১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`

টিউলিপের পদ্যতাগ : এবার তোপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

টিউলিপ সিদ্দিক ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার - ছবি : সংগৃহীত

দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার পদে থেকে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন। তবে যে দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়েছিল, ওই দুর্নীতির অভিযোগেই মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

টিউলিপ পদত্যাগের পর নিজ দলের মধ্যেই তোপের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। লেবার পার্টির এমপি পিপ্পা ক্রেরা বলেছেন, মানুষ এখন প্রধানমন্ত্রীর বুদ্ধি-বিবেচনার উপর প্রশ্ন তুলছে যে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত একজন বাংলাদেশী নেতার সাথে পারিবারিক সম্পর্ক থাকার পরও স্টারমার কিভাবে তাকে দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলেন?

টাইমস রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রেজারির প্রধান সচিব ড্যারেন জোন্স বলেছেন, আমি মনে করি না যে প্রধানমন্ত্রীর বিচারবুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে। কারণ, মন্ত্রী পরিষদ নির্বাচনে স্বাধীন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। যে সঙ্কটটি তৈরি হয়েছে, তা এখন উপসংহারে পৌঁছেছে। টিউলিপ সরকার থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টার তদন্তের ফলে সিদ্দিকের পদত্যাগের বিষয়টি প্রমাণ করে যে প্রক্রিয়াটি কার্যকর।

এ সময় তিনি আরো বলেন, সিদ্দিককে ‘বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে, বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে যে টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। এছাড়া নিজের সকল আর্থিক বিষয়াবলীর ব্যাপারে তদন্তকারীকে তথ্য দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন টিউলিপ।

মন্ত্রী থাকলে সরকার তার কাজে মনযোগ দিতে পারবে না উল্লেখ করে টিউলিপ বলেছেন, ‘এ কারণে আমি আমার মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, পেনসনমন্ত্রী এমা রেনল্ডস টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

গত সপ্তাহে টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। যদিও হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের ৪২ বছর বয়সী এমপি টিউলিপ দাবি করেছেন, তিনি কোনো ভুল করেননি।

উল্লেখ্য, আর্থিক দুর্নীতির এক মামলায় বাংলাদেশে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার খালা শেখ হাসিনাসহ পরিবারের আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যের এই মন্ত্রী ব্যাপক চাপে আছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সাথে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন, যেখানে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিল।

সূত্র : গার্ডিয়ান


আরো সংবাদ



premium cement