জাতিসঙ্ঘের নির্বাচনী মিশনের সাথে জামায়াতের প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাত
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৭
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো: তাহের -এর নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট এক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফররত জাতিসঙ্ঘের নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ণ মিশন -এর সাথে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় দিকে তারা সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
জানা গেছে, জাতিসঙ্ঘ মিশনের পক্ষে ছিলেন সারা পিট্রোপাওলি, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, জাতিসঙ্ঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং নির্বাচনী সহায়তা বিভাগ; আদিত্য অধিকারী, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, এশিয়া প্যাসিফিক বিভাগ ও জাতিসঙ্ঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ; নাজিয়া হাশেমি, উপদেষ্টা ডিজিটাল যুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া (ইউএনডিপি)।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
সাক্ষাৎ শেষে ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো: তাহের সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘের নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ণ মিশন -এর আমন্ত্রণে আজ আমরা এখানে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়েছি। তারা কয়েকটি বিষয়ের ওপর জানতে চেয়েছে যে- ইলেকশনে ইউএনডিপি কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে, স্বচ্ছ-ফেয়ার ইলেকশন হওয়ার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার এবং সে ব্যাপারে আমরা কী ভাবছি। এ সকল বিষয়ে তারা কথা বলেছে এবং ইউএনডিপির এ মিশনকে আমরা ওয়েলকাম করি কি না। আমরা বলেছি, যেকোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আমরা ওয়েলকাম করি সহযোগিতার জন্য। তবে ইন্টারফেয়ার করার জন্য নয়। উইদাউট ইন্টারফেয়ারয়ে যদি আমাদের টেকনিক্যাল এবং ফান্ডিং -এর ব্যাপারে সহযোগিতা করে সেটার জন্য আমরা বলেছি, ইউ আর ওয়েলকাম।
তিনি আরো বলেন, ইলেকশন ফেয়ার হওয়ার ব্যাপারে আমরা আরেকটি কথা বলেছি, প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সংযোগ করার জন্য। কারণ সিসি ক্যামেরা থাকলে ইলেকশনের সার্বিক পরিস্থিতি বুঝা যাবে। এখানে হিউজ ফান্ডের কথা আসছে। আমরা বলেছি, এক্ষেত্রে তোমরা আমাদের সহযোগিতা কর। ইলেকশন ফেয়ার করার জন্য এটা বড় ধরনের সহযোগিতা হবে। তারা পার্টিসিপেটরি ইলেকশনের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমরা বলেছি, আমরা নীতিগতভাবে পার্টিসিপেটরি, ফেয়ার, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এটা আমাদের মূলনীতির ভেতরেই আছে। এরপর তারা বলেছে, নির্বাচনের তারিখ কখন হতে পারে? আমরা বলেছি, এ্যাজ আরলি এ্যাজ পসিবল টাইম-এ সম্ভব। তবে এখানে কিছু জরুরি রিফর্মস প্রয়োজন। উইদাউট রিফর্মসয়ে যদি ইলেকশন হয়, তবে ইলেকশন আগের মতোই হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জরুরি রিফর্মস করা এবং ইলেক্টরাল ল’ চেঞ্জ করা যেটা ইলেকশনকে আরো শক্তিশালী করবে এবং বেশি অথরিটি দেবে; আমরা সেটার ওপর জোর দিয়েছি।
তিনি বলেন, সাংবিধানিক মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার বলেছি। আমরা বলেছি, দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী কন্টিনিউ করতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এ সকল বিষয়েও রিফর্মস হওয়া দরকার বলে আমরা জানিয়েছি। এক্ষেত্রে রিফর্মস কমিশন যেসব প্রস্তাব জমা দিয়েছে। আমরা মনে করি, সেগুলোকে নিয়েই সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অনতিবিলম্বে ডায়ালগ শুরু করা দরকার। ডায়ালগ শেষ করেই কনসেসাস তৈরি করা প্রয়োজন মৌলিক বিষয়গুলোতে। এরপর ইলেকশন শুরু করার জন্য যে সময় দরকার তার ভিত্তিতেই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা দরকার। সুতরাং মিনিমাম, পসিবল, নেসেসারি রিফর্মস এবং তারপর নিয়ারেস্ট শর্টেড টাইম-এর ভিতের নির্বাচন করা। এটা হচ্ছে আমাদের স্ট্যান্ড-এর কথা। উইদাউট রিফর্মস-এ যদি ইলেকশন হয়, তবে ইলেকশন ত্রুটিপূর্ণ থেকে যাবে, এটা আমরা মনে করি। আর রিফর্মস-এর নামে অযথা সময়ক্ষেপণ করা এটাও সঠিক হবে না। মৌলিকভাবে এসব বিষয়ে আজ আমাদের কথা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা: তাহের বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় দল। তাদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং তারাও তাদের বক্তব্য রেখেছে। আমরা বলেছি, প্রয়োজনীয় রিফর্মস করে যথাসম্ভব নির্বাচন দেয়া। এটাই আমাদের স্ট্যান্ড।
আওয়ামী লীগের ইলেকশনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, পিউপল উইল সে, এনভায়ারনমেন্ট উইল সে- পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়। সেখানে পরিস্থিতি এবং জনগণের যে মতামত এবং ম্যান্ডেট থাকবে সেটাই আমাদের স্ট্যান্ড। সেখানে আমাদের বিশেষ কোনো নিজস্ব কিছু নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডা: তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে আইনগত বিষয়ে মতামত দিবে না। এটা জনগণ উইল ডিসাইড, সোসাইটি উইল ডিসাইড, সিসুয়েশন উইল ডিসাইড, এনভায়ারনমেন্ট উইল ডিসাইড।
আগে স্থানীয় সরকার না জাতীয় সরকার নির্বাচন সে বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবজার্ভ করছি। আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো মতামত ঠিক করিনি। আমরা আলোচনা করব এবং তারপর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাব।
কেয়ারটেকার সরকারের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা তো একেবারেই আমাদের মৌলিক দাবি। এর আগে যে কেয়ারটেকার সরকারের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল তা জামায়াতে ইসলামীই আগে করেছিল। পরে অন্যান্য দল এটাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমরা এর জন্য আন্দোলন করেছি। এটা সংবিধান সংযোজিত হয়েছিল। কিন্তু আনফর্চনেটলি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে। তারাও আন্দোলন করেছিল আমাদের সাথে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য। নিজের সুবিধার জন্য তারা এটি বন্ধ করেছে। সুতরাং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এটা আমাদের মৌলিক দাবি এবং এটাই হতে হবে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা