্কা থেকেই বিএনপি ছাত্রদের দল নিয়ে বিরোধিতা করছে বলে মনে করেন সাব্বির আহমেদ।
আবার জামায়াতে ইসলামীর সাথে বিএনপির পরস্পরবিরোধী অবস্থান দেখা গেছে সরকারকে ঘিরে।
বহু মন্ত্রণালয়ে ‘বিশেষ দলের ছায়া বিশেষ প্রসারিত’ উল্লেখ করে ২৮ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তোলেন ‘এখন কি আমরা এটাকে বলবো জামায়াত সমর্থিত সরকার?’
এর এক মাস আগে ‘একজন চাঁদাবাজ পালিয়েছে, আরেকজন চাঁদাবাজিতে লেগে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
৩১ জানুয়ারি এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘তাড়াহুড়া করে আমরা নিজেরাও ক্ষমতায় যেতে চাই না, কেউ তাড়াহুড়া করে ক্ষমতায় যাক সেটাও আমরা চাই না।’
এছাড়াও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ঘিরেও হয়েছে আলোচনা আর বিতর্ক। মুক্তিযুদ্ধকে পাশ কাটানোর মতো অভিযোগও এসেছে বিভিন্ন দিক থেকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাশেদা রওনক খান বলছেন, ‘সরকার তো ভীষণ রকমের চাপ অনুভব করারই কথা। কারণ বিভিন্ন দল বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করছে এবং ঐক্যের জায়গা এখনো দেখা যাচ্ছে না।’
সরকারের ভেতরেও বিভিন্ন দলের মতের মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন বা দূরত্ব এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও নানা চাপ সরকারের ওপর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের জন্য একটা ঐক্যমত্যের জায়গা সৃষ্টি করাটাই এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
সম্প্রতি শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ‘৫ আগস্টের শক্তির মধ্যে যেন একটু ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে। এটা হতে দেয়া যাবে না।’
সব পক্ষ থেকেই ঐক্য ধরে রাখার কথা বলা হলেও সরকারের যাত্রা শুরুর সময় যে ঐক্যমত্য বা আস্থার জায়গা ছিল সেটা কতটা ধরে রাখা সম্ভব হবে সেটা এখন একটা বড় প্রশ্ন।
৩. সংস্কার
যে ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ দেড় দশক ক্ষমতায় ছিল, সে ব্যবস্থার সংস্কার করতে অনেকগুলো কমিশন হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার বাস্তবায়ন কতটা করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘সংস্কার সংস্কার বক্তব্য রেখে দয়া করে এই আলাপ দীর্ঘায়িত করবেন না। কারণ আপনারা আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশ তত বেশি সঙ্কটের মুখে পড়বে।’
সংস্কার বাস্তবায়নে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ দেখছে না বিএনপি। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই সংস্কার কমিশনের সুপারিশের প্রয়োগের জায়গায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেমন নির্বাচন বা জনপ্রশাসন সংস্কারের মতো দিকে।
সংস্কার কমিশনগুলো যে রিপোর্ট দিয়েছে সেখানেও ‘ব্যাপক বিক্ষিপ্ততা, বিচ্ছিন্নতা’ রয়েছে এবং সেগুলোর ‘জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা নেই’ বলে মনে করছেন জোবাইদা নাসরীন। সরকার নিজেই ‘জনসম্পৃক্তহীন' অবস্থায় আছে এবং প্রক্রিয়াগত দিক দিয়ে সংস্কারের বিষয়ে জনগণের প্রাপ্যতার জায়গা এখনো পাওয়া শুরুই হয়নি বলে মনে করছেন তিনি।
অন্তত গুরুত্বপূর্ণ বা মৌলিক কিছু সংস্কারের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের দরকার হবে। যদিও বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে অনাস্থা রয়েছে এই ইস্যুতেও।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা প্রশ্ন তুলেছেন সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে।
এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছিলেন, ‘নির্বাচিত, অনির্বাচিত, সেনাশাসন, সব ফরম্যাটে কিন্তু কেউ এই সংস্কারের কাজটুকু করতে পারে নাই। এই সুযোগটা আমরা মিস করতে চাই না।’
সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও বিবিসিকে বলেছেন, ‘বিচার এবং সংস্কার আমাদের জন্য বেশি প্রায়োরিটি। আমরা ছাত্ররা কিন্তু সরকারে এসেছিই সেই ওয়াচডগের ভূমিকা পালন করতে।’
যদিও সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য একটা রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার খুব বেশি সংস্কার করতে পারবে বলে মনে করেন না বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমেদ।
‘যদি সরকারের মধ্যে এমন ভিশন (লক্ষ্য) থাকে যে আমরা অনেক কিছু করে ফেলবো, বৈপ্লবিক কিছু করে ফেলবো, সেটা বোধহয় সম্ভব হবে না। বরং তাদের অল্প কিছু সংস্কারই করতে হবে এটাই সত্য, একেবারে যতটুকু না হলেই নয়,’ বলেন তিনি।
৪. বিচার
জুলাই-অগাস্টের সহিংসতার বিচারের প্রশ্নে অন্তত সরকার বা রাজনীতিবিদের মধ্যে বিভেদ নেই। তবে বিচার সম্পন্ন করার সাথে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে।
সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ২৫ জানুয়ারিতে নিজ এলাকায় বক্তব্য রাখার সময় বলেন, হাসিনার যে প্রতিষ্ঠানে হাসিনার যে দালালরা আছে, ফ্যাসিবাদের যে দালালরা আছে, তাদের উৎখাত করেই এবং খুনিদের বিচার করেই আমাদেরকে নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে।
যদিও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিচারকাজের সাথে নির্বাচনের কোনো বিরোধ নাই, কোনো সম্পর্ক নাই। বিচার বিচারের গতিতে চলবে।’
আবার নির্বাচন যখন হবে তাতে আওয়ামী লীগ আদৌ অংশ নিতে পারবে কিনা আছে সে বিতর্কও।
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী অনেকের বিরুদ্ধেই বহু অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আদালতে। সেসব অনেক ক্ষেত্রেই যেভাবে ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হয়েছে সেগুলো প্রমাণ করতে পারার মতো জটিলতার জায়গাও রয়েছে।
সরকারের জন্য সঠিক বিচার নিশ্চিত করা ছাড়াও বড় একটা প্রশ্নের জায়গা রয়েছে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কিভাবে দেশ ছেড়ে পালালেন। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, শাজাহান খান, আব্দুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু, দীপু মনি বা সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমন অনেকেই গ্রেফতার হলেও একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের বহু নেতাই পালিয়ে গেছেন।
শেখ হাসিনাসহ সেসব নেতাদের আদৌ দেশে ফেরানো সম্ভব হবে কিনা আছে সেই প্রশ্নও। এসব প্রশ্নের উত্তর আদৌ সদুত্তর মিলবে কিনা সেদিকটাও অনিশ্চিত।
৫. দ্রব্যমূল্য, বিনিয়োগ
অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রিজার্ভ পরিস্থিতি, বিনিয়োগ পরিবেশ, এমন অনেক কিছুই সামাল দেয়া। অর্থনীতি বা ব্যাংকিং ব্যবস্থা সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হলেও মানুষের ওপর চাপ কমছে না।
সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘এখনো পর্যন্ত জনগণের জীবনে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যের অঙ্গনে স্বস্তি আনার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।’
চাঁদাবাজি, মজুতদারি, অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের মতো অনিয়ম মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি বলে সরকার জিনিসপত্রের দাম কমাতে পারছে না বলে উল্লেখ করা হয়।
বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদও স্বীকার করেন যে রাজনৈতিক সরকারের তেমন লোকজন থাকে যারা এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যেটা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।
সিন্ডিকেট ভাঙার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে এখন সরকারি কয়েকটি সংস্থার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যারা পর্যাপ্ত নয়।’
তবে জুন মাসের মূল্যস্ফীতি আটের নিচে নিতে পারার আশা প্রকাশ করেন তিনি যেটা গত কয়েক মাস ধরে দশের ওপরে রয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের সাথে কর্মসংস্থানের টানাপোড়েন মানুষের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করছে। জনগণের ম্যান্ডেট না থাকায় একটা ট্রানজিশন পিরিয়ডের মাঝে অনিশ্চয়তার জায়গা থাকে যার মধ্যে বিনিয়োগ হয় না এবং এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন ফাহমিদা খাতুন।
এছাড়াও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ বলে মনে করছেন ড. সাব্বির আহমেদ।
‘ড. ইউনূস তো নিজেও একজন অর্থনীতিবিদ, উনি এই জিনিসটাই যদি ব্যর্থ হন তাহলে তো উনি সব জায়গাতেই ব্যর্থ,’ বলছিলেন আহমেদ।
ফলে বহুবিধ দ্বন্দ্ব, সঙ্কট আর দুর্বলতা কাটিয়ে জনগণের জন্য আর্থিক দিক দিয়ে স্বস্তি আনাও সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
৬. আইনশৃঙ্খলা
আইনশৃঙ্খলার দুর্বলতার জায়গাও প্রতিনিয়তই মানুষের মধ্যে সমালোচনার জায়গা সৃষ্টি করছে।
‘একটা নতুন পরিবর্তিত সিস্টেম নিয়ে আসার জন্য, আমাদের যে লেভেলে স্ট্রিক্ট (কঠোর) হওয়া প্রয়োজন, ল অ্যান্ড অর্ডারের যে এনফোর্সমেন্ট আমরা প্রত্যাশা করি, সেটার তেমন কিছু আমরা দেখতে পাচ্ছি না আসলে,’ রোববার একটি অনুষ্ঠানে বলেন নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও গত সপ্তাহে পুলিশের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কাজের আগের মতো উদ্যমটা নাই বলতে পারেন।’ ছিনতাই, চাঁদাবাজি হওয়ার কথা স্বীকারও করেন তিনি।
উদ্যম ফেরানোর কাজ চলছে বলা হলেও বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অকার্যকর থাকার অভিযোগ উঠছে। ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মব সংস্কৃতিসহ বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা হচ্ছে।
চোখে দেখার মতো পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাকের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হলেও তাদের আচরণ ও মানসিকতার পরিবর্তনে কী করা হচ্ছে তা এখনো পরিষ্কার না।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার যেসব বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ করে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, আবার একই সাথে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা যেন না হয় সেই ভারসাম্য রক্ষার দিকটাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা